ঢাবিতে গাড়িচাপায় নারীর মৃত্যু, গাড়িতে আটকে যাওয়া শরীর টেনে নিয়ে যাওয়া হলো নীলক্ষেত পর্যন্ত!
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে গাড়িচাপা পড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
নিহত রুবিনা আক্তার (৪৫) রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার বাসিন্দা।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ বলেন, আশঙ্কাজনক অবস্থায় রুবিনাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
গাড়িটি চালাচ্ছিলেন ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সহকারী অধ্যাপক আজহার জাফর শাহ। প্রাইভেট কার আটকে রুবিনা আক্তারকে উদ্ধারের সময় তাকে বেদম মারধর করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
ওসি নূর মোহাম্মদ বলেন, 'আজহার জাফর শাহ নামে ঢাবির একজন প্রাক্তন শিক্ষক গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ পথচারীদের মারধরের শিকার হয়ে তিনিও একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।' পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় বলে জানা গেছে।
রুবিনা রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার বাসিন্দা। দেবরের মোটরসাইকেলে চড়ে হাজারীবাগে বাবার বাসায় যাচ্ছিলেন তিনি। দুই বছর আগে তার স্বামী মারা গেছেন। তাদের এক সন্তান আছে।
নিহত রুবিনার দেবরের বরাত দিয়ে ঢাবি শিক্ষার্থী শোয়েব আহমেদ বলেন, 'রুবিনা তার দেবরের মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। শাহবাগ থানার কাছে পেছন থেকে একটি গাড়ি তাদের বাইকে ধাক্কা দেয়। এ সময় তিনি [রুবিনা] বাইক থেকে পিছলে গাড়ির বাম্পারে আটকে যান। কিন্তু গাড়িটি থামেনি, ঢাবি সেন্ট্রাল মসজিদের সামনে থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত তাকে টেনে নিয়ে যায়।'
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, রুবিনা প্রাইভেট কারের বাম্পারে আটকে গেলেও গাড়ি না থামিয়ে চালক বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে যান। পথচারীরা চেষ্টা করেও তাকে থামাতে পারেননি। শেষপর্যন্ত তাকে ধাওয়া করে নীলক্ষেত মোড়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ তেকে তাকে ধরে ফেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর রুবিনাকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
পরে স্থানীয়রা গাড়িটি আটক করে রোজিনাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি শাখা এ ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
দুর্ঘটনার পর সংগঠনটির জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি তারা ক্যাম্পাসে মোটরযান চলাচল বন্ধ করার এবং গতিসীমা নির্ধারণের দাবি জানাচ্ছে, যাতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।
উল্লেখ্য, জাফর শাহকে ক্লাসসহ একাডেমিক কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়।