প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি ২৯ বিশিষ্ট নাগরিকের
দেশের ২৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে তারা জানান, বৃত্তি পরীক্ষার মাধ্যমে বৈষম্য বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এছাড়া পুনরায় বৃত্তি পরীক্ষা চালু হলে তা-তে কোচিং বাণিজ্য ও গাইড বইয়ের দৌরাত্ম্য বাড়ারও আশঙ্কা রয়েছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ২৮ নভেম্বর এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় আকস্মিকভাবে এ বছর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়।
তবে দেশের শিক্ষাবিদের বলছেন, সহসা এমন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বছর শেষে এ পরীক্ষা নিলে তা শিক্ষার্থীদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে এবং নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ভবিষ্যৎ সংস্কারের জন্যও নেতিবাচক হবে।
বিশিষ্ট নাগরিকদের তাদের বিবৃতিতে বলেন, বর্তমান সরকার দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে বেশকিছু কার্যকরী পরিবর্তন এনেছে।
'এভাবে হুট করে বৃত্তি পরীক্ষা চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হলে শিক্ষার্থীদের ওপর নানামুখী মানসিক ও শারীরিক চাপ পড়বে।
'এছাড়া নতুন শিক্ষাক্রমে যেখানে সব শিক্ষার্থীর মেধার সম্পূর্ণ বিকাশের নানা দিককে উৎসাহিত করা হচ্ছে, সেখানে মাত্র ২০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে বাছাই করে একটি বৃত্তি কার্যক্রম শুরু করলে সুবিধাভোগী ও সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এটি সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থী,' বিবৃতিতে বলা হয়।
বিশিষ্ট নাগরিকেরা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক বিভিন্ন বক্তব্যে দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবীর সঙ্গে খাপ-খাওয়ানোর লক্ষ্যে প্রচলিত সনাতন শিখনকালীন মূল্যায়ন পদ্ধতি এবং পরীক্ষানির্ভর, সনদসর্বস্ব শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে।
'কিন্তু শুধু ২০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য প্রাথমিক পর্যায়ে একটি বৃত্তি পরীক্ষা চালুর ঘোষণা হতাশ করেছে,' মন্তব্য করে বিবৃতিতে বলা হয়, শিক্ষা নিয়ে প্রায়ই এত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিভ্রান্ত করে থাকে।
বিবৃতি দেওয়া বিশিষ্ট নাগরিকেরা হলেন – অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, রামেন্দু মজুমদার, সুলতানা কামাল, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক এম এম আকাশ, রাশেদা কে চৌধূরী, অধ্যাপক মনজুর আহমেদ, ইলিয়াস কাঞ্চন, অধ্যাপক মাহফুজা খানম, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, কাজী ফারুক আহমেদ, আসিফ সালেহ, ফেরদৌসী মজুমদার, মামুনুর রশীদ, নজরুল ইসলাম খান, কাজী রফিকুল আলম, এজাজুল ইসলাম, মনসুর আহমেদ চৌধুরী, শাহীন আনাম, মোস্তাক রাজা চৌধুরী, এম. সাখাওয়াত হোসেন, সঞ্জিব দ্রং, করভি রাকসন্দ, মালেকা বেগম, খালেদ মাসুদ পাইলট, অধ্যাপক শফি আহমেদ ও অধ্যাপক এম তারিক আহসান।