রাস্তায় পড়েছিল মরদেহ, দাফন করলেন উপজেলা চেয়ারম্যান
পরিবার নিয়ে চাঁদপুরে থাকতেন ফার্মেসি ব্যবসায়ী মো. রাজীব (৩৬)। তার পৈত্রিক নিবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের সাগরতলা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে।
করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে শনিবার (৩০ মে) বিকেলে মারা যান তিনি। মরদেহ দাফনের জন্য সাগরতলা গ্রামে নিয়ে আসা হলে গ্রামের লোকজন দাফন কাজে বাধা দেন। পরবর্তীতে গভীর রাতে কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল কাউসার ভূইয়া জীবন মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করেন।
মৃতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট থাকায় শনিবার দুপুরে রাজীবকে চাঁদপুর শহরের এটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ঢাকায় নেওয়ার পথে বিকেল চারটার দিকে রাজীবের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে তার বাবা-মা মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের জন্য সাগরতলা গ্রামে নিয়ে আসলে গ্রামবাসী মরদেহ দাফনে বাধা দেন। ফলে ছেলের মরদেহ নিয়ে রাস্তায় বসে থাকেন রাজীবের বাবা-মা।
রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত রাস্তায় পড়েছিল রাজীবের মরদেহ। কিন্তু কেউই রাজীবের মরদেহ দাফনে এগিয়ে আসেননি।
মর্মান্তিক এ ঘটনার খবর পেয়ে কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদুল কাউসার ভূইয়া জীবন গ্রামের মানুষদের সঙ্গে কথা বলে মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করেন। রাত দেড়টার দিকে কাফনের কাপড়ের দোকান খুলিয়ে কাপড় কিনেন চেয়ারম্যান জীবন। এরপর স্থানীয় এক মসজিদের ইমামকে ডেকে কসবা থানার ওসি লোকমান হোসেনকে নিয়ে জানাজার নামাজ পড়েন। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় রাজীবের মরদেহ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল কাউসার ভূইয়া জীবন বলেন, করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে মনে করে গ্রামের লোকজন মরদেহ দাফনে বাধা দিয়েছিল। রাজীবের বাবা-মা তার মরদেহ নিয়ে রাস্তায় বসেছিল। আমি খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলতে বলি।
তিনি বলেণ, রাজীবের বাবা-মায়ের কাফনের কাপড় কেনারও অবস্থা ছিল না। গ্রামের কেউ কোনো সহযোগীতা করেনি। আমি নিজে দোকান খুলিয়ে কাফনের কাপড় কিনে আনি। কেউ জানাজা পড়তে আসেনি। মসজিদের ইমাম ডেকে এনে জানাজার নামাজ পড়েছি। এরপর থানার ওসি ও ছাত্রলীগের ছেলেদের নিয়ে মরদেহ দাফন করি।