‘ভেজাল কসমেটিকসের দৌরাত্ম্যে সৎভাবে ব্যবসার সুযোগ কমে যাচ্ছে’
নকল ও ভেজালের দৌরাত্ম্যে এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে যে, সৎভাবে ব্যবসা করে টিকে থাকার সুযোগ কমে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
বুধবার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে কসমেটিকস পণ্য আমদানিকারক, বাজারজাতকারী ও ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে মতবিনিময় সভায় ভোক্তার মহাপরিচালক এ মন্তব্য করেন।
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, "সিস্টেম এখন এমন দাঁড়িয়েছে, অসৎ হতে বাধ্য হতে হচ্ছে। সৎভাবে ব্যবসা করে কেউ টিকে থাকতে পারবে না।"
তিনি বলেন, "পণ্য নকল হচ্ছে, ভেজাল হচ্ছে, প্রাইস ঠিক নাই, কাস্টমসকে ফাঁকি দিয়ে পণ্য আনা হচ্ছে। দেশীয় ব্র্যান্ড যারা ভালো করছে সেটা আবার কপি করা হচ্ছে। এক ধরনের একটা বিশৃঙ্খল অবস্থা চলছে। বৈধ ব্যবসা নষ্ট হচ্ছে। কসমেটিকস এখন একটা প্রয়োজনীয় পণ্য হয়ে গেছে, মার্কেটও বাড়ছে।"
কসমেটিকসের বাজারে ব্যাপকভাবে নকল, ভেজাল ও কাস্টমস ফাঁকি দিয়ে আসা পণ্যের সরবরাহের কারণে যারা বৈধপথে আমদানি করছে, উৎপাদন করছে, তারা ব্যবসা করে টিকে থাকতে পারছেন না। এই প্রেক্ষিতেই ভোক্তার মহাপরিচালক এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মৌলভীবাজারের 'স্কিন শাইন' নামের একটি কারখানায় নকল পণ্য উৎপাদন এবং মেয়াদোত্তীর্ণ কসমেটিকস পণ্য বিক্রির অপরাধে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এই অভিযানের প্রতিবাদে মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে একত্রিত হয়ে ভোক্তার কর্মকর্তাদের উপর চড়াও হন। ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে তারা আর অভিযান চালাতে পারেনি।
সভায় মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ী নেতারা এই বিষয়টির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ক্ষমা চান।
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, "অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বিদেশি কসমেটিকসের ক্ষেত্রে আমদানিকারকের তথ্য থাকে না এবং আমদানিকারক কর্তৃক এমআরপি প্রদান করা হয় না। আবার কসমেটিকস পণ্যে বিষাক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় যা ভোক্তার ত্বকের ক্ষতি করছে। এই ধরনের কার্যকলাপের সাথে জড়িত ব্যবসায়ীগণের বিরুদ্ধে অধিদপ্তর কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।"
এ সময় মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. বশির উদ্দিন বলেন, "অনেক কসমেটিকস ব্যবসায়ী আছেন, যারা কোথা থেকে পণ্য আনে আর কোথায় বিক্রি করে তার কোনো হদিস নেই। যারা নকল পণ্য তৈরি করে বিক্রি করছে তাদের পক্ষে ব্যবসায়ী সমিতি নেই। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যত ধরনের সহযোগিতা দরকার সবই করবে ব্যবসায়ীরা।"
আগামী সপ্তাহ থেকে ভোক্তা অধিদপ্তর কসমেটিকসের ব্যবসায়ীদের উপর নজরদারি আরও বাড়িয়ে দিবে বলে সভায় জানানো হয়।