সুচিত্রা সেনের মতো রামনাথের বাড়িও কি দখলমুক্ত হবে?
বাংলাদেশের লেখকরা ভ্রমণ নিয়ে লিখেছেন ১৪শ'র বেশি বই৷ তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লিখেছেন সাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণকারী রামনাথ বিশ্বাস৷ হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার তার বাড়ি এখন অন্যদের দখলে৷
এই বাড়ি উদ্ধার করে সেটি সংরক্ষণের পাশাপাশি সেখানে একটি সাইকেল মিউজিয়াম এবং একটি ভ্রমণ সাহিত্যের পাঠাগার করতে চান সুধীজন৷ কিন্তু বাড়ি দখলে থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না৷
ভ্রমণ করতে অনেকেই পছন্দ করেন৷ কিন্তু সেই ১৯৩১ সালে রামনাথ বিশ্বাসের মতো করে তেমন কেউ বিশ্ব ভ্রমণের 'সাহস' দেখায়নি৷ এবং রামনাথ ৯১ বছর আগে দুনিয়া দেখতে বেরিয়ে পড়েছিলেন বাইসাইকেল নিয়ে ৷ একটা সময় কলকাতায় থিতু হলেও দুনিয়া ঘুরে দেখার মাঝে সময় পেলেই তিনি ছুটে আসতেন জন্মভূমি বানিয়াচংয়ে৷
ভ্রমণ সাহিত্য রচনার সংখ্যায় বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানায় জন্মগ্রহণকারী পর্যটক হিসাবে রামনাথকে অদ্বিতীয় মানছেন পর্যটক ও ভ্রমণ লেখকরা৷
কিন্তু এরপরও তিনি যেন বিস্মৃতির আড়ালেই হারিয়ে যাচ্ছিলেন৷ ২০১৭ সালে তার নামে বানিয়াচংয়ে একটি উৎসব আর মাঝে মধ্যে গণমাধ্যমে কিছু লেখালেখি হয়েছে৷ এছাড়া তাকে স্মরণ করার মতো কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি৷
২০১৭ সালের সেই উৎসবের বছর দুয়েক আগে গঠিত হয় রামনাথ স্মৃতি সংসদ, যার সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন লোক গবেষক আবু সালেহ আহমেদ৷
তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, তারা রামনাথের বাড়িতে একটি পাঠাগার এবং একটি মিউজিয়াম করতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু বাড়িটি অন্যদের দখলে থাকায় তা সম্ভব হয়নি৷ বাড়ি উদ্ধারে তারা অনেক চেষ্টা করেছেন বলে জানান তিনি৷ তবে ২০১৮ সালের পর সেই চেষ্টাও অনেকটা থিতিয়ে আসে৷ অনেকেই রণেভঙ্গ দেন৷
সম্প্রতি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর রাজীব নূরের নেতৃত্বে একদল সাংবাদিক এই বাড়ি দেখতে গেলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়৷ তাদের দাবি, বাড়ির ছবি তুলতে যাওয়ায় দখলদাররা তাদের উপর হামলা চালায়৷ ঘটনার পর রামনাথের বাড়িটি নতুন করে আলোচনায় আসে৷ বাড়িটি উদ্ধারের দাবি ওঠে নানা মহলে৷
হামলার ঘটনায় বাড়ির দখলে থাকা আবদুল ওয়াহেদ মিয়ার এক ছেলে গ্রেপ্তার হলেও পরে জামিন হয়ে যায় তার৷
রামনাথের বাড়ি যাদের দখলে
বাড়িটি বর্তমানে আবদুল ওয়াহেদ মিয়া নামে এক ব্যক্তির দখলে রয়েছে৷ তিনি বানিয়াচং ২ নম্বর উত্তর-পশ্চিম ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন৷
সাংবাদিকদের উপর হামলার পর পর তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ৷
ওয়াহেদ মিয়ার দাবি, বাড়িটি তার এবং তার মেজো ভাইয়ের নামে দলিল করা, যা মোহিনী বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে তাদের বড় ভাই ক্রয় করে তাদের নামে দলিল করে দিয়েছেন৷
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা হায়দারুজ্জামান খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ওয়াহেদ মিয়ার বড় ভাই আবু ছালেক একাত্তরে চট্টগ্রামে বদর বাহিনীর সাথে যুক্ত ছিলেন৷ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে ছালেক আত্মগোপনে৷
হামলার শিকার সাংবাদিক রাজীব নূর সম্প্রতি এক লেখায় দাবি করেছেন, ওয়াহেদ মিয়া নিজেও একাত্তরের পর জামায়াতে ইসলামী করতেন, পরে বিএনপি ঘুরে যোগ দিয়েছেন আওয়ামী লীগে৷
এদিকে আমির হোসেন নামে ওয়াহেদের এক প্রতিবেশী দাবি করেন, রামনাথের বাড়ির বড় একটা অংশ অর্পিত সম্পত্তি হিসাবে তার ভাইয়েরা সরকারের কাছ থেকে বন্দোবস্ত পেয়েছে৷ কিন্তু ওয়াহেদের ক্ষমতার দাপটের কারণে তারা দখলে যেতে পারেননি৷ তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে এবং মামলাটি ভাইদের পক্ষ থেকে দেখাশোনা করছেন আমির হোসেন৷
বাড়ির দখল সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হলে আবদুল ওয়াহেদ মিয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন, তারা খরিদসূত্রে বাড়িটির মালিক৷ এসএ রেকর্ডের মালিকের কাছ থেকে ৪২ বছর আগে তারা সেটি খরিদ করেছেন৷
তিনি আরো বলেন, তার বড় ভাই আবদুর রউফ বাড়িটি ক্রয় করে তাদের দুই ভাইয়ের নামে দলিল করেছেন৷
পরে জমি বিক্রেতার বিষয়ে আরো প্রশ্ন করা হলে এক পর্যায়ে ওয়াহেদ মিয়া দাবি করেন, তারা সরাসরি এসএ রেকর্ডের মালিকের কাছ থেকে ক্রয় করেননি, যার নামে এসএ রেকর্ড, তিনি তার বোনকে দলিল করে দিয়েছিলেন৷ সেই বোন তার ছেলেকে দলিল করে দিয়েছেন৷ সেই ছেলের কাছ থেকে দলিল পেয়েছেন তারা৷
এই দলিল জাল এবং জোর করে বাড়িটি দখল করা হয়েছে—এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ''এলাকায় আমার অনেক শত্রু আছে, যারা এই বাড়িটা লইয়া ৮০ ইংরেজিত থেকোই আমরার সাথে গায়-গ্যাঞ্জাম করেছে৷ কইরা তারা কোনোভাবোই বাড়িতে আইনগতভাবেও আইতো পারে না৷ জোরেও আইতো পারছে না৷''
এমনকি আলাপের এক পর্যায়ে বাড়িটি রামনাথ বিশ্বাসের নয় বলেও দাবি করেন তিনি৷
তিনি বলেন, ''মূল কথাডা আপনাকে কইলে ভালো অইবো৷ কয় যে এডা রামনাথ বিশ্বাসের বাড়ি, যেই লোকে সাইকেল দিয়া পৃথিবী ভ্রমণ করছিল৷ তার নামে আদৌ কোনো এসএ এন্ট্রিতো উনার নামে কোনো কাগজেপত্রে সে মালিক না৷''
রামনাথ অতীতে কখনো মালিক ছিলেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ''না৷মোহিনী বিশ্বাসের কাছ থেকে আমরা খরিদ্দার৷''
মোহিনী বিশ্বাস রামনাথ বিশ্বাসের কোনো স্বজন কিনা জানতে চাইলে জবাব দিতে পারেননি আবদুল ওয়াহিদ৷ তবে একটু পরেই তিনি বলেন, তিনি শুনেছেন মোহিনী বিশ্বাস এবং রামনাথ বিশ্বাস পরস্পরের আত্মীয় নন৷
তিনি বলেন, ''এগুলা যখন আমরা খরিদ করছি, এরপর একটা বিরোধী দল আছিল, তারা বিভিন্নভাবে ইয়ে করে ভিপি (ভেস্টেড প্রোপার্টি) বানাইছিল৷''
যারা অর্পিত সম্পদের বন্দোবস্ত এনেছিল, তাদের সাথে পঞ্চায়েতে আপোস হয়েছিল বলেও জানান তিনি৷
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি স্বীকার করেন যে, বাড়ির বেশ কিছু দাগের জমি অর্পিত সম্পত্তি হয়ে গেছে এবং সেই অংশ নিয়ে মামলা চলছে৷
বাড়ির মোট আয়তন তিন একর বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ''একটা দাগে পাঁচ শতক, সাত শতক- এরকম আরো কয়েকটা দাগের জমি ভিপি হয়েছে৷''
রামনাথ স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও লোক গবেষক আবু সালেহ আহমেদ বলেন, ''রামনাথ বিশ্বাসের পরিবার সংগ্রামের (১৯৭১) পর বাংলাদেশে আর আসেননি৷ উনি একজন নিঃসন্তান৷ না আসার কারণে বাড়ি এক সময় এনিমিতে (এনিমি প্রোপার্টি, পরে যাকে ভেস্টেড প্রোপার্টি বা অর্পিত সম্পত্তি নাম দেয়া হয়) চলে যায়৷''
তিনি বলেন, ''এরপর এটা ওয়াহেদের আগে আরেকজন লোক জাল কাগজ করে ওয়াহেদের কাছে বিক্রি করে৷ ওয়াহেদ আবার তার নামে নামজারি করায়৷ এভাবেই ওয়াহেদ দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করতেছেন৷ আমাদের স্থানীয় চেয়ারম্যানের আপত্তিতে নামজারি তৃতীয়বার কর্তন হয়৷ নাম জারি কর্তন করার পর এটা আবার এনিমিতে (অর্পিত সম্পদে) ফিরে গেছে৷''
''ওয়াহেদ সাহেব কাউকে কখনো বাড়িতে গেলে ঘর দেখতে দিতো না৷ পর্যটক কেউ গেলে উনি নানা ধরনের কথাবর্তা বলতো৷ সর্বশেষ সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে৷''
এ প্রসঙ্গে বানিয়াচং প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠ পত্রিকার প্রতিনিধি মোশাহেদ মিয়া বলেন, ''আমি যেটা শুনেছি, গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকের পর রামনাথ বিশ্বাস আর বানিয়াচঙে আসেন নাই৷ কিন্তু তখনও তার বাপ-চাচারা এখানেই ছিলেন৷''
তিনি জানান, দেশভাগের পর এস রেকর্ডে (১৯৫৫-৫৬ সালের দিকে) উনার বাপ-চাচার নামে রেকর্ড হয়েছে৷ উনারা তখনো এখানেই ছিলেন৷ ৬৫-র যুদ্ধের সময় উনারা কেউ ছিলেন এখানে, কেউ ছিলেন কলকাতায়৷ যুদ্ধের পরপর পাকিস্তান সরকার যে আইন করেছিল শত্রু সম্পত্তি নিয়ে, ওই প্রেক্ষাপটে বাকিরাও কলকাতায় চলে যান৷''
স্থানীয় এই সাংবাদিক আরো বলেন, ''বাড়িটা সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল৷ তখন ওনার বাড়ির পাশের ওহাব উল্লাহ নামে এক লোক এবং তার ভাই মোসাব্বির মিয়া এই বাড়িটা কিছুদিন দখলে রেখেছিল৷এখন যারা আছেন, তাদের কাছে উনারা দখল হস্তান্তর করেছিলেন৷ ওহাব উল্লাহ ও মোসাব্বির মিয়া কিছু কাগজপত্র দিয়ে একটা নামজারিও করিয়ে ফেলেছিলেন৷ কিন্তু পরে সেটা বাতিল হয়েছে৷''
এক প্রশ্নের জবাবে একটি সূত্রের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ''এই বাড়িতে আরো বড় বড় স্থাপনা ছিল৷ এখন যেগুলো আছে, সেগুলোও ভাঙার চেষ্টা করা হয়েছে৷ তবে ভাঙতে পারে নাই৷''
বাড়ি উদ্ধারের সম্ভাব্য উপায় এবং আশঙ্কা
লেখক আবু সালেহ আহমেদ বলেন, ''২০১৭ সালে একটা বড় অনুষ্ঠান করেছিলাম৷ ভারত থেকেও লোক এসেছিল৷ উদ্ধার করতে পারলে আমরা একটা জাদুঘর, পাঠাগার করতে চেয়েছিলাম৷ (উদ্ধারের জন্য) আমরা বিভিন্ন কাগজপত্রও জমা দিয়েছিলাম৷''
''আমরা একজন ব্যারিস্টারের সাথেও কথা বলেছি৷ উনি বলেছেন, কোনো লোক যদি হাই কোর্টে রিট করতে পারে, তাহলে তাড়াতাড়ি উদ্ধার হয়ে যাবে, (নিম্ন আদালতে) মামলা করলে দেরি হয়ে যাবে৷''
বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়িকা হিসেবে খ্যাত ভারতীয় অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের পৈত্রিক বাড়ি বাংলাদেশের পাবনায়৷ সেই বাড়ি উদ্ধারের আইনি লড়াই করেন উচ্চ আদালতের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এবং হিউম্যান রাইট অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের সভাপতি অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''এই রকম বাড়ি-ঘর যদি কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তির হয়, সেটা যদি প্রত্নতত্ত্ব হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে, তাহলে সরকারের দায়িত্ব হলো এগুলো মেইনটেইন করা৷ অনেক ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গা আর্কিওলজি বিভাগ তালিকাভুক্ত করেনি৷ না করার কারণে অনেকে এসব দখল করে জাল দলিল তৈরি করে থাকে৷ সেগুলো উদ্ধারের ব্যাপারে সরকারের পদক্ষেপ দরকার৷ সরকার পদক্ষেপ না নিলে গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো সব চলে যাবে৷'':15
সুচিত্রা সেনের বাড়ির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ''সেই বাড়ি দখল করা হয়েছিল৷ সেটা নিয়ে আমরা জনস্বার্থের মামলা করেছি৷ রায় আমাদের পক্ষে এসেছে৷ সেটি যারা দখল করে রেখেছিল, তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং সুচিত্রা সেনের স্মৃতি সংরক্ষণে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছে৷''
রামনাথ বিশ্বাসের বাড়ির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ''বাড়িটা কার নামে আছে, প্রথমে স্থানীয় প্রশাসন সেটা দেখতে পারে৷ মনে করেন, যে কোনো জেলায় একটা বাড়ি আছে, সেই বাড়ির মূল মালিক এখন দেশে নাই বা চলে গেছে, চলে গেলে সেই বাড়ি তো সরকারের নামে হয়৷''
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ''যারা স্বাধীনতার আগে চলে গেছে, তাদের সম্পদ অর্পিত সম্পদ হিসাবে সরকারের নামে তালিকাভুক্ত হয়েছে৷ সরকার যখন নতুন আইন করলো, তখন এমন হতে পারে, যারা দখলে আছেন, তারা স্থানীয় প্রশাসনকে প্রভাবিত করে সেটাকে ওই তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন৷ পরে এটা ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে৷ এই জায়গাগুলোতে কাজ করার সুযোগ আছে৷ যেহেতু অবৈধভাবে এই তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে৷ তাই স্থানীয় প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে পারে৷''
রাজধানী ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ভবন রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন স্থপতি তাইমুর ইসলাম৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''ঐতিহ্য সংরক্ষণের বিষয়টা মোটামুটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাছে আছে৷ আমাদের পৌরসভা কর্পোরেশন আইনেও সংরক্ষণের একটা সুযোগ রয়েছে৷ সরকারের নির্বাহী বিভাগের সহায়তায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এটা সংরক্ষণ করতে পারে৷''
''যেমন সত্যজিৎ রায়ের বাড়ি, সুচিত্রা সেনের বাড়ির উদ্ধার করে সংরক্ষণ করা হচ্ছে৷ আলটিমেটলি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ হয়ত দায়িত্বটা নেবে৷ কিন্তু প্রাথমিকভাবে এখানকার সমস্যা সমাধানে নির্বাহী বিভাগ কাজ করে৷''
তবে নির্বাহী বিভাগকে সক্রিয় করতে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থেকে একটা সুপারিশ যেতে হয় বলেও মনে করেন তিনি৷
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বানিয়াচং উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইফফাত আরা জামান উর্মি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''এই বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো, দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো৷''
ভূপর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের বসতভিটা পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ কমিটি নামে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে সম্প্রতি৷ এর আহ্বায়ক হয়েছেন বাংলাদেশ ট্রাভেল রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল৷
নতুন একটি কমিটি ২৭ নভেম্বর হবিগঞ্জ থেকে বানিয়াচং একটা সাইকেল র্যালি করার উদ্যোগ নিয়েছে৷ একই সময়ে হবিগঞ্জে একটি প্রেস কনফারেন্স এবং ডিসির কাছে বাড়ির পুনরুদ্ধার চেয়ে স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচিও রয়েছে৷
এই কর্মসূচির পাশাপাশি ক্রমে বাড়ির আইনগত দিক খতিয়ে দেখে অন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার কথাও বলেন আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল৷
এছাড়া ট্রাভেল রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে রামনাথ বিশ্বাসের নামে অ্যাডভেঞ্জার ট্র্যাভেলারদের জন্য পুরস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি৷
তিনি বলেন, ''রামনাথ বিশ্বাসের মতো দ্বিতীয় ব্যক্তি আমাদের এই অঞ্চলে নেই৷ তিনি সাইকেলে এত আগে বিশ্ব ভ্রমণ করেছিলেন৷ তিনি ভ্রমণ বিষয়ক যতগুলো বই লিখেছেন, পৃথিবীর আর কোনো লেখক ভ্রমণ বিষয়ক এতগুলো বই লিখেছে বলে আমার জানা নেই৷''
- সূত্র: ডয়চে ভেলে বাংলা