ইরানের মানুষের সাথে সংহতি প্রকাশের জন্য শিল্পীদের প্রতি আহ্বান আসগর ফরহাদির
মোরাল পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় মাহসা আমিনির (২২) মৃত্যুর প্রতিবাদে উত্তাল ইরান। ইরানের নারীরা প্রতিবাদস্বরূপ নিজেদের চুল কেটে ফেলছেন, হিজাব পোড়াচ্ছেন, হাজার হাজার নারী বিক্ষোভ করছেন রাজপথে। এ অবস্থায় ইরানের প্রতিবাদী জনতার সঙ্গে সংহতি প্রকাশের জন্য সারা বিশ্বের শিল্পীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রখ্যাত ইরানি চলচ্চিত্র নির্মাতা আসগর ফরহাদি।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর ইরানের রাজধানী তেহরানে হিজাব আইন ভঙ্গের অভিযোগে মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আটক কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তিনি অচেতন হয়ে যান। তিনদিন কোমায় থাকার পর গত শুক্রবার তার মৃত্যু হয়।
এক লিখিত বিবৃতিতে দুইবারের অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা আসগর ফরহাদি ইরানের যেসব 'সাহসী ও উদারমনা' নারীরা নিজেদের মানবাধিকার আদায়ের জন্য পুরুষদের সাথে এক কাতারে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করছেন, তাদের প্রশংসা করেন। তার ভাষ্যে, বছরের পর বছর ধরে ইরান নারীদেরকে যেসব মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে, সেই অধিকার আদায়ের জন্যই তারা আন্দোলন করছেন।
বিবৃতিতে 'আ সেপারেশন' নির্মাতা বলেন, "এই সমাজ, বিশেষ করে এই নারীরা, তারা একটা কঠিন-যন্ত্রণাদায়ক পথ পেরিয়ে তারপর আজকের অবস্থানে এসেছে; আর এটা অবশ্যই একটি মাইলফলক। গত কয়েকদিন যাবত আমি তাদেরকে খুব ভালোভাবে লক্ষ্য করেছি। তাদের চোখেমুখে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখেছি; একই সাথে যখন তারা রাস্তায় প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে এগিয়ে গিয়েছে, তখন তাদের চেহারায় আশার আলোও দেখেছি। এত অত্যাচার-শোষণ মোকাবিলা করেও স্বাধীনতা এবং নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই ঠিক করার অধিকার আদায়ের জন্য তাদের এই সংগ্রামকে আমি গভীরভাবে শ্রদ্ধা জানাই।"
আসগর ফরহাদি আরও জানান, নিজের দেশের নারীদের নিয়ে তিনি অত্যন্ত গর্বিত এবং তার বিশ্বাস, এই নারীরা একদিন নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছাবেনই। এরপরেই তিনি বলেন, "এই ভিডিওর মাধ্যমে আমি সারা বিশ্বের শিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, বুদ্ধিজীবি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের এবং যারাই মানুষের ব্যক্তিগত মর্যাদা ও স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন, তাদের সবাইকে ইরানের সাহসী নারী ও পুরুষদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।"
তিনি আরও যোগ করেন, "এটা আমাদের মানবিক দায়িত্ব এবং ইরানের নারীরা যে লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে আজ পথে নেমে এসেছে, সেই সুন্দর লক্ষ্যটি পূরণে আমরা সবাই সাহায্য করতে পারি। আমার কোনো সন্দেহ নেই যে এই দেশটিতে (ইরান) নারীরাই সবচেয়ে যুগান্তকারী পরিবর্তনের অগ্রদূত হয়ে উঠবেন।"
সূত্র: হলিউড রিপোর্টার