নিউইয়র্কে এমপি গোলাপের ৯ বাড়ি: অনুসন্ধান চেয়ে ব্যারিস্টার সুমনের রিট
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) মো. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ৪০ লাখ ডলার ব্যয়ে ৯টি বাড়ি কেনার বিষয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এ রিট দায়ের করেন। অনুসন্ধানের নির্দেশনার পাশাপাশি, গোলাপের দুর্নীতি অনুসন্ধানে সরকারের সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন জানানো হয়েছে রিটে।
সুপ্রিম কোর্টের এই আইনজীবী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "গোলাপের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও দুদকের কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া না পেয়ে আমি বিষয়টি হাইকোর্টে নিয়েছি।"
এ বিষয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে শুনানি হতে পারে।
এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক গোলাপ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ও দুদকের কাছে তার বিরুদ্ধে 'মিথ্যা ও মানহানিকর' তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে ৫০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন।
মামলার বিবৃতিতে বলা হয়, আবদুস সোবহান ২০১৪-১৫ সালে সংসদ সদস্য হয়ে অর্থ পাচার করেছেন বলে যে তথ্য প্রচার করেছেন ব্যরিস্টার সুমন, তা সত্য নয়। আবদুস সোবহান ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন। সংসদ সদস্য হওয়ার পর তিনি (গোলাপ) যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি কেনেননি।"
অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের একটি গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম, অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি)- এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ ২০১৮ সালে তার নির্বাচনী হলফনামায় মার্কিন নাগরিক হওয়ার এবং নিউইয়র্ক সিটিতে নয়টি সম্পত্তির মালিক হওয়ার তথ্য গোপন করেছিলেন।
২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে এ সম্পত্তিগুলো কেনেন গোলাপ। তার এই সম্পত্তির বাজারমূল্য প্রায় ৪০ লাখ ডলার এবং এর মধ্যে আটটিই তিনি অগ্রিম নগদ অর্থ দিয়ে কিনেছিলেন।
সবশেষ ২০১৯ সালে তিনি নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে ১.১৮ মিলিয়ন ডলারে একটি সেমি-ডিটাচড বাড়ি কিনেছেন। ওসিসিআরপি'র প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, কিছুটা বন্ধক ও কিছুটা নগদ অর্থের বিনিময়ে তিনি এ সম্পত্তিটি কিনেছেন।
এছাড়াও, সংস্থাটির তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রে গোলাপের এমন কোনো টেকসই আয়ের উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি যা দিয়ে তিনি এসব সম্পত্তি কিনতে পারেন।
নিউ ইয়র্ক সিটিতে লাইসেন্সবিহীন ট্যাক্সি চালানো, ফার্মেসি চেইন ওয়ালগ্রিনসের একটি শাখায় ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ করা এবং পিজ্জা তৈরির মতো স্বল্প বেতনের নানা কাজ করেছেন তিনি যুক্তরাষ্ট্রে।
আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ আসলে বাংলাদেশ থেকেই টাকা নিয়ে এসব সম্পত্তি কিনেছেন কিনা- যা আইনবিরুদ্ধ, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে এ প্রতিবেদনে।