পুরুষের মতো আচরণ ও পোশাক পরলে বেত্রাঘাত-কারাদণ্ড, নারীদের জন্য নতুন আইন মালয়েশিয়ায়
বিবাহ বহির্ভূত গর্ভধারণ, পুরুষের মতো আচরণ ও পোশাক পরলে বেত্রাঘাতসহ জেল-জরিমানার বিধান রেখে মুসলিম নারীদের জন্য নতুন এক আইন পাস করেছে মালয়েশিয়া। তেরেঙ্গানু প্রদেশে সরকারের সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপ দেশটিতে নারী অধিকারের বর্তমান অবস্থাকে আরও খারাপ করে তুলবে বলে মনে করছেন মানবাধিকার কর্মীরা। খবর ব্লুমবার্গের।
সংশোধনীতে পার্টি ইসলাম সে-মালয়েশিয়া শাসিত তেরেঙ্গানু রাজ্যে জাদুবিদ্যাকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এ ধরনের অপরাধের জন্য ৫ হাজার রিঙ্গিত (মালয়েশিয়ার মুদ্রা) পর্যন্ত জরিমানাসহ ৩ বছরের জেল এবং ৬টি বেত্রাঘাতের যেকোনো একটি বা একইসঙ্গে একাধিক শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। মালয়েশিয়া সরকারের ধর্ম বিষয়ক কর্তকর্তা সতিফুল বাহারি মামতের বরাত দিয়ে, গেল ১ ডিসেম্বর এ তথ্য নিশ্চিত করে দেশটির সংবাদসংস্থা বার্নামা।
এদিকে, নারীদের উদ্দেশ্য করে এমন বিধান জারি করায় মালয়েশিয়াজুড়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো অনুষ্ঠানিক নিন্দা জানিয়েছে। অল উইমেনস অ্যাকশন সোসাইটিসহ ১৪টিরও বেশি মানবাধিকার গোষ্ঠী বলছে, দেশটির উত্তর-পূর্ব রাজ্য তেরেঙ্গানুর এই আইনী পরিবর্তন মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সমতা এবং বৈষম্যহীনতার অধিকারকে লঙ্ঘন করে।
৩ ডিসেম্বর দেওয়া যৌথ এক বিবৃতিতে সংস্থাগুলো জানায়, রাজ্যের বিধানসভায় নতুন পাস হওয়া আইন নারী, পুরুষ এবং এলজিবিটিকিউ পরিচয়ধারীদের বর্তমান অবস্থাকে আরও খারাপ করে তুলবে।
অন্যদিকে, আইনগুলো সম্পর্কে ভিন্ন কথা বলছে দেশটির সরকার। বার্নামাকে সতিফুল বলেন, "এটি মুসলিমদের জন্য আরও কল্যাণ বয়ে আনবে।"
তিনি বলেন, নতুন আইনে নারীদের পুরুষের মতো আচরণ করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে; কারণ বর্তমান আইনে কেবল পুরুষদের ওপর নারীর মতো আচরণ না করার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। সুতরাং, এখন নারী-পুরুষ উভয় পক্ষের জন্যই আইনে সমতা আনা হলো।
বার্তাসংস্থাকে তিনি আরও বলেন, "হঠাৎ নতুন নিয়ম জারির কারণ হলো, অতীতে এই সমস্যাটি (নারীদের পুরুষের মতো আচরণ বা সমকামীতা) খুব বেশি ছিল না। কিন্তু আমরা এখন এটি অহরহ দেখতে পাচ্ছি। টমবয় বা লেসবিয়ানদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে, তাই রাজ্য সরকার সমস্যাটি নিয়ন্ত্রণ করতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে।"