ঘূর্ণিঝড় মোখায় তছনছ সেন্ট মার্টিন, বিধ্বস্ত ৪০০ ঘরবাড়ি, আহত ১৫
ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে তছনছ হয়ে গেছে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিন। টানা প্রায় চার ঘণ্টার ঝোড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টিতে দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে ৪০০ ঘরবাড়ি, হোটেল ও রিসোর্ট।
তীব্র বাতাসে গাছ উপড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে গোটা উপকূলীয় অঞ্চল। এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ে ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। জলোচ্ছ্বাসে দ্বীপের পূর্ব অংশের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এসব বিষয় দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান সেন্ট মার্টিনের ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাজির হোছেন, ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রশিদ আহমদ ও ৬ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দা ইয়ামিন।
তারা জানান, ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপের মাঝরপাড়া, কোনারপাড়া, গলাচিপা, দক্ষিণপাড়া, পশ্চিমপাড়া, উত্তরপাড়ার অন্তত ৪০০টি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। ভেঙে পড়েছে কয়েকশ গাছপালা, আহত হযেছেন ১২-১৫ জন।
৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রশিদ আহমদ বলেন, 'গাছ পড়ে ১২ থেকে ১৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন নারীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।'
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণকক্ষের প্রধান সমন্বয়কারী ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, 'সেন্ট মার্টিনে ঝোড়ো হাওয়ায় সেখানকার প্রায় ৪০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া জেলার অন্য কোথাও ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি।'
স্থানীয় বাসিন্দা ইয়ামিন বলেন, 'যতদুর চোখ যাচ্ছে সব ধ্বংস হয়ে গেছে। অধিকাংশ কাঁচা ঘরবাড়ির চালা উড়ে গেছে। বাতাস এখনও থামেনি, তাই বাইরে বের হতে পারছি না। গাছ পড়ে অনেকে আহত হযেছে বলে খবর পাচ্ছি।'
উদয়-অস্ত রিসোর্টের সত্বাধিকারী মোহাম্মদ আরিফ বলেন, 'দ্বীপে প্রায় ২২০টি রিসোর্ট রয়েছে, যেগুলোর অধিকাংশই বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি। সামনে যা দেখছি, প্রায় সব স্থাপনাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টি ও বাতাস কমলে ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে জানা যাবে।'
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের ১৫ সদস্যের একটি দল সেন্টমার্টিনে আছে। তারা সবাই সুরক্ষিত আছে। তবে দ্বীপের বাসিন্দাদের অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে যায়নি বলে খবর পেয়েছি। ফলে ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপক হবে সেটা আশঙ্কা করা হচ্ছে।'
আজ বেলা সাড়ে ১২টার পর সেন্ট মার্টিনে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় মোখা। দুপুর দেড়টা থেকে সেন্টমার্টিনে বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে, সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বিকাল তিনটার পর জোয়ারের সঙ্গে সঙ্গে সাগরের পানির উচ্চতা বাড়তে থাকে।
এদিকে বাতাসের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। স্থানীয়দের অনেকের সঙ্গেই মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করে সংযোগ স্থাপন করা যায়নি।