পিতৃ-মাতৃহীন তিন কন্যার বিয়ে, বর্ণাঢ্য আয়োজন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের
চট্টগ্রাম নগরীর রৌফাবাদের সরকারী শিশু নিবাসে বড় হয়েছেন পিতৃ-মাতৃহীন মর্জিনা আক্তার, মুক্তা আক্তার এবং তানিয়া আক্তার। ১৮ বছর পার হওয়ার পর এই শিশু নিবাস থেকেই বছর তিনেক আগে চাকরিও পেয়েছেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে।
শিশু পরিবারে বড় হওয়া এই তিন কন্যার এবার ধুমধাম করে বিয়ে দিলো চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এবং জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) রাতে চট্টগ্রাম অফিসার্স ক্লাবে পিয়ের পিঁড়িতে বসেন এই তিন কন্যা।
বর্ণাঢ্য আয়োজনে মর্জিনা আক্তারের সাথে ওমর ফারুকের, মুক্তা আক্তারকে নুর উদ্দিন এবং তানিয়া আক্তারকে হেলাল উদ্দিনের সাথে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়েতে আনুষ্ঠানিকতার কোন কমতি রাখেনি জেলা প্রশাসন। নতুন সংসার সাজাতে সম্ভাব্য সব ধরনের উপহার তুলে দেওয়া হবে তিন পরিবারের হাতে। বিয়েতে উপহারস্বরূপ প্রধানমন্ত্রীর মনোগ্রাম সহ তিনটি আংটিও প্রদান করা হবে। ৭ লাখ টাকা দেনমোহরে অনুষ্ঠিত হয় এই বিয়ে।
ওমর ফারুকের বাড়ি রাঙ্গুনিয়ায়, নুর উদ্দিনের বাড়ি হাটহাজারী উপজেলায়। তারা দুজনেই চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে চাকরি করেন। হেলাল উদ্দিনের বাড়ি বোয়ালখালী উপজেলায়। তিনি একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।
চট্টগ্রাম জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ফরিদুল আলম টিবিএসকে বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক এই তিন কন্যার বিয়ের বিষয়ে বরের পরিবারের সাথে সমন্বয় করেছে।বিষয়টি সবাই ইতিবাচকভাবেই নিয়েছে। বুধবার রৌফাবাদে তিনকন্যার গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সরকারী শিশু পরিবার ও ৪টি প্রতিষ্ঠানের ৩৫০ জন সদস্য সহ ৭০০ জন অতিথিকে আপ্যায়ন করা হয়।
তিনি আরো বলেন, বৃহস্পতিবার রাতেও বিয়ের আয়োজনে ৫০০ জনকে দাওয়াত দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, 'কুড়িয়ে পাওয়া এই তিন কন্যা বড় হয়েছে সরকারী শিশু পরিবারে। আমরা তাদের অভিভাবক হয়ে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বিয়ের আয়োজন করেছি। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকেও উপহারস্বরূপ তিন কন্যার জন্য তিনটি আংটি প্রদান করা হবে। ৭ লাখ টাকা দেনমোহরে তিন কন্যার বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে।'
এদিকে প্রশাসনের এমন মানবিক বিষয়টিকে বেশ ইতিবাচকভাবে দেখছেন নাগরিক সমাজ। অনেকেই এমন উদ্যোগের প্রশংসা করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন।