মাহমুদউল্লাহর বাদ পড়ার প্রসঙ্গে যা বললেন প্রধান নির্বাচক
আভাস মিলেছিল আগেই, তবে ছিল ধোঁয়াশাও। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের থাকা না থাকা নিয়ে গত কয়েক দিনে অনেক চর্চা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারকে ছাড়াই বুধবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। দল ঘোষণার সময় প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানান, সংশ্লিষ্ট সবার সম্মতিতেই মাহমুদউল্লাহকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে দল হেরেই যাচ্ছিল, তার ব্যাটেও ছিল না রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের ব্যর্থতায় গত জুলাইয়ে অধিনায়কত্ব হারান মাহমুদউল্লাহ। জিম্বাবুয়ে সফরের টি-টোয়েন্টি দল থেকেও বাদ দেওয়া হয় তাকে। এশিয়া কাপ দিয়ে দলে ফেরা মাহমুদউল্লাহ পারফরম্যান্স দিয়ে দলের মন ভরাতে পারেননি। রান পেলেও তার ব্যাটিংয়ের ধরন ও স্ট্রাইক রেট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সেই প্রশ্নের উত্তরে মাহমুদউল্লাহকে বাদ দিয়ে দিলো বিসিবি।
অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারকে বাদ দেওয়ার ব্যাখ্যায় মিনহাজুল আবেদীন বলেন, 'রিয়াদের প্রতি আমাদের পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে। জাতীয় দলের হয়ে অনেক ভালো ভালো খেলা আমাদের উপহার দিয়েছে সে। শ্রীরাম (টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট) আমাদের একটা পরিকল্পনা দিয়েছে। আগামী এক বছরের জন্য এই পরিকল্পনা নিয়েই আমরা এগোচ্ছি। এটা একটু ভিন্ন গতিপথের। ওই পরিকল্পনার সাথেই আমরা গিয়েছি। সবার সম্মতিক্রমে রিয়াদকে বাদ দেওয়া হয়েছে।'
অধিনায়ক হিসেবে টিম ম্যানেজমেন্টের অংশ সাকিব আল হাসানও। মাহমুদউল্লাহর বিষয়ে তার মতামতও নেওয়া হয়েছে। সবার সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রধান নির্বাচক, 'সবার সাথে পরামর্শ করা হয়েছে। সাকিব তো এশিয়া কাপ থেকেই অধিনায়ক। টিম ম্যানেজমেন্টের সবার সাথে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'
মাহমুদউল্লাহর ফর্মহীনতা ও টি-টোয়েন্টির দলের পরিকল্পনা বিবেচনায় নিয়ে আরও আগেই তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতো। কিছুটা দেরি হয়ে গেল কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে মিনহাজুল আবেদীন বলেন, 'না দেরি নয়। আমরা টানা অনেক ম্যাচ খেলেছি। কিছু খেলোয়াড়ের লম্বা ইনজুরি ছিল। এ কারণে অনেক খেলোয়াড়কে অনেকভাবে দেখতে হয়েছে। এমনিতেই এই ফরম্যাটে অনেক পিছিয়ে আছি। তবে এখনকার খেলোয়াড়দের যে সামর্থ্য আছে, এশিয়া কাপ থেকে মনমানসিকতার যে পরিবর্তন দেখছি, আশা করছি এই বিশ্বকাপে আমরা ভালো কিছু করব।'
তবে কি টি-টোয়েন্টির দলের দরজা মাহমুদউল্লাহর জন্য একবারে বন্ধ হয়ে গেল? নির্বাচক হাবিবুল বাশার বললেন, 'সময় বলে দেবে। কোনো খেলোয়াড় অবসর না নিলে তার সুযোগ অবশ্যই থাকবে।' সুর মিলিয়ে মিনহাজুল আবেদীন বললেন, 'অবশ্যই থাকবে (সুযোগ)। এটা তো অপ্রত্যাশিত কিছু নয়।'
রিয়াদের অভিজ্ঞতা তরুণদের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই তাকে ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল বলে জানান প্রধান নির্বাচক। তার ভাষায়, 'একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় থাকলে জুনিয়ররা অনেক কিছু শিখতে পারে। সে আমাদের সাবেক অধিনায়ক। তার সাথে ড্রেসিং রুম শেয়ার করলে নতুনদের অনেক কিছু শেখার আছে। ওকে যখন অনুশীলনে আনা হয়েছে, দল নিয়ে কিন্তু কোনো আলোচনা হয়নি। তখন বসা শুরু করেছি মাত্র। তরুণরা ওর কাছ থেকে চলাফেরা, খেলা অনেক কিছু শিখতে পারে। অনুশীলনের পরই আমরা দল নিয়ে আলোচনা করেছি।'