সরকারি কর্মচারীদের বীমার আওতায় আনতে কোম্পানি গঠনের অনুমতি দিল সরকার
সকল সরকারি কর্মচারীকে বীমার আওতায় আনার লক্ষ্যে একটি স্বতন্ত্র বীমা কোম্পানি গঠনের অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের অধীনে থাকবে এ কোম্পানি। কোম্পানিটি গঠন করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
সরকারি চাকরিজীবীদের বীমার জন্য পৃথক বীমা কোম্পানি গঠনের বিষয়ে সব মন্ত্রণালয়ের সচিব, সংস্থাপ্রধান, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে মতামত চেয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এক চিঠিতে ২৭ আগস্টের মধ্যে মতামত দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড আইনে বীমা কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের জন্য জীবনবীমা করার বিধান রয়েছে।
এই বিধান অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বীমাসেবার আওতায় আনতে কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের অধীনে একটি স্বতন্ত্র বীমা কোম্পানি গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্তসহ গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বোর্ড সভায় উপস্থাপন করা হয়।
এ সভায় স্বতন্ত্র বীমা কোম্পানি গঠনের প্রয়োজনীয়তা ও যৌক্তিকতা, জীবন বীমা করপোরেশন থেকে পাওয়া প্রস্তাব, সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের অধীনে একটি স্বতন্ত্র বিমা কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
একই সঙ্গে বোর্ড সভায় বীমা কোম্পানি গঠনের লক্ষ্যে বীমাবিশেষজ্ঞ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।
তারপর স্বতন্ত্র বিমা কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এ অবস্থায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মতামত চেয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলেছে, প্রস্তাবিত স্বতন্ত্র বিমা কোম্পানি গঠনের বিষয়টি কেন্দ্রীয় ও মাঠপর্যায়ের সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য প্রযোজ্য বলে 'রুলস অব বিজনেস' অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের তথা সব অংশীজনের মতামত নেওয়া প্রয়োজন।
অ্যালোকেশন অব বিজনেস অনুযায়ী, নতুন কোন বীমা কোম্পানি গঠন করতে হলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অনুমোদন নিতে হয়।
বর্তমান সরকারের গত মেয়াদেও নেওয়া হয়েছিল উদ্যোগ
আওয়ামী লীগ সরকারের গত মেয়াদেও সরকারি চাকরিজীবীদের বীমার আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার।
ওইসময় সিদ্ধান্ত হয়, প্রত্যেক চাকরিজীবী ও তার পরিবারের সর্বোচ্চ ছয় সদস্য বীমা সুবিধা পাবে। এই ছয় সদস্যের মধ্যে চাকরিজীবী, তার স্বামী বা স্ত্রী, দুই সন্তান এবং পিতা-মাতা বা শ্বশুড়-শাশুড়ি থাকবে।
সরকারের বীমা কোম্পানি জীবন বীমা করপোরেশনে এই বীমা করার পরিকল্পনা করা হয়।
তবে শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি।
২০২০ সালে দেশে কোভিড সংক্রমণ শুরুর পরও সরকারি চাকরিজীবীদের বীমার আওতায় আনার পরিকল্পনা করে সরকার।
এতে প্রিমিয়াম বাবদ বিপুল অর্থ ব্যয়ের আশঙ্কা থেকে সরে আসে অর্থ মন্ত্রণালয়।
পরে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারকে এককালীন আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার।