হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ: পিবিআই প্রধানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন বাবুল আক্তারের
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) হেফাজতে থাকার সময় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দাবি করে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলার আবেদন করেছেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার।
আজ বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে মামলার আবেদন করেন তার আইনজীবিরা।
তবে মামলার বিষয়ে আদালত পরবর্তীতে আদেশ দেবে বলে টিবিএসকে জানিয়েছে বাবুল আক্তারের আইনজীবী কফিল উদ্দিন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে- পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, সংস্থাটির চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের এসপি নাজমুল হাসান, চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের এসপি নাঈমা সুলতানা, পিবিআইয়ের সাবেক পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা ও এ.কে.এম. মহিউদ্দিন সেলিম এবং সংস্থাটির চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবিরকে।
আইনজীবী কফিল উদ্দিন বলেন, ২০২১ সালের ১০ মে থেকে ১৭ মে পর্যন্ত সময়ে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ও জেলা অফিসে বাবুল আক্তারের উপর নির্যাতন করা হয়।
"স্ত্রী হত্যার ঘটনায় মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়ার জন্য বাবুল আক্তারকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। এ ঘটনায় হেফাজতে নির্যাতন নিবারণ আইনে মামলার আবেদন করা হয়েছে," বলেন তিনি।
২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড় এলাকায় গুলি করে ও কুপিয়ে মাহমুদাকে হত্যা করে দুর্বত্তরা। এ সময় তিনি বড় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে জিইসি মোড়ে ছিলেন।
এ ঘটনার সময় বাবুল ছিলেন ঢাকায়। পরে তিনি চট্টগ্রামে গিয়ে ওই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। বাবুলের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে তার শ্বশুরের করা মামলার অভিযোগপত্রে তাকে প্রধান আসামি করা হয়।
পিবিআইয়ের দাবি, বাবুল আক্তারের পরিকল্পনা ও অর্থায়নে মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যা করা হয়। অন্য নারীর সঙ্গে সম্পর্কের জেরে তিনি স্ত্রী মাহমুদাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এ জন্য সোর্সের (তথ্যদাতা) মাধ্যমে তিনি তিন লাখ টাকায় খুনি ভাড়া করেন।
পিবিআই-এর পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, "এক বিদেশি নারীর সঙ্গে বাবুলের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং তাদের একটি সন্তান হয়। সে কারণেই বাবুল মিতুকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।"
কামরুল ইসলাম শিকদার মুসাসহ ছয়জন হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছিল বলেও পিবিআই প্রতিবেদনে উন্মোচন করা হয়েছে।
হত্যার পর বাবুল মুসাকে আত্মগোপনে যেতে বলা হয় বলে উল্লেখ আছে প্রতিবেদনে।
পিবিআই পরিদর্শক জাফর আরও জানান, তারা চার্জশিট দাখিলের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছেন এবং প্রযুক্তির সাহায্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে।
বাবুলকে প্রধান আসামি হিসেবে উল্লেখ করে হত্যা মামলায় আরো ৬ জনকে আসামি করা হয়। তারা হলেন- কামরুল ইসলাম শিকদার মুসা, এহতাশেমুল হক ওরফে হানিফুল হক ওরফে ভোলাইয়া মো. মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, খায়রুল ইসলাম কালু ও শাহজাহান মিয়া।