জয়পুরহাটে বিএনপি-আ. লীগ সংঘর্ষ, আহত ২৫
জয়পুরহাটে পদযাত্রায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষ চলাকালে আওয়ামী লীগের কর্মীরা বিএনপির জেলা কার্যালয় ব্যাপক ভাংচুর করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ সময় পুলিশ শটগানের ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। সংঘর্ষে উভয় দলের কমপক্ষে ২৫ জন আহত হন। তবে পুলিশ বলছে, সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের জয়পুরহাট জেলা আধুনিক ও বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শহরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেলে আওয়ামী লীগ জয়পুরহাট কেন্দ্রীয় মসজিদসংলগ্ন জেলা কার্যালয়ের সামনে বিকেল চারটায় শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রার আয়োজন করে। সেখান থেকে শান্তি মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণের পর পৌনে ৫টার দিকে জেলা কার্যালয়ে ফেরার পথে রেললাইনের পূর্বপাশে প্রধান সড়কে অবস্থান নেয়।
একই সময় শহরের নতুনহাট থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা স্টেশন রোড হয়ে পদযাত্রা নিয়ে তাদের পার্টি অফিসের পাশে রেলগেট এলাকায় এসে রেললাইনের পশ্চিম অংশে প্রধান সড়কে মাত্র ২০ গজ সামনে অবস্থান নেন। তারা সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়লে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পথচারীসহ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মী ও অজ্ঞাত পথচারী আহত হয়েছেন।
এ সময় পুলিশ শটগানের ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. রাশেদ মোবারক বলেন, 'সংঘর্ষের ঘটনায় হাসপাতালে ১২ জন ভর্তি রয়েছেন।'
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলজার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, 'শান্তিপূর্ণভাবে পদযাত্রা শেষ করে দলীয় কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন। এ সময় অতর্কিতভাবে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিনা উসকানিতে ইটপাটকেল ছুড়ে তাদের ওপর হামলা চালান। তারা লাঠিসোটা নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। এ সময় পুলিশের রাবার বুলেটে ১০-১২জনসহ ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।'
তবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মন্ডল বলেন, 'শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা শেষে আমরা আমাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেওয়ার সময় শোভাযাত্রার পিছনের অংশের নেতাকর্মীর ওপর বিএনপির নেতাকর্মীরা রেললাইনের পাথর ছুড়লে সংঘর্ষ হয়। এতে আমাদের অন্তত ১০ থেকে ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন।'
দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ৭ জন আহত হয়েছে উল্লেখ করে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা হয়নি। তবে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হবে।