অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে এডিপি বাস্তবায়ন ৩.৮৫%
অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিবি) বরাদ্দের মাত্র ৯৮৪৪ কোটি টাকা, অর্থাৎ মোট বরাদ্দের ৩.৮৫ শতাংশ অর্থ খরচ করতে সক্ষম হয়েছে সরকারের মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো।
বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানা গেছে, এর আগের দুই অর্থবছরে এ হার ছিল যথাক্রমে ৩.৮২ শতাংশ এবং ৩.৮৯ শতাংশ।
চলতি অর্থবছরে সরকার এডিবি বরাদ্দ দিয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩ কোটি টাকা।
আইএমইডি ও পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, অর্থবছরের শুরুতে বছরব্যাপী অর্থব্যয়ের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা করতেই সময় পার করে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। এ কারণে অর্থবছরের শুরুর দিকে এডিবিতে অর্থ ব্যয় কম হয়।
সরকারের সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এই সময়ের মধ্যে দুই শতাংশেরও কম অর্থ ব্যয় করেছে।
এর মধ্যে রয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। এই মন্ত্রণালয় বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়েরর এডিবি বাস্তবায়ন হার আগষ্ট পযর্ন্ত ০.৪৫ শতাংশ।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ছাড়াও এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া ১৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়ন হার ০.৭৯ শতাংশ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়ন হার ০.৫৯ শতাংশ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এডিপি বাস্তবায়ন হার ০.৫৫ শতাংশ।
আইএমইডির তথ্য অনুযায়ী, সরকারি তহবিলের বরাদ্দের ১ শতাংশ কম অর্থ ব্যয় করছে ১৯ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। এর মধ্যে কোনো কোনো মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এখানো বরাদ্দের কোনো টাকাই ব্যয় করেনি।
২১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বৈদেশিক সহায়তা বরাদ্দে ১ শতাংশের কম অর্থ ব্যয় করেছে। এর মধ্যে সরকারের ১২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বৈদেশিক সহায়তা বরাদ্দের কোনো অর্থ ব্যয় করতে পারেনি।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়ে লাগাম টেনেছে। এ কারণেও অনেক প্রকল্পে অর্থ ব্যয় করা যাচ্ছে না। এর প্রভাব পড়েছে এডিপি বাস্তবায়নের ওপর।
অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় সরকার উন্নয়ন প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনায় এ, বি এবং সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে। এখনই ব্যয় না করলে তেমন সমস্যা হবে না এমন প্রকল্পগুলোকে রাখা হয়েছে সি ক্যাটাগরিতে। এসব প্রকল্পের অর্থছাড় বন্ধ করে রাখা হয়েছে।
বি ক্যাটাগরির প্রকল্পগুলো বরাদ্দে ৭৫ শতাংশ অর্থ ব্যয়ের সুযোগ রাখা হয়েছে। অর্থাৎ এসব প্রকল্পের ২৫ শতাংশ অর্থ ছাড় করা হবে না।
গুরুত্ব বিবেচনায় এ ক্যাটাগরির প্রকল্পে শতভাগ অর্থই ছাড় করবে সরকার। বৈদেশিক অর্থায়নের সব প্রকল্প রাখা হয়েছে এ ক্যাটাগরিতে।