করোনায় অসহায় মানুষের পাশে ‘হেল্পলাইন মতলব’
চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলায় বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ সংকট মোকাবেলায় সরকারের পাশাপাশি এগিয়ে এসেছে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'হেল্পলাইন মতলব'।
করোনা সংকটে মতলববাসীর পাশের থাকার প্রেরণা থেকেই মূলত মতলবের দুই উপজেলার বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সচেতন তরুণদের নিয়ে এটির যাত্রা শুরু হয়েছে বলে সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, "বর্তমানে প্রায় ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী তরুণ নিজের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করাপূর্বক হেল্পলাইন মতলবের মাধ্যমে মতলববাসীকে সংকট মোকাবেলায় জরুরী সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। দুই উপজেলার ২ টি পৌরসভা ও ২০ টি ইউনিয়নেই স্বেচ্ছাসেবকগণ মোটরবাইকের মাধ্যমে সেবা পৌছে দিচ্ছেন।"
এরই মধ্যে 'হেল্পলাইন মতলব' নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পেজ খুলে সংগঠনের কল সেন্টারের ছয়টি ফোন নম্বর দুই উপজেলা ব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
সেখানে জানানো হয়, লকডাউন ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার কারণে অসহায় হয়ে পড়া মতলবের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ এসব নম্বরে জরুরি সহায়তার জন্য ফোন করছেন। ইতোমধ্যে নম্বরগুলোতে ১ হাজার ৩৫২ টি ফোন কল এসেছে। ফোন পেলেই ফোনদাতার পরিচয়, ঠিকানা, পেশা, চাহিদা ও পরিবারের সদস্য সংখ্যা লিখে রাখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় হেল্পলাইনের স্বেচ্ছাসেবকগণ সরাসরি গিয়ে সহায়তা পৌছে দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে উদ্যোক্তাদের একজন জানান, তারা প্রথম দিকে অনেক অসহায় পরিবারকে হেল্পলাইন মতলবের অর্থায়নে জরুরি খাদ্য সামগ্রী (চাল, ডাল, তেল ও ওষুধ ইত্যাদি) পৌছে দিয়েছেন। তবে বর্তমানে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে ত্রাণ সামগ্রী শুধুমাত্র অধিক অসহায় পরিবারগুলোকে দেয়া হচ্ছে। তবে তাদের ফোন নম্বরে ফোন করলে করোনা সংক্রান্ত তথ্য, ডাক্তারের মাধ্যমে সরাসরি টেলিমেডিসিন সেবা, অ্যাম্বুলেন্স সেবা, হাসপাতালের তথ্য, বিনামূল্যে সাধারণ ওষুধ পৌছে দেয়া, কোনো পরিবারের প্রয়োজন হলে নিত্য বাজার পরিবারের অর্থে করে পৌছে দেয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, টেলিমেডিসিন সেবার জন্য ডাক্তার দেবাশীস সরকার,ডাক্তার শরিফ আহমেদসহ বেশ কয়েকজন কল সেন্টারের নম্বরগুলোতে যুক্ত আছেন। যেকোন অসুস্থতায় যেহেতু গ্রামের মানুষ প্রথমেই স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকদের কাছে যায় তাই কোভিড-১৯ রোগের কথা মাথায় তাদেরকে পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট(পিপিই) দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় পশু- পাখিকে এই সময়ে খাবার দেয়া হচ্ছে।
সংগঠনটির উদ্যোক্তা সাজিন আহম্মেদ কৌশিক জানান, আমরা জাতির এই দুঃসময়ে মতলববাসীর পাশে থাকার চেষ্টা করছি। তবে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে আমরা পরিকল্পিত আরো কিছু কাজ করতে পারছি না। সরকারি সহায়তা পেল সেগুলোও করা সম্ভব হতো।