যেভাবে মে দিবসের সূচনা
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে ১ মে পৃথিবীর ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। পোষাকী নাম ছাড়াও মে দিবস নামেই এই দিনটির পরিচিতি। এই দিনটি সকল শ্রেণী পেশার শ্রমজীবী মানুষের ও তাদের পক্ষে কাজ করা সংগঠন সমূহের নিজেদের মধ্যে একাত্মবোধ গড়ে তোলা ও শক্তিশালী করা,নিজেদের দাবী ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করা ও বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে অর্জিত বিজয়ের আনন্দ উদযাপনের দিন।
১ মে দিনটি প্রাচীনকাল থেকে মধ্যযুগের পর পর্যন্ত ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশে বসন্তের উৎসব পালনের দিন ছিল। বসন্তকাল বছরের সবচাইতে ভালো সময় হিসেবে পরিগণিত। বসন্তকালীন আবহাওয়া আরামদায়ক, প্রকৃতিও সেজে ওঠে নানা রংয়ের ফুলে। মানুষের মন থাকে প্রফুল্ল। যদিও পশ্চিমা বিশ্বে বসন্তকাল শুরু হয় মার্চে এবং চলে মে মাসের শেষ পর্যন্ত,তবুও বসন্ত বিকশিত হয় মে মাসের শুরুতে। তাই আনন্দ উৎসবের জন্য এই দিনটি বেছে নেওয়া হয়েছিল বহু আগেই। রোমান ও গ্রীক সভ্যতার সময় থেকে এই উৎসব পালনের কথা জানা যায়। পরবর্তীকালে এই দিনটি ইতিহাসে বিশেষ স্থান করে নেয় শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলনের একটি বেদনাবিধুর আর বিজয়গাঁথা গৌরবের দিন হিসেবে।
বিশ্বে ধনিক শোষক ও কর্মজীবী শোষিত শ্রেণীর উদ্ভবের ইতিহাস প্রাচীন। তাদের মধ্যে স্বার্থের বৈপরীত্য ও শোষিত মানুষের স্বার্থরক্ষার সংগ্রামও পুরনো ইতিহাস। মধ্যযুগ পর্যন্ত পৃথিবীর কৃষি শ্রমিকরা কোথাও সংগঠিত ছিল না। তাদের পক্ষে কথা বলারও কেউ ছিল না। কিন্তু শিল্প শ্রমিকরা তাদের যুথবদ্ধ কাজের কারণে একসাথে অনেকে জীবনযাপন করতেন এবং অবধারিতভাবে তাদের দুর্ভাগ্য ও তাদের ওপর নিপীড়ন ও শোষণের বিষয়ে মতবিনিময় করার সুযোগ পেতেন। ইংল্যান্ডের শিল্পবিপ্লবের পরপরই ইউরোপের অন্যান্য দেশে ও আমেরিকায় শিল্পের দ্রুত প্রসার ঘটে। শিল্প শ্রমিক শ্রেণির দ্রুত বিস্তারলাভ ঘটতে থাকে। তাদের স্বার্থরক্ষার জন্য তারা ঐক্যবদ্ধ হতে থাকেন। জন্ম হয় শ্রমিক সংগঠনের।
অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত শ্রমজীবী মানুষের অবস্থা ছিল দুর্বিষহ। তারা মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য ছিলেন। কর্মদিবস ছিল ১২ থেকে ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত। মজুরি ছিল জীবন ধারণের জন্য অত্যল্প। কাজেই তাদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই অসন্তোষ দানা বাঁধতে থাকে। শিল্প শ্রমিকদের অসন্তোষ এর বহিঃপ্রকাশ ঘটতে থাকে তাদের সন্মানজনক জীবন ধারণের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য।
ইতোমধ্যে স্কটিশ শিল্প উদ্যোক্তা ও শ্রমিক বান্ধব চিন্তাধারার অধিকারী রবার্ট ওয়েন ১৮১৭ সালে তার ঐতিহাসিক আট ঘণ্টা কাজ, আট ঘণ্টা মনোরঞ্জন, আট ঘণ্টা বিশ্রাম- এই চিন্তাধারার উন্মেষ ঘটিয়েছেন। সাথেসাথেই শ্রমজীবী মানুষের কাছে এই চিন্তাধারা জনপ্রিয়তা লাভ করে। তারা এই চিন্তা যুক্তিসঙ্গত মনে করে আট ঘণ্টা কর্মদিবসের দাবীকে তাদের প্রাণের দাবীতে পরিণত করে। কোথাও কোথাও খুব ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক সাফল্যের বাইরে প্রাপ্তি বেশি কিছু না হলেও আন্দোলন দানা বেঁধে উঠছিল। শিল্পের উন্নতির সাথে সাথে শ্রমিক শ্রেণিও শক্তিশালী হয়ে উঠতে থাকে, তারা সংগঠিত হয়ে উঠতে থাক। ১৮৩০/৪০ সালের দিকে ইউরোপের শ্রমজীবী মানুষের আন্দোলন শক্তিশালী রূপ পেতে থাকে। বিশ্বব্যাপী বামধারার সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন দানা বাঁধতে থাকে যার মূল শক্তি শ্রমজীবী জনগণ।
১৮৪৮এ প্রকাশিত হয় কার্ল মার্কস ও ফ্রেডেরিক এঙ্গেলস প্রণীত কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো। মার্কসবাদী দর্শনের মূল নিহিত তার নির্ণিত থিওরি অফ সারপ্লাস ভ্যালু তত্ত্বে। মার্কসের এই থিওরি বলে, শিল্পের কাঁচামালের মূল্য এবং শিল্পপণ্যের বিক্রয় মূল্যের যে পার্থক্য, তা আসে শ্রমিকদের শ্রম ও ঘাম থেকে। শ্রমজীবীরাই সভ্যতা ও ইতিহাসের চালিকাশক্তি। কিন্তু তারা সেই সারপ্লাস ভ্যালু (সংযোজিত মূল্য)র নগণ্য অংশ মাত্র মজুরি হিসেবে পান যা সুস্থ জীবন ধারণের জন্য যথেষ্ট নয়। তাই তারা বাধ্য হন মানবেতর জীবনযাপন করতে। অন্যদিকে পুঁজিপতি ও ধনিক শ্রেণি সারপ্লাস ভ্যালুর সিংহভাগ বিভিন্ন ছলচাতুরী করে কুক্ষিগত করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে। সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতিপত্তিশালী অংশ হিসেবে রাষ্ট্র ক্ষমতার সহযোগিতাও তারা পায়।
মহামতি কার্ল মার্কস শ্রমজীবী শ্রেণিকে অভিহিত করেন প্রলেতারিয়েত বা সর্বহারা নামে। তিনি কমিউনিস্ট মেনিফেস্টোতে তার দৃঢ় বিশ্বাস প্রকাশ করেন যে সর্বহারা শ্রেণী রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে না পারলে তাদের উপর নিদারুণ শোষণ চলতেই থাকবে। সেই লক্ষ্যে নিজেদের মধ্যে সুদৃঢ় ঐক্য স্থাপন করে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান মার্কস ও এঙ্গেলস। মেনিফেস্টো'র শেষের আহ্বান দুনিয়ার মজদুরদের প্রতি। তারা যেন ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যান। হারাবার তাদের শিকল ছাড়া আর কিছুই নেই কিন্তু জয় করার জন্য রয়েছে সারা দুনিয়া।
মার্কস-এঙ্গেলসের আহ্বান শ্রমিক শ্রেণি ও তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল নাগরিকদের মধ্যে নতুন করে উজ্জীবনের সাড়া জাগায়। ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লবের পর দেশে দেশে শিল্পের উন্মেষ ঘটতে থাকে। সাথে সাথে শ্রমজীবী মানুষের উপর শোষণ ও তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবী আদায়ের আন্দোলন জোরদার হতে থাকে। শ্রমিকদের প্রধান দাবী ছিল আট ঘণ্টা কর্মদিবস নিশ্চিত করার। আন্দোলনের মুখে কোথাও কোথাও সাময়িকভাবে কারখানা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসন এই দাবী মানতে বাধ্য হলেও চুক্তির ফাঁকফোকর দিয়ে দাবী মানা পাশ কাটিয়ে যেত।
১৮৪৮ এর কমিউনিস্ট মেনিফেস্টো প্রকাশের পর জোরদার হতে থাকা শ্রমিক আন্দোলনের মধ্যে ১৮৫৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার স্টোনম্যাসনদের (পাথরের কাজ করা রাজমিস্ত্রী) আট ঘণ্টা কর্মদিবস আদায়ের সুপরিকল্পিত আন্দোলন ও তার আংশিক সাফল্য উল্লেখযোগ্য। এরপর থেকেই ধারাবাহিকভাবে প্রতিবছর দেশে দেশে শ্রমিক শ্রেণির আট ঘণ্টা কর্মদিবস আদায়ের দাবীতে আন্দোলন চলতে থাকে। ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্কমেন'স এসোসিয়েশন (সমাজতন্ত্রের প্রথম ইন্টারন্যাশনাল এর অংশ) এই আন্দোলনের সহযোগী ও সংগঠনকারী হয়ে ওঠে।
১৮৮৬ সালের ১ মে আমেরিকান ফেডারেশন অফ লেবার মূলত আটঘণ্টা কর্মদিবস ও অন্যান্য দাবিদাওয়া নিয়ে শিকাগো শহরে এক সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয়। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার অজুহাতে পুঁজিপতি কারখানা মালিকপক্ষ প্রশাসনকে কাজে লাগায়। পুলিশ ধর্মঘট পালনে বাধা দিলে অবধারিতভাবে শ্রমিকদের সাথে তাদের সংঘর্ষ বাঁধে। শ্রমিকরা তাদের দাবি আদায়ের বিরোধিতায় বলপ্রয়োগ করায় মরিয়া হয়ে ওঠে। আন্দোলন বেগবান হয়ে ওঠে। শিকাগো এবং আশেপাশে শ্রমিক অঞ্চলে শ্রমিক-পুলিশ বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ চলতে থাকে। হতাহতের ঘটনাও ঘটে।
ঘটনার ধারাবাহিকতায় ৪ মে ঘটে যায় চরম দুঃখজনক ঘটনা। ঐদিন শিকাগো হেমার্কেট স্কোয়ারে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ঘিরে রেখেছিল পুলিশ। চরম উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এই সময় অচিহ্নিত কেউ একজন পুলিশদলের মাঝে এক বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। সাতজন পুলিশ অফিসার নিহত হন। সাথেসাথে পুলিশ মারমুখি হয়ে ওঠে। জনতার উপর গুলিবর্ষণ করে তারা। বেশ কয়েকজন শ্রমিক নিহত হন। প্রায় ১৫০ ব্যক্তি আহত হন। তারমধ্যে অধিকাংশই শ্রমিক জনতা, কিছু ছিলেন পুলিশ। কয়েকশত হন আটক। তারমধ্যে সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন না, এমন শ্রমিক নেতাও আটক হন। পরে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় তাদের মধ্যে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও বেশ কয়েকজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই ঘটনা সারা বিশ্বে নিন্দিত হয় এবং শ্রমিক শ্রেণিকে সমঝোতার সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে উদ্বুদ্ধ করে।
প্রতিবছরই ১ মে তারিখে বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী জনগণ বিক্ষোভ ও দাবি আদায়ের মিছিল, সভা, ইত্যাদি আয়োজন করতে থাকেন। কোথাও কোথাও আন্দোলন শান্তিপূর্ণ থাকলেও অন্য কোথাও পুলিশের বাধা পায় তারা। ১৮৯৪ এ আবার ঘটে রক্তাক্ত ঘটনা। আমেরিকার রেলওয়ে শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসে এটি পুলম্যান ধর্মঘট নামে পরিচিত। এই দীর্ঘস্থায়ী ধর্মঘটও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠে রক্তাক্ত। যদিও শেষ পর্যন্ত অর্জিত হয় কিছু সাফল্য। প্রতি বছর সেপ্টেম্বরের নির্দিষ্ট দিন আমেরিকার লেবার ডে হিসাবে স্বীকৃতি পায়। সংশ্লিষ্ট রেল কর্মচারীদের কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনা হয়। যদিও ১৮৬৯এ আমেরিকার প্রেসিডেন্টের আদেশবলে আট ঘণ্টা কর্মদিবস আইন জারি করা হয়, তা ছিল কেবলমাত্র সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য। পুরো আমেরিকার সরকারি বেসরকারি সকল খাতে বাধ্যতামূলক ৪৮ ঘণ্টা কর্মসপ্তাহ চালু হয় ১৯৩৮ সালে ফেয়ার লেবার স্টান্ডার্ড অ্যাক্ট চালুর মাধ্যমে। ১৯৪০ এ তা ৪০ ঘণ্টা কর্মসপ্তাহে নামিয়ে আনা হয়।
আবার ফিরে যাই ১ মে বিষয়ে। প্রথম ইন্টারন্যাশনাল এর কার্যক্রম খানিকটা শিথিল হয়ে যাওয়ায় বিশ্ব সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ১৮৮৯ সালে দ্বিতীয় ইন্টারন্যাশনাল গঠন করেন এবং সারা বিশ্বের শ্রমিক আন্দোলন জোরদারে ও তাদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি ও সমন্বয় সাধন করতে সকল দেশের সমাজতন্ত্রী শক্তিকে উৎসাহিত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯০৪ সালে আমস্টারডামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ইন্টারন্যাশনাল এর ষষ্ঠ সম্মেলনে সারাবিশ্বে ১ মে শ্রমিক সমাবেশ ও শ্রমজীবী মানুষের দাবী আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সব সমাজতান্ত্রিক দলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। দাবীসমূহ ছিল- আট ঘণ্টা কর্মদিবস নিশ্চিত করা, সর্বহারাদের শ্রেণিগত দাবিসমূহ (ন্যায়সঙ্গত বেতন, মানবেতর জীবন ধারণের অবস্থা থেকে উত্তরণ, দাসসুলভ আচরণ বন্ধ করা ইত্যাদি) ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা।
দাবি আদায়ে দেশে দেশে বিক্ষোভ মিছিল, প্যারেড, জনসভা, সেমিনার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং প্রয়োজনবোধে সাধারণ ধর্মঘট আয়োজন করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সেই থেকে ১ মে তারিখে বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী জনগণ দিনব্যাপী উপরোক্ত কর্মসূচি পালন করতে থাকে। আগে থেকেই চলতে থাকা সর্বহারা/প্রলেতারিয়েট শ্রেণির আন্দোলন দিন দিন দুর্বার হয়ে উঠতে থাকে। তাদের দাবীসমূহ যে ন্যায়সঙ্গত, তা সকলের কাছেই গ্রহণযোগ্যতা পায়। ১৯১৪ থেকে শুরু হওয়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে বিশ্বের শ্রমিক আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়ে ওঠে। তবে যুদ্ধের শেষদিকে জারতান্ত্রিক রাশিয়ায় মহান নেতা লেনিন এর নেতৃত্বে শ্রমিক শ্রেণির রাষ্ট্রক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক দেশ সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পরপরই এক ডিক্রিবলে আট ঘণ্টা কর্মদিবস চালু করে। তার পরপরই ইউরোপের অন্য দেশসমূহে শ্রমিক আন্দোলন ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের শুভবুদ্ধির উদয় হওয়ায় আট ঘণ্টা কর্মদিবস চালু হতে থাকে।
এদিকে ভার্সাই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ১৯১৯ সালে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও শ্রমিক শ্রেণির স্বার্থ দেখাশোনার জন্য আইএলও(আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) গঠিত হয়। এতে বিভিন্ন দেশের সরকারের, মালিক পক্ষের ও শ্রমিক শ্রেণির প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯২০ সালে আইএলও আট ঘণ্টার কর্মদিবসকে ন্যায়সঙ্গত বলে স্বীকৃতি দেয়। এরপর কম সময়ের মধ্যে এক এক করে বিশ্বের সব দেশেই শ্রমিকদের প্রধান দাবী আট ঘণ্টার কর্মদিবস চালু হয়ে যায়। সাথে সাথে তাঁদের অন্য ন্যায়সঙ্গত (বেতন, কর্ম পরিবেশ ও বাসস্থানের উন্নতি, চিকিৎসা ইত্যাদি) দাবীসমূহ ও স্বীকৃত হতে থাকে।
এই দিনটি পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই ছুটির দিন ঘোষিত হয়েছে। আমেরিকা, কানাডাসহ কিছু কিছু দেশ ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী দিবস বা মে দিবস পালন না করলেও বছরের অন্য কোনও দিন লেবার ডে (শ্রমিক দিবস) হিসেবে পালন করে।
শ্রমজীবী মানুষের অধিকার কায়েম করার সংগ্রাম সহজসাধ্য ছিল না। সারা বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির ঐক্য, সমন্বিত সংগ্রাম, দৃঢ়তা ও সর্বোপরি সমাজতন্ত্রী দলসমূহ ও প্রগতিশীল সমাজের সহযোগিতা এই সাফল্য এনে দিয়েছে।
এখন বিশ্বে শ্রমিক আন্দোলন অনেক শক্তিশালী, সমন্বিত ও প্রাগ্রসর চিন্তার অধিকারী। তারা ঐক্যবদ্ধ থেকে বহুল আকাঙ্খিত বিশ্ব শান্তির পক্ষে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
দুনিয়ার মজদুর এক হও!
বিশ্ব শান্তি কায়েমে উদ্যোগ নাও!
মে দিবস অমর রহে!