আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টরিং করতে উচ্চ ব্যয়ের অভিযোগ ব্যবসায়ী নেতাদের
আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টরিং করতে খরচ অনেক বেশি হওয়ায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা এ সুবিধা নিতে পারে না বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
এক দেশের রপ্তানিকারকের কাছ থেকে একটি ইনভয়েস ক্রয় করে পরবর্তীতে অন্যদেশে অবস্থিত তার আমদানিকারকের কাছ থেকে সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া হলো আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টরিং।
আমদানি বিলের বিপরীতে ছাড় এবং আন্তর্জাতিক বীমা খরচ বেশি। এছাড়া তৃতীয় কোনো দেশ থেকে পেমেন্ট এলে টাকা তুলতে সমস্যা হয়।
এছাড়া, রপ্তানি ফ্যাক্টরিংয়ের নীতিমালা থাকলেও আমদানি ফ্যাক্টরিংয়ের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো নীতি না থাকায় তা বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়ছে বলে উল্লেখ করে তারা।
গতকাল (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীতে ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফাইন্যান্সের ফ্যাক্টরিং ও ওপেন অ্যাকাউন্টের উপর আইসিসি বাংলাদেশ ওয়ার্কশপের প্যানেল আলোচনা ও সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ীরা এ কথা বলেন।
তারা বলেন, এসব সমস্যা সমাধানে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এগিয়ে আসতে হবে অন্যথায় ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টরিংয়ের প্রতি আগ্রহ হারাবেন।
প্যানেল আলোচনা সঞ্চালনা করেন মুহাম্মদ এ (রুমী) আলী, অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল।
প্রধান বক্তৃতায় আহমেদ জামাল উল্লেখ করেন, ব্যাপক তৎপরতার পর বৈদেশিক বাণিজ্য লেনদেনে আমূল পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে চলমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন প্রচেষ্টার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে সহায়তার নীতি প্রসারিত করেছে।
"এমনকি মহামারি চলাকালীন বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান আমাদেরকে পরিদর্শন করে, এর মানে আমরা বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও এগিয়ে যাচ্ছি। আমি নিশ্চিত যে বহিরাগত অর্থদাতারা বাংলাদেশে বাণিজ্য লেনদেন থেকে উপকৃত হবেন," তিনি যোগ করেন।
আইসিসি বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট এ কে আজাদ বলেন, উন্নত ও বাধাহীন বাণিজ্য অর্থায়নের জন্য বেশিরভাগ দেশই ওপেন অ্যাকাউন্ট এবং আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টরিং গ্রহণ করছে। তবে, একটি অঞ্চল হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ায়, বিশেষ করে বাংলাদেশে ফ্যাক্টরিং এখনও খুব সীমিত, যেখানে বেশিরভাগ অঞ্চলে তা বেড়েছে।
তিনি আরো বলেন, "স্মার্ট বাংলাদেশ করার জন্য ডিজিটালাইজেশনের প্রচার করছে দেশ। তাই আমাদের পরামর্শ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে ডিজিটালাইজ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত যথাযথ নীতি পরিবর্তন করা।"
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া বাংলাদেশের চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ, প্লাস্টিক পণ্য এবং অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের মহাপরিচালক মো. আখতারুজ্জামান এবং নেদারল্যান্ডসের ফ্যাক্টর চেইন ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব পিটার মোরলি উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিসি বাংলাদেশের মহাসচিব আতাউর রহমান।
এক দিনব্যাপী কর্মশালায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ মোট ১৩১ জন, ৩১টি ব্যাংকের ৯৬ জন এবং ২৪টি কোম্পানির ৩২ জন অংশগ্রহণ করেন।