৪০০ বছর পুরানো শেখের টেক কালি মন্দির: সুন্দরবনে মধ্যযুগীয় স্থাপনা ভ্রমণের সুযোগ মিলছে পর্যটকদের
সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বাংলার মধ্যেযুগীয় ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শেখেরটেক কালি মন্দির। আনুমানিক ৪০০ বছর ধরে ওই মন্দিরটি লোকচক্ষুর আড়ালে থাকলেও, এবার তা পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে বন বিভাগ।
মোগল আমলে নির্মিত ওই মন্দিরটি ঘিরে তৈরি করা হয়েছে শেখেরটেক ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র। এটি সুন্দরবনের পশ্চিম বন বিভাগের খুলনা রেঞ্জের কালাবগি ফরেস্ট স্টেশনের আদাচাই টহল ফাঁড়ির ১৬ নং কম্পার্টমেন্ট এলাকায় শিবসা নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত।
পশ্চিম সুন্দরবন বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, 'শেখেরটেক ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের পথে রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা সেখানে সীমিত পরিসরে পর্যটদের যাওয়ার অনুমতি দেওয়া শুরু করেছি। আগামীতে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর পর্যটকদের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত করা হবে।'
খুলনা শহর থেকে নদী পথে প্রায় ৮৫ কিলোমিটার দূরে শিবসা নদীর পূর্বের পাড়ে রয়েছে শেখের খাল। তার কিছুটা দূরে এগিয়ে কালির খাল। এই দুই খালের মধ্যবর্তী স্থানটি শেখের টেক নামে পরিচিত। এলাকাটি জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে মধ্যযুগীয় স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ ইটের দেয়াল ও ঢিবি। তবে দণ্ডায়মান স্থাপনা হিসেবে এখন শুধু টিকে আছে কালি মন্দিরটি।
বন বিভাগ জানায়, সুন্দরবনে অভ্যন্তরে বর্তমানে সাতটি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। যেগুলি হল, করমজল, হারবাড়িয়া, কটকা, কচিখালী, দুবলার চর, হিরণ পয়েন্ট ও কলাগাছী। তবে ওই সব স্থানে প্রতি বছর প্রায় ২ থেকে আড়াই লাখ পর্যটক ভ্রমণ করে। একই স্থানে বেশি পর্যটকের ভিড়ে বনের সার্বিক পরিবেশ ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।
তাই ২০২১ সালে নতুন করে আরও চারটি পর্যটন কেন্দ্র তৈরীর উদ্যোগ নেয় বন বিভাগ, কেন্দ্রগুলো হলো: সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের শেখেরটেক ও কালাবগী, শরণখোলা রেঞ্জের আলীবান্ধা ও চাঁদপাই রেঞ্জের আন্ধারমানিক। ২৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এ তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের পথে রয়েছে।
তবে নতুন যে চারটি পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণ চলছে, তার মধ্যে ঐতিহাসিক নিদর্শন থাকায় সব থেকে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে শেখেরটেক ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রটি।
গত ২৮ জানুয়ারি ওই মন্দিরটি পরিদর্শন করেছেন এই প্রতিবেদক। সেখানে দেখা যায়, শেখের টেক খাল থেকে মন্দির পর্যন্ত প্রায় সোয়া এক কিলোমিটার কংক্রিটের ফুট ট্রেলই নির্মাণ করা হয়েছে। ওই ফুট ট্রেইলটি মন্দিরের চার পাশ থেকে ঘুরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া পর্যটকদের বনের উপরিভাগ দেখার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে একটি ওয়াচ টাওয়ার। বনের মধ্যে কিছু স্থানে ইটের রাস্তাও তৈরী করা হয়েছে। পর্যটকদের সুবিধার্থে একটি টয়লেটের ব্যবস্থাও আছে।
মন্দিরের বর্ণনা
সম্প্রতি ওই মন্দিরটি জরিপ করেছে সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মন্দিরটি বর্তমানে খুবই ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় টিকে আছে। এর স্থাপত্যিক কাঠামো ও শিল্পশৈলীদৃষ্টে অনুমিত হয় ৩০০ থেকে ৩৫০ বছর আগে এটি নির্মিত হয়েছে। এর দক্ষিণ ও পশ্চিমে দিকে রয়েছে দুটি প্রবেশদ্বার। এক গম্বুজ বিশিষ্ট ছাদ নিয়ে নির্মিত ওই মন্দিরটি। এতে মোট চার ধরনের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। যার পরিমাপ হলো, ২০*১৫*৪ সেমি, ২০*১৫*৪.৫ সেমি, ১৬*১২*৪ সেমি ও ১৬*১২*৫ সেমি।
মন্দিরের বাইরের অংশ ৬৫৫ সেন্টিমিটার বর্গাকার। আর ভেতরের অংশ ৩২৫ সেন্টিমিটার বর্গাকার। দেয়ালের পুরত্ব ১৬৫ সেন্টিমিটার। ভেতরে উত্তর দিকে একটি ছোট কুঠরি রয়েছে। দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশের প্রতিটি প্রবেশ পথ চওড়া ৯৭ সেন্টিমিটার।
মন্দিরের বাইরের দিকে জ্যামিতিক নকশা, ফুল-লতা-পাতা প্রভৃতি সম্বলিত পোড়ামাটির অলংকৃত ইট ব্যবহার করা হয়েছে। দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকে প্রবলভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরটির অভ্যন্তরের বিভিন্ন স্থানেও ফাটল ধরেছে। মন্দিরটির শীর্ষে গাছপালা ও উদ্ভিদপূর্ণ। বড় বড় গাছের শিকড় প্রবেশ করে মন্দিরের ডোম ও দেয়ালগুলোকে প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ইতোমধ্যে ডোম ও দেয়ালগুলোতে ফাটল ধরেছে। এই ফাটলের ফলে মন্দিরের ডোম ও দক্ষিণ পশ্চিম অংশ এবং উত্তর-পূর্ব কোনের অংশের ইট খসে পড়েছে। মন্দিরের চারপাশে দেয়াল হতে খসে পড়া ইটের অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এছাড়াও মন্দিরের চারপাশে বিশেষ করে দক্ষিণ দিকে প্রচুর ছোট – বড় গাছ রয়েছে, যার ছায়ার কারণে মন্দিরে রৌদ্রের আলো প্রবেশ করতে পারে না।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বলছে, মন্দির তৈরিতে স্থানীয় শামুকের তৈরি চুন ও শিবসা নদীর বালু ব্যবহার করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেলেই বলা সম্ভব হবে প্রকৃতপক্ষে গাঁথুনিতে কী কী উপাদান ব্যবহার করা হয়েছে।
এই জরিপ দলের নেতৃত্বে ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের খুলনা ও বরিশাল বিভাগের সদ্য বিদায়ী আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান।
তিনি বলেন, "অনেক আগে সুন্দরবন ও এর আশপাশে যে মানুষের বসতি ছিল, ওই মন্দিরটি তার প্রমাণ বহন করে। মন্দিরটি আনুমানিক ৩০০-৩৫০ বছর আগে নির্মিত বলে এর স্থাপত্যিক কাঠামো ও শিল্পশৈলী দেখে অনুমান করা হচ্ছে। মন্দিরটি সংরক্ষণ করতে না পারলে অচিরেই তা ধ্বংস হয়ে যাবে। বন বিভাগের সহযোগিতা পেলে সেটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব
বিভিন্ন ইতিহাস গ্রন্থে সুন্দরবনের সবচেয়ে বিখ্যাত পুরনো স্থাপনা হিসেবে শেখের টেক ও কালি মন্দিরকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। তবে ওই স্থানটিতে কারা বসবাস করতো বা কী কারণে শেখেরটেক নাম হলো, তা কোনো ইতিহাস গ্রন্থে সঠিকভাবে তা বলা হয়নি। তবে অধিকাংশ গ্রন্থে এটিকে মোগল আমলের স্থাপনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
১৯১৪ সালে প্রকাশিত সতিশ চন্দ্র মিত্রের লেখা যশোহর-খুলনার ইতিহাস গ্রন্থের প্রথম খণ্ড বইতে শেখের টেকের কিছু তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ওই বইয়ে লেখা হয়েছে, "সেখের খাল ও কালীর খালের মধ্যেবর্তী অপেক্ষাকৃত উচ্চভূমি বিশিষ্ট নিবিড় জঙ্গলকে সেখের টেকে বলে। এখানে সুন্দরী গাছ যথেষ্ট, হরিণের সংখ্যা অত্যন্ত অধিক এবং ব্যাঘ্রাদি (বাঘ) হিংস্র জন্তুর আমদানিও বেশি। সুতরাং আমাদিগকে এক প্রকার প্রাণ হাতে করিয়া এ বনে ভ্রমণ করিতে হইয়াছিল। সেখের খালের মধ্যে প্রবেশ করিয়া ডান দিকে চতুর্থ পাশখালির পার্শ্বে এক স্থলে ইষ্টক-গৃহের ভগ্নাবশেষ ও কয়েকটি গাবগাছ দেখা যায়। তথা হইতে উঠিয়া বনের মধ্যে প্রায় একমাইল গেলে, একটি দূর্গ দেখিতে পাওয়া যায়। সাধারণতঃ বাওয়ালীরা ইহাকে 'বড় বাড়ী' বলে।"
"সম্ভবতঃ ইহাই মহারাজ প্রতাপাদিত্যের শিবস দূর্গ। দূর্গের অনেক স্থানে উচ্চ প্রাচীর এখনও বর্তমান এই দূর্গের উত্তর-পূর্ব বা ঈশানকোণে একটি শিবমন্দিরের ভগ্নাবশেষ আছে। সেখান হইতে দক্ষিণ-পূর্ব মুখে অগ্রসর হইলে, যেখানে সেখানে পুকুর ও পরে ৩টি ইষ্টকবাড়ী ও অসংখ্য বসতিভিট্টা পাওয়া যায়। বাড়িগুলির মাটির ঢিপি শত শত গাবগাছে ঢাকা রহিয়াছে। তাহা হইতে বাহির হইলে, একটু অপেক্ষাকৃত খোলা জায়গায একটি সুন্দর মন্দির দৃষ্টিপথবর্ত্তী হয়। সুন্দরবনের ভীষণ অরণ্যনীর মধ্যে বিবিধ কারুকার্য্য-খচিত এবং অভগ্ন অবস্থায় দণ্ডায়মান এমন মন্দির আর দেখি নাই।"
বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, "মন্দিরের অন্যান্য প্রকটি দেখিলে ইথা যে মোগল আমলে কোন হিন্দুকর্তৃক নির্মিত হইয়াছিল, তাহা অনুমান করা সহজ হয়।" আরেক স্থানে লেখা হয়েছে, "মন্দিরে কোন দেবদেবিগ্রহ নাই; তবুও অনুমান করা যায় যে, প্রতাপাদিত্য তাহার দৃর্গের সন্নিকটে এই কালিকা দেবীর মন্দির নির্মাণ করেন।"
এই মন্দিরটিকে সতিশ চন্দ্র মিত্রের বইয়ে, সুন্দরবনের একটি প্রধান স্থাপত্য-নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া মন্দির পরিমাপ ও কারুকার্যের বর্ণনা করা হয়েছে।
এছাড়া এ.এফ.এম. আব্দুল জলীলের সুন্দরবনের ইতিহাস নামক গ্রন্থেও ওই স্থাপনার বর্ণনা করা হয়েছে। তার বইয়ে লেখা হয়েছে, "শেখের টেক অঞ্চলটির ক্ষেত্র গড়ে ১০ বর্গ মাইলে হবে। এককালে সেখানে বহুলোকের বসবাস ও গমনাগমন ছিল তা সহজেই বোঝা যায়। সম্ভবত: মগ–পর্তুগীজ জলদস্যুদের অত্যাচার হতে প্রজাগণকে রক্ষা করার জন্য মোগল শাসকেরা সেখানে সামরিক ঘাঁটি নির্মাণ করেন এবং সুন্দর লোকালয় গড়ে তোলেন। মন্দিরটি হিন্দু রাজকর্মচারীদের জন্য নির্মিত হয়ে থাকবে।"
তবে বইয়ের অন্য এক স্থানে তিনি উল্লেখ করেছেন, "কেহ কেহ এই স্থানটিকে রাজা প্রতাপাদিত্যের শিবসা দুর্গ অথবা মোঘল আলমে নির্মিত কোন দুর্গ বলে অনুমান করেন।"
তবে বন বিভাগের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুন্দরবনের ইতিহাসে এই প্রত্নস্থানটি বারোভূঁইয়া বা মোগলদের (১৬০০ শতাব্দী বা সমসাময়িক) সময়কালের বলে মনে করা হয়। এই অঞ্চলের ইমারতে ধ্বংসপ্রাপ্ত ঢিবী শেখের বাড়ী নামে পরিচিত হলেও ইতিহাস মতান্তের শিবসা দুর্গ বলা হয়েছে।
বাঘের আধিক্য
শেখের টেক এলাকাটি বনের অন্যান্য স্থানের তুলনায় কিছুটা উঁচু হওয়ায় বাঘের আধিক্য বেশি বলে জানিয়েছেন বনরক্ষীরা।
শেখের টেক ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রে নির্মাণ কাজে সহায়তা ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য সেখানে চারজন বনরক্ষীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বনরক্ষী দীপক কুমার দে বলেন, 'মন্দিরের কাছে সব সময়ই বাঘ অবস্থান করে। এ কারণে মন্দিরের জায়গাটা বনের অন্যান্য স্থানের তুলনায় একটু উঁচু।'
তিনি বলেন, 'আমরা জানতাম রাতের বেলা আলো দেখলে বাঘ সেখানে আসে না। কিন্তু এখানের বাঘগুলো ক্ষিপ্ত হয়ে গেছে। এখানে শ্রমিকরা কাজ করে, সেই শব্দে তারা হয়তো অসন্তুষ্ট হয়ে আছে। প্রতিদিন রাতেই তারা নির্মাণ কাজে আশেপাশে আসছে, সকালে উঠে আমরা পায়ের ছাপ দেখতে পাচ্ছি।'
তিনি আরও বলেন, 'নির্মাণকাজের সময়ে মন্দিরের কাছে কিছু পাইপ ও পলিথিন রাখা হয়েছিল। বাঘেরা সেই পাইপ ছিড়ে দুরে নিয়ে ফেলে দিয়েছে, পলিথিন কামড়ে ছিড়েছে। মন্দিরটি হয়তো তাদের সন্তান প্রসবের ভালো স্থান ছিল। তাদের আস্তানা সংস্কার করা হচ্ছে, এতে অসন্তুষ্ট তারা।'
এছাড়া অন্তত ১০ জেলের সাথে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক, যারা ইতোপূর্বে বহুবার শেখেরটেক এলাকায় বনজ সম্পদ আহরণ করেছেন। সবাই জানিয়েছেন, ওই মন্দিরটি জেলেদের কাছে বাঘের বাড়ি নামে পরিচিত।
এছাড়া শতাধিক বছর আগে প্রকাশিত, সতিশ চন্দ্র মিত্রের লেখা যশোহর-খুলনার ইতিহাস গ্রন্থও ওই স্থানে বাঘের আধিক্যের কথা বলা হয়েছে। বইয়ে লেখা হয়েছে, "এখানে এখানে সুন্দরী গাছ যথেষ্ট, হরিণের সংখ্যা অত্যন্ত অধিক এবং ব্যাঘ্রাদি (বাঘ) হিংস্র জন্তুর আমদানিও বেশি। সুতরাং আমাদিগকে এক প্রকার প্রাণ হাতে করিয়া এ বনে ভ্রমণ করিতে হইয়াছিল।"
সংস্কারকাজের আগে করা হয়নি কোনো স্টাডি: বিশেষজ্ঞরা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এন্ড উড ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. ওয়াসিউল ইসলাম বলেন, 'শেখেরটেক এলাকায় ইকোট্যুরিজম বা যাই করা হোক না কেন একটা স্ট্যাডি (গবেষণা) করে কাজ শুরু করা উচিত ছিল। তবে বন বিভাগ এটা করেনি। ইতোমধ্যে সেখানে প্রচুর গাছপালা কেটে কংক্রিটের ফুট ট্রেইল নির্মাণ করা হয়েছে। উচিত ছিল পরিকল্পিত ভাবে পরিবেশের সাথে ভারসাম্য রেখে পর্যটন কেন্দ্রে নির্মাণ করার।'
মন্দিরটি সম্পর্কে তিনি বলেন, 'মন্দিরটি আরও ২০ বছর আগেও আমি পরিদর্শন করেছি। খুবই ভঙ্গুর দশায় আছে। মন্দরটি সংরক্ষণ করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী।'
ওই স্থানের পরিবেশ ও বন্য প্রাণীর বিষয়ে তিনি বলেন, 'বন বিভাগের উচিত হবে, সেখানে মাত্র সীমিত পরিসরে পর্যটক পাঠানোর। কারণ পর্যটনের জন্যে বনের পরিবেশ নষ্ট বা বাঘেদের যন্ত্রণা দেওয়া ঠিক হবে না।'
তিনি বলেন, 'আমি একসময়ে বন বিভাগে চাকরি করতাম। তখন একটি বাঘ পলিথিন খেয়ে মারা গিয়েছিল। সেখানে পর্যটকরা গেলে বনে অনেক কিছুই ফেলে আসবে। যেহেতু বাঘের আবাসস্থল, তাই বাঘ খেয়ে মারা রোগে ভুগতে পারে।'
'তাই পর্যটক পাঠানোর আগে প্রোপার গাইড ছাড়া পাঠানো উচিত হবে না। আর কতজন পর্যটক যেখানে যেতে পারবে, তা নিয়ে গবেষণা করা জরুরী।'