গ্রামীণফোন সিম বিক্রির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে
গ্রাহকদেরকে মানসম্মত সেবা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় গত বছরের জুনে গ্রামীণফোনের সিম কার্ড বিক্রির ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে সরকার।
গ্রামীণফোনের কমিউনিকেশন হেড অব কমিউনিকেশন খায়রুল বাশার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করে বলেন, সেবার মানের বিভিন্ন সূচকে তাদের উন্নতি দেখে সোমবার (২ জানুয়ারি) নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)।
গ্রামীণফোনের সেবার মান সন্তোষজনক না হওয়ায় এর আগে গত ২৯ জুন তাদের সব ধরনের সিম কার্ড বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেয় বিটিআরসি।
তবে পরে জানা যায়, উদ্বোধনের দিন পদ্মা সেতুর চারপাশে দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের নির্দেশে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
৬ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, "পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন সেখানে গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক ভালো ছিল না; এটি প্রধানমন্ত্রীও দেখেছেন। তখন মন্ত্রিপরিষদ সচিব আমাদের সচিব [ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ]কে ডেকে তার অসন্তোষ প্রকাশ করেন। অপারেটরটি নেটওয়ার্ক নিয়ে আরো অভিযোগ পেতে থাকে। পরিষেবার মান নিয়েও অভিযোগ আসে। তাছাড়া, এ বিষয়ে আদালতে একটি রিটও হয়েছিল। এসবের কারণে জিপি সিম কার্ড বিক্রি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।"
৮ নভেম্বর আরেকটি অনুষ্ঠানে একই কারণ উল্লেখ করেন বিআরটিসি চেয়ারম্যান। উভয় অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার উপস্থিত ছিলেন। তিনি বেশ কয়েকটি মিডিয়া বিবৃতিতে দাবি করেছেন, কলড্রপ সহ নিম্নমানের পরিষেবাই এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কারণ।
নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর থেকে গ্রামীণফোন ১৬ লাখ গ্রাহক হারিয়েছে। গেল বছরের আগস্টে গ্রামীণফোনের গ্রাহক ছিল ৮ কোটি ৩১ লাখ। অথচ জুন মাসে ছিল ৮ কোটি ৪৮ লাখ।
আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের আবেদন অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে গ্রামীণফোন সিমের উচ্চ চাহিদা বিবেচনা করে কমিশন তাদেরকে ১৩-লক্ষ পুরনো অব্যবহৃত সিম বিক্রি করার অনুমতি দেয়।
এই নির্দেশের কারণে ১৮ অক্টোবর বিটিআরসিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। পরে ৬ নভেম্বর সিম বিক্রির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে কমিশন।
অনুমতি প্রত্যাহারের বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, "সিম কার্ড বিক্রি স্থগিত করার পর থেকে অপারেটরটির পরিষেবার মান উন্নত হয়নি। পুরনো সিম বিক্রির যে আদেশ দিয়েছিলাম তা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।"
পরবর্তীতে ২০ নভেম্বর, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর মতো নির্বাচনী সরকারি ও বেসরকারি কর্পোরেট ক্লায়েন্টদের কাছে ৭৮,০০০টি সিম কার্ড বিক্রি করার অনুমতি পায় টেলিকম জায়ান্ট গ্রামীণফোন।
২৫ নভেম্বর বিটিআরসিকে পাঠানো এক চিঠিতে গ্রামীণফোন উল্লেখ করে যে তারা তাদের পরিষেবা উন্নতির সব শর্ত পূরণ করেছে। ওই চিঠিতেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আবেদন জানায় তারা।