বুধবার ঢাকায় বড় শোডাউনের পরিকল্পনায় বিএনপি-জামায়াত
বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং অন্যান্য বিরোধী দল বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দেশব্যাপী 'গণতন্ত্র হত্যা দিবস' পালনের ঘোষণা দিয়েছে। ১৯৭৫ সালের এইদিনে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, সেই প্রেক্ষাপটের স্মরণে আগামীকাল দিবসটি পালন করতে যাচ্ছে বিরোধী দলগুলো।
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে তাদের চলমান আন্দোলনেরও একটি অংশ হবে আগামীকালের এই কর্মসূচি।
সমস্ত মহানগর ও জেলায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও বিরোধী দলগুলো ঢাকায় তাদের শক্ত অবস্থান তৈরির সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে।
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি রাজধানীতে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সমাগম আশা করছে। এরজন্য গত ১৯ জানুয়ারি এক আবেদনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে অনুমতি ও সহযোগিতা চায় দলটি।
এদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল এক বিবৃতিতে বুধবারের সমাবেশ সফল করতে দল ও এর সহযোগী সংগঠনের সমর্থক, কর্মী ও নেতাদের প্রতি সর্বাত্মক প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছেন।
বর্তমান সরকারকে দুর্নীতিবাজ, ফ্যাসিবাদী, গণবিরোধী সরকার উল্লেখ করে তিনি তাদের ১০ দফা দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সবাইকে রাজপথে নামার আহ্বান জানান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স টিবিএসকে বলেন, "আসন্ন কর্মসূচিতে আমরা শান্তিপূর্ণ উপায়ে ব্যাপক শোডাউন করতে প্রস্তুত। জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নামবে।"
মার্চের শেষের দিকে শুরু হওয়া অন্দোলন রমজান মাস শুরুর আগেই যেন সর্বোচ্চ গতি পায় সেই চেষ্টাই করছে বিরোধী দলগুলো ।
জানা গেছে, সাত দলের সমন্বয়ে গঠিত নতুন জোট গণতন্ত্র মঞ্চ ২৫ জানুয়ারি সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। আর বারো দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান জানিয়েছেন, বরাবরের মতো বিজয়নগর পানির ট্যাংকের নিচে তাদের জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ হবে বেলা ৩টায়। বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে তারা ঢাকায় তাদের জোটের শক্তি প্রদর্শন করতে চান বলেও জানান তিনি।
মোস্তফা মোহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামও একই দিনে রাজধানীতে নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করবে বলে গতকাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। তাদের সঙ্গে থাকবে বাংলাদেশ পিপলস পার্টি।
জামায়াত, গণঅধিকার পরিষদের পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা
জামায়াতের ইসলামীর প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ টিবিএসকে বলেন, "২৫ তারিখ আমরা বাকশাল ও একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা কায়েমের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালন করবো, এটি একদমই আমাদের সতন্ত্র কর্মসূচি।"
যুগপৎ কর্মসূচির ব্যাপারে তিনি বলেন, "জামায়াতে ইসলামী এককভাবেই আন্দোলনে সক্ষম একটি দল, বিএনপির মুখাপেক্ষী দল নয় জামায়াতে ইসলামী। বর্তমানে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনে ঘোষণা দিয়ে মূলত দলীয় কর্মসূচিই পালন করছে। বিএনপির এটি কোনো যুগপৎ কর্মসূচির মধ্যে পড়ে না, কারণ এই যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে বিএনপি বাকি কোনো দলের সাথেই সমন্বয় করে সময়,তারিখ ও কর্মসূচি ঠিক করছে না, বাকি দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয়হীনভাবেই কর্মসূচি দিচ্ছে তারা।"
এদিকে, গণঅধিকার পরিষদের নেতা ও ডাকসুর সাবেক সহ-সভাপতি নুরুল হক নূরও বিএনপির কর্মকাণ্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, "বিএনপি এই যুগপৎ আন্দোলন করছে বাকিদলগুলোর সঙ্গে সমন্বয়হীনভাবে। এতে করে বাকি দলগুলোর কর্মসূচি পালন করতে বেগ পেতে হচ্ছে। সকল দলের সাথে আলোচনা করে বিএনপির এই যুগপৎ কর্মসূচি পালন করা উচিত।"
২৫ তারিখ কর্মসূচি পালনের ব্যাপারে গণঅধিকার পরিষদের গণমাধ্যম সমন্বয় আবু হানিফ বলেন, "২৫ তারিখ আমাদেরও কর্মসূচি আছে, তবে সেটি গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে নয়, এককভাবে সরকারবিরোধী দলীয় সতন্ত্র কর্মসূচি।"