আমেরিকার নতুন নিষেধাজ্ঞায় চিপ তৈরির উপকরণের রপ্তানি সীমিত করবে চীন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সেমিকন্ডাক্টর তৈরিতে ব্যবহৃত দুর্লভ কয়েকটি উপকরণের রপ্তানি সীমিত করার ঘোষণা দিয়েছে চীন। জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থনৈতিক পরাশক্তির দেশটি।
আগামী ১ আগস্ট থেকে চীনা রপ্তানিকারকদের গ্যালিয়াম ও জার্মেনিয়াম ধাতু সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি পণ্য রপ্তানি করতে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সরকারের অনুমতি গ্রহণের প্রয়োজন হবে।
গতকাল (সোমবার) চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও কাস্টমসের পক্ষ থেকে একটি গাইডলাইন ইস্যু করে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। মূলত সেখানে দেশের নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়টির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
অন্যদিকে সম্প্রতি চীনের ওপর উন্নত চিপ রপ্তানিতে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়াও গত বছরের সেপ্টেম্বরে মার্কিন এআই চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, মার্কিন সরকারের কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানটিকে চীনে এআই চিপ রপ্তানি বন্ধ করার কথা বলেছে। সর্বোপরি এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে চীন এমন উদ্যোগ নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গ্যালিয়াম খুবই বিরল একটি ধাতু। এমনকি ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন কর্তৃক এটিকে 'সংকটাপন্ন কাঁচামাল' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট, এলইডি ও সোলার প্যানেলের ফটোভোলটাইক প্যানেল তৈরিতে গ্যালিয়াম ধাতু ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে অপটিক্যাল ফাইবার ও ইনফ্রারেড ক্যামেরা লেন্স তৈরিতে জার্মেনিয়াম ধাতু ব্যবহার করা হয়।
ইউরোপিয়ান কমিশনের হিসেব অনুযায়ী, বিরল ধাতুর বৈশ্বিক উৎপাদনের দিক থেকে শতকরা ৮০ ভাগ চীনের দখলে।
সম্প্রতি চীন ও যুক্তরাষ্ট্র; বিশ্বের এই দুই পরাশক্তি অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক নানা কারণেই একে অপরের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছে। দুই দেশের মধ্যকার দ্বন্দ্বও বেশ স্পষ্ট। তারই ফলশ্রুতিতে দেশ দুটি সেমিকন্ডাক্টরসহ নানা প্রযুক্তিগত খাতে একে অপরের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চিপ এবং অন্যান্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা বেশ কয়েকটি চীনা কোম্পানিকে 'কালো তালিকাভুক্ত' হয়েছে। এক্ষেত্রে আমেরিকাও জাতীয় নিরাপত্তাকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন।
এমনকি যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের মিত্র দেশগুলোকে চীনা প্রযুক্তি শিল্পে নানা বিধি-নিষেধ আরোপের জন্য চাপ দিচ্ছে। তারই ফলশ্রুতিতে নেদারল্যান্ডস চলতি বছরের শেষের দিকে চীনের প্রতি নতুন রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানিয়েছে।
অন্যদিকে চীনের পক্ষ থেকে অভিযোগ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রযুক্তি শিল্পে আধিপত্য বজায় রাখতে চীনা উদ্ভাবনকে থামাতে চাইছে।