ভোলার ইলিশা-১কে দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র ঘোষণা
ভোলা জেলার ইলিশা-১ কে দেশের ২৯তম গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি এখানে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আজ (সোমবার) ঢাকায় নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার সময় বলেন, "আমরা বিশ্বাস করি, ইলিশা-১ এর ২০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ রয়েছে। এই এলাকাসহ পুরো ভোলা এলাকায় তিন ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের মজুদ রয়েছে।"
তিনি বলেন, দেশের মানুষের জন্য এটি একটি সুসংবাদ।
রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ১৮২ কিলোমিটার দূরে ভোলা জেলার পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নে ইলিশা-১ অবস্থিত।
চলতি বছরের ৮ মার্চ ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের মালের হাট এলাকায় ইলিশা-১ খনন কাজ শুরু হয় এবং গত ২৪ এপ্রিল তিন হাজার ৪৭৫ মিটার গভীরে তিনটি স্তরে ড্রিল স্টেম টেস্টের মাধ্যমে সফলভাবে খনন কাজ সম্পন্ন হয়।
প্রতিমন্ত্রী এর আগে বলেন, ভোলা উত্তর ও ভোলা দক্ষিণ কাঠামোর আওতাধীন বিভিন্ন কূপে গ্যাস পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ভোলা এলাকা থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ঢাকায় গ্যাস আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যেখানে অনেক শিল্প-কারখানা গ্যাসের ঘাটতির সম্মুখীন হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, একটি প্রাক-সম্ভাব্যতা পরিচালিত হয়েছিল এবং এখন বিষয়টির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে।
নসরুল হামিদ বলেন, ভোলা থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ঢাকায় গ্যাস আনতে প্রায় তিন বছর সময় লাগবে।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে একটি বড় ট্রেলারের মাধ্যমে ভোলা থেকে মোট ২৫ এমএমসিএফডি (মিলিয়ন ঘন ফুট) গ্যাস আনার জন্য একটি বেসরকারি কোম্পানি চুক্তি করেছে। প্রাথমিকভাবে যা পাঁচ এমএমসিএফডি দিয়ে শুরু হবে।
তিনি জানান, ভোলা, বরিশাল ও ঢাকা জুড়ে পাইপলাইনের রিং-ফেন্স তৈরির পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে এবং ঢাকা, সিলেটসহ অন্যান্য জেলাজুড়ে আরেকটি রিং-ফেন্স তৈরি করা হবে।
তিনি বলেন, স্থানীয় মূল্যে ভোলায় গ্যাসের বাণিজ্যিক মূল্য দাঁড়াবে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং আমদানি করা গ্যাসের মূল্য ২৬ হাজার কোটি টাকা।
নসরুল হামিদ বলেন, প্রয়োজনীয় খনন ও অন্যান্য কাজ শেষে ইলিশা-১ গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে দেশের ২২টি গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রায় ২ হাজার ৩০০ এমএমসিএফডি গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে এবং প্রায় ৪ হাজার এমএমসিএফডি'র চাহিদা মেটাতে প্রায় ৭০০ এমএমসিএফডি গ্যাস আমদানি করা হচ্ছে, ঘাটতি থাকছে প্রায় এক হাজার এমএমসিএফডি।
ইলিশা-১ ছাড়াও ভোলার দুটি গ্যাসক্ষেত্রের উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ২০০ এমএমসিএফ, যেখানে উৎপাদন ৮০-৮৫ এমএমসিএফের মধ্যে।
ফলে শাহবাজপুর ও ভোলা গ্যাসক্ষেত্রের ৮টি কূপে প্রায় ১২০ এমএমসিএফ উদ্বৃত্ত ক্ষমতা অব্যবহৃত রয়ে গেছে।
পাইপলাইন ও সঞ্চালন সুবিধা না থাকায় ভোলা ক্ষেত্র থেকে উদ্বৃত্ত গ্যাস ঢাকাসহ অন্যান্য জ্বালানি চাহিদাসম্পন্ন শিল্পাঞ্চলে সরবরাহ করতে পারেনি সরকার।