প্রথম দিনে ৪০ মিনিটেই বিক্রি শেষ ভর্তুকি মূল্যের দুধ, ডিম, ও মাংস!
প্রায় ৬০-৭০ কেজি গরুর মাংস, আট কেজি খাসি, ২৫ কেজি চামড়া ছাড়ানো (ড্রেসড) ব্রয়লার মুরগি, ৬০ লিটার দুধ ও ২০০ ডিম ৪০ মিনিটের মধ্যে কিনে নিলেন ক্রেতারা। পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের খামারবাড়িতে স্থাপন করা ভর্তুকি মূল্যের বিক্রয় পয়েন্টে এভাবেই সব পণ্য হুড়মুড়িয়ে বিক্রি হয়ে যায়।
ভর্তুকি মূল্যে এসব পণ্য কিনতে অনেকেই ভিড় জমান। কিন্তু ক্রেতাদের অনেককে প্রত্যাশার চেয়ে কম পণ্য কিনে ফিরতে হয়েছিল। কেউ কেউ খালি হাতেও ফিরে গিয়েছেন।
তারপরও অনেকের জন্য এ কেনাকাটায় ছিল পুরোদস্তুর বিজয়ীর অনুভূতি।
একটি বেকারিতে চাকরি করা মোহাম্মদ রফিক বলেন, 'সাত মাস পরে গরুর দুধ কিনতে পারলাম। এক কেজি গরুর মাংসও কিনেছি। কিন্তু অন্য পণ্য শেষ হয়ে গেছে।'
পণ্যের পরিমাণ বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন তিনি।
আরেক ক্রেতা আবদুল করিমের মুখেও আনন্দের হাসি দেখা গেল।
তিনি জানান, রমজানের কেনাকাটা তার পক্ষে প্রায়ই সম্ভব হয় না। 'বেতন পাই ২৫,০০০ টাকা। বেতনের বেশিরভাগই চলে যায় বাড়ি ভাড়া, সন্তানের পড়ালেখা ও খাবার খরচে। প্রথম রমজানের আগে একটু সুলভ মূল্যে পণ্য কিনতে পেরে ভালই হলো।'
বিকেল ৫.১০ মিনিটে পণ্য বিক্রি শেষ হওয়ার পরও প্রায় ২০ জন ক্রেতা ছিল। তাদেরকে খালি হাতেই ফিরতে হয়।
এদের একজন আলমগীর হোসেনকে দেখা গেল ভীষণ হতাশ হতে।
'এখানে বিক্রি শুরু হয়েছে দেখে বাসায় গেলাম টাকা আনতে । ২৫ মিনিট পর এসে দেখি শেষ। এত অল্প মাল বিক্রি করা উচিৎ হয়নি' বলেন তিনি।
রমজান মাসে নিম্ন আয়ের মানুষদের আমিষের চাহিদা পূরণে সহায়তা করার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়িতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর প্রাঙ্গণে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রির এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
১ থেকে ২৮ রমজান পর্যন্ত রাজধানীর ২০টি স্থানে এ বিক্রয় কার্যক্রম চলবে।
এ উদ্যোগের আওতায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৪০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯৪০ টাকা, ব্রয়লার প্রতি কেজি ৩৪০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা এবং ডিম প্রতিটি ১০ টাকা দামে কিনতে পারবেন।
আজ উদ্বোধনের ৪০ মিনিটের মাথায় খামারবাড়ি বিক্রয় পয়েন্টে সকল পণ্য বিক্রি হয়ে যায় বলে জানান খামারবাড়ি ডিলারশিপ ট্রাকের একজন ক্যাশিয়ার মোকাদ্দাস ইসলাম।
উদ্বোধনী দিনে সক্ষমতার কেবল ২৫ শতাংশ বিক্রি করা হয়েছে।
একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ এক কেজি গরুর মাংস, এক কেজি মুরগির মাংস, এক লিটার দুধ, এক ডজন ডিম, ও এক কেজি খাসির মাংস কিনতে পারবেন।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ইমরান হোসেন বলেন, প্রতিটি ভ্যানের জন্য ১০০ কেজি গোমাংস, ৫০ কেজি চামড়া ছাড়ানো ব্রয়লার মুরগি, ২,০০০ ডিম, ২০০ লিটার দুধ ও ১০ কেজি খাসির মাংস বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বিক্রির স্থানগুলো হলো সচিবালয়সংলগ্ন আবদুল গণি রোড, খামারবাড়ি, মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটি, মিরপুর ষাট ফুট রাস্তা, আজিমপুর মাতৃসদন, পুরান ঢাকার নয়াবাজার, আরামবাগ, নতুন বাজার, মিরপুরের কালশী, খিলগাঁও রেলগেট, নাখালপাড়ার লুকাস মোড়, সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার, মোহাম্মদপুরের বছিলা, উত্তরার দিয়াবাড়ি, যাত্রাবাড়ী, গাবতলী, হাজারীবাগ, বনানীর কড়াইল বস্তি, কামরাঙ্গীরচর, ও রামপুরা।