পরীক্ষার হলে প্রতারণা ঠেকাতে 'অ্যান্টি-চিটিং হ্যাট', পরে পরীক্ষা!
পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের সহপাঠীর খাতার দিকে নজর দেওয়া ঠেকাতে অভিনব কৌশল অবলম্বন করেছেন ফিলিপাইনের একটি কলেজের শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের 'অ্যান্টি-চিটিং হ্যাট' বা প্রতারণা ঠেকানোর জন্য হেডগিয়ার বানিয়ে নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছিলেন তারা। সম্প্রতি ফিলিপাইনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে শিক্ষার্থীদের সেসব ছবি। তাতে দেখা গেছে, কাগজ-প্লাস্টিকের 'ঢাকনা' থেকে শুরু করে ব্যাতিক্রমী হেলমেট, চশমা মাথায়-চোখে বেঁধে পরীক্ষা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা!
ফিলিপাইনের লেগাজপি সিটির একটি কলেজে ঘটেছে এই অভিনব ঘটনা। শিক্ষকদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে নিজেদের সৃজনশীল প্রতিভা প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। কেউ এনেছেন কার্ডবোর্ড, কেউবা ডিমের বাক্স কিংবা রিসাইকেল করা কাগজ।
সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে ওই কলেজের এক শিক্ষক বলেন, শ্রেণীকক্ষে 'সততা ও বিশুদ্ধতা' নিশ্চিত করতে মজার উপায় খুঁজছিলেন তিনি, তখনই এই আইডিয়া মাথায় আসে।
কলেজের অধ্যাপক মেরি জয় মানডেন-অর্টিজ জানান, পরীক্ষায় অন্যের খাতা দেখে লেখা তাদের এই আইডিয়া বেশ কাজে দিয়েছে। সম্প্রতি কলেজের মিডটার্ম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন শত শত শিক্ষার্থী, তাদের উপরেই প্রথম এ কৌশল প্রয়োগ করেছেন শিক্ষকরা।
প্রাথমিকভাবে মানডেন-অর্টিজ শিক্ষার্থীদের কাগজ দিয়ে সাদামাটা 'হেডগিয়ার' বানিয়ে আনতে বলেছিলেন, যদিও শিক্ষার্থীরা তার চেয়ে বেশিই সৃজনশীলতা দেখিয়েছে! তিনি জানান, কয়েক বছর আগে থাইল্যান্ডে একই কৌশল প্রয়োগ করা দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন।
২০১৩ সালে ব্যাংককের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একই রকম 'এয়ার ফ্লিপ' পরে পরীক্ষা দেওয়ার ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। অধ্যাপক মানডেন-অর্টিজ জানান, তার শিক্ষার্থীরা থাইল্যান্ডের আইডিয়াকেই নিজেদের মতো করে সাজিয়েছে। এমনকি কেউ কেউ তাদের আশেপাশে পরে থাকা ফেলনা বস্তু দিয়ে মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে হেডগিয়ার বানিয়ে দেখিয়েছে।
জানা গেছে, অধ্যাপক মানডেন-অর্টিজের ফেসবুক পোস্ট দেখে দেশটির অন্যান্য স্কুল-কলেজও অনুপ্রাণিত হয়েছে 'অ্যান্টি-চিটিং হেডওয়্যার' বানাতে।
অধ্যাপক আরও জানান, অভিনব এ পদ্ধতি অবলম্বন করার সুফলও তিনি পেয়েছেন। এর ফলে শিক্ষার্থীরা নিজেরা ভালোভাবে পড়ালেখা করে পরীক্ষা দিতে এসেছে এবং কেউই প্রতারণার আশ্রয় নিতে পারেনি।
সূত্র: বিবিসি