দেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী ৭২ ঘণ্টায় খুব সামান্য পরিবর্তনসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
আজ (১৬ এপ্রিল) সকালে আবহাওয়া অফিসের জারি করা বুলেটিনে বলা হয়, 'ঢাকা, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং দেশের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রাবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।'
আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৭৮ শতাংশ।
আবহাওয়াবিদ এস এম কামরুল হাসান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, আর্দ্রতা সূচক ৬০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলে মানুষের জন্য ঘর থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে উঠবে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারাদেশে চলমান তাপপ্রবাহ এক সপ্তাহ পর কমতে পারে। আগামী ২১-২২ এপ্রিল বা তারপরে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, সিলেট ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কিছুটা কমবে।
রোববার সারাদেশে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ শুষ্ক আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা চলমান অতি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস) অব্যাহত থাকতে পারে। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুরের সৈয়দপুরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা দেখা যেতে পারে ১৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি হতে পারে।
যে কারণে চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা বেশি
মূলত ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা বেশি হয়ে থাকে। আবহাওয়াবিদরা বলেন, বাংলাদেশে এপ্রিল হচ্ছে সবচেয়ে গরম মাস। এ সময় পৃথিবী সূর্য থেকে রশ্মি বা কিরণ পায় লম্বালম্বিভাবে। সূর্যকে কেন্দ্র করে যে কক্ষপথ ধরে পৃথিবী ঘুরছে, সেখানে পৃথিবীর অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ এই সময়ে সবচেয়ে কাছ থেকে সূর্যরশ্মি গ্রহণ করছে।
সোজা করে বলা যায়, এপ্রিল মাসে সূর্য থেকে বাংলাদেশের অবস্থান অন্য সময়ের তুলনায় সবচেয়ে কাছাকাছি থাকে। সে কারণে এ সময়টায় সূর্যের তাপ বেশিই পড়ে এই অঞ্চলে।
তবে চুয়াডাঙ্গায় গরম সবচেয়ে বেশি কেন—এ প্রশ্নের উত্তরে কামরুল হাসান বলেন, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, খুলনা অঞ্চলজুড়ে রয়েছে বিস্তীর্ণ সমভূমি। এই অঞ্চলের পশ্চিমে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। সেখানেও বিশাল এলাকাজুড়ে সমভূমি। সমভূমি থাকার কারণেই এখানে তাপ প্রবাহিত হয় পরিবহন পদ্ধতিতে। ফলে সরাসরি তাপ লাগে, আর তাপমাত্রা থাকে বেশি।
এ অঞ্চলে গরম বেশি পড়ার দ্বিতীয় কারণ হলো, বঙ্গোপসাগরের পশ্চিমঘাট হচ্ছে খুলনা, চুয়াডাঙ্গা অঞ্চল। আর বঙ্গোপসাগর হচ্ছে জলীয় বাষ্পের উৎস। এই এলাকা দিয়ে জলীয়বাষ্প প্রবেশ করে বলে অন্য এলাকার তুলনায় এখানে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি। তাই তাপমাত্রাও বেশি।