ইরানের পতাকা 'বিকৃত' করায় ক্ষমা চাইলেন যুক্তরাষ্ট্রের কোচ
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার কূটনৈতিক টানাপোড়েনের কথা ইতোমধ্যেই অনেকেরই জানা। কাতার বিশ্বকাপে এই দুটি দল একই গ্রুপে থাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনার আঁচ লেগেছে ফুটবলের মাঠেও। কিন্তু এরই মধ্যে ইরানের পতাকাকে 'বিকৃতভাবে' উপস্থাপন করে তোপের মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র ফুটবল ফেডারেশন। এ ঘটনায় সোমবার খেলোয়াড় ও স্টাফদের পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র ফুটবল দলের কোচ গ্রেগ বারহল্টার।
বুধবার (৩০ নভেম্ভর) বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মাঠে নামবে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র। ম্যাচ সামনে রেখে চাপা উত্তেজনা কাজ করছে সমর্থকদের মধ্যে। কিন্তু গেল শুক্রবার মার্কিন ফুটবল দলের টুইটার, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে ইরানের পতাকা থেকে 'আল্লাহ' প্রতীক বাদ দিয়ে পতাকার ছবি পোস্ট করা হয়। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ইরান।
এর পরপরই ফিফার কাছে ই-মেইলের মাধ্যমে অভিযোগ জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় ইরান। তবে সম্ভাব্য শাস্তির ভয়েই কিংবা বিতর্ক থামাতে, রোববার বিকেলের মধ্যেই পতাকার ওই ছবিটি সরিয়ে দেয় মার্কিন ফুটবল ফেডারেশন এবং সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে ইরানের স্বাভাবিক পতাকার ছবি পোস্ট করে।
যুক্তরাষ্ট্র ফুটবল ফেডারেশন রোববার সকালেই এক বিবৃতিতে বলেছিল, পতাকা থেকে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রতীক সরিয়ে দিয়ে তারা মাহসা আমিনির মৃত্যু এবং 'মৌলিক অধিকারের জন্য লড়াইরত ইরানি নারীদের সঙ্গে সংহতি' প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু নিজেদের পতাকাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি ইরান।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের কোচ গ্রেগ বারহল্টার বলেন, যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের নকআউট পর্বে পৌঁছানো এখনো অনিশ্চিত, তাই খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফরা সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্টের দিকে খুব একটা মনোযোগ দেননি।
বারহল্টারের ভাষ্যে, "কখনো কখনো বিষয়গুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আমরা খেলার বাইরের বিষয়গুলো তেমন লক্ষ্য করি না। এই মুহূর্তে আমার খেলোয়াড় ও স্টাফদের হয়ে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই। কিন্তু আমরা এই কাজের অংশ ছিলাম না। আমাদের কোনো ধারণাই ছিল না যে সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা কী পোস্ট করেছে। আমাদের লক্ষ্য শুধুই আসন্ন ম্যাচের দিকে। অবশ্যই আমরা ইরানি জনগণের পাশে আছি। কিন্তু আমাদের সব চিন্তা এখন ম্যাচকে ঘিরে।"
উল্লেখ্য যে, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে মতাদর্শিক দ্বন্দ্ব চলছে। ১৯৭৯ সালে ইসলামী বিপ্লবের উত্থান ঘটার পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।
বুধবারে ম্যাচে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো মুখোমুখি হবে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র। শেষ ষোলতে পৌঁছাতে হলে দুই দলের জন্যই এই ম্যাচটি ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। তবে বারহল্টার জানিয়েছেন, ফুটবলের বাইরের টানাপোড়েনে তার দলের প্রস্তুতিতে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না।
সূত্র: এনডিটিভি