বঙ্গবাজারের মতোই ঝুঁকিপূর্ণ ঢাকার একাধিক মার্কেট, সচেনতা নেই ব্যবসায়ীদের
রাজধানীর বেশকিছু মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছে ফায়ার সার্ভিস ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনার পরেও কোনোরকম সচেতনতা ছাড়াই ঈদের কেনাবেচায় ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) ঢাকার গাউছিয়া মার্কেট পরিদর্শন শেষে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স জানায়, রাজধানীর অন্যতম জমজমাট এই মার্কেটটিও রয়েছে অগ্নিঝুঁকিতে।
রাজধানীর নিউ মার্কেট, মৌচাক মার্কেট এবং রাজধানী সুপার মার্কেটও ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
তবে এসব মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক হাজার দোকানে কোনো ধরনের সচেতনতা ছাড়াই চলছে ঈদের কেনাবেচা। ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়ও দেখা গেছে এসব মার্কেটে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ক্রেতা থাকায় দোকানের পাশাপাশি অলি-গলিতেও মৌসুমি দোকান নিয়ে বসেছেন খুচরা বিক্রেতারা।
বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের ঢাকা জোনের প্রধান ও সহকারী উপ-পরিচালক বজলুর রশিদ মার্কেট পরিদর্শন শেষে বলেন, "এই মার্কেটে (গাউছিয়া) অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা- নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং টিম, ফায়ার হাইড্রেন্ট, স্মোক ডিটেক্টর বা আগুন নেভানোর জন্য পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা নেই।"
তিনি আরও বলেন, "ঢাকার অধিকাংশ মার্কেটই ফায়ার সার্ভিসের সুপারিশগুলো মেনে চলছে না। আমরা আমাদের রেগুলার ডিউটি হিসেবে গাউছিয়া মার্কেট পরিদর্শন করেছি, বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে এই মার্কেট পরিদর্শনের কোনো সংযোগ নেই।"
"ঢাকার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শপিং মার্কেট ও কিচেন মার্কেট ঝুঁকিতে রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ঠাঁটারিবাজার, রাজধানী সুপারমার্কেট এবং চকবাজার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে", যোগ করেন তিনি।
বজলুর রশিদ বলেন, "অগ্নি দুর্ঘটনায় উদ্ধারের সময় অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি প্রয়োজন, কিন্তু এই মার্কেটে ওই পরিমাণ পানির ব্যবস্থা নেই। পরিদর্শনের সময় আমরা কিছু অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জাম (ফায়ার এক্সটিংগুশার) এবং পানির ব্যবস্থা দেখতে পেয়েছি। তবে এগুলো যথেষ্ট নয়," যোগ করেন তিনি।
গাউছিয়া মার্কেট দোকান মালিক সমিতির আহ্বায়ক মোঃ কামরুল হাসান বাবু বলেন, "ফায়ার সার্ভিসের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা দুই-তিন দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান করব।"
এদিকে রাজধানীর মৌচাক মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। তারা বলছে, দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে প্রায় ৭০ বছর আগে নির্মিত এ মার্কেটের রডের ধারণক্ষমতা কমে গেছে। তবে বৃহস্পতিবার দেখা গেছে, সেখানে স্বাভাবিকভাবেই চলছে ক্রয়-বিক্রয়।
মৌচাক মার্কেট বণিক সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, আমাদের এখানে প্রায় চারশোর মত দোকান। অগ্নি-নিরাপত্তার বিষয়ে তাদের সচেতন করি আমরা এবং আমরা প্রয়োজনীয় অগ্নি নির্বাপক সরঞ্জাম রেখেছি।