গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড়
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) মধ্যরাতে গাজার একটি হাসপাতালে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৫০০ এর বেশি মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে, যার শীর্ষে রয়েছে সৌদি আরব।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে, "সৌদি আরব তীব্রভাবে এই নৃশংস হামলা প্রত্যাখ্যান করে, যা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন সহ সমস্ত আইন ও নিয়মের স্পষ্ট লঙ্ঘন।"
মন্ত্রণালয়টি 'বিবিধ আন্তর্জাতিক আবেদন সত্ত্বেও বেসামরিকদের ওপর চলমান আক্রমণ' বন্ধ না করায় ইসরায়েলের প্রতি নিন্দা জানায়।
গাজায় অবরুদ্ধ বেসামরিক নাগরিকদের খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহের জন্য অবিলম্বে 'সেইফ করিডোর' খোলার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে দেশটি আরও বলে যে, আন্তর্জাতিক নিয়ম ও আইনের ক্রমাগত লঙ্ঘনের জন্য ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর সম্পূর্ণ দায় বর্তায় সৌদি আরব।
এছাড়াও গাজায় হাসপাতালে হামলার সমালোচনায় মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ এল-সিসি মঙ্গলবার বিবৃতি জারি করে বলেন, 'আমি তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি' এবং এটিকে 'আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের চরম লঙ্ঘন' বলে অভিহিত করছি।
যদিও গতকাল আল আহলি ব্যাপটিস্ট হাসপাতালে বিমান হামলার দায় অস্বীকার করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েল বলছে, হাসপাতালের হামলাটি ইসরায়েলের দ্বারা নয়, বরং ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীর দ্বারা ভুল লক্ষ্যবস্তুতে রকেট ছোঁড়ার কারণে ঘটেছে। উভয়পক্ষই হামলার ঘটনায় দোষ অস্বীকার করছে।
এই প্রাণঘাতী হামলার পর ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ বলেন, "বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করা কোনোভাবেই যৌক্তিক হতে পারে না"; তিনি অবিলম্বে গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রেরণের আহ্বান জানান।
নিজের এক্স হ্যান্ডেলে (সাবেক টুইটার) তিনি লেখেন, "কোনো কিছুই হাসপাতালের ওপর হামলাকে সমর্থন করতে পারে না। বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করাকে সমর্থন করতে পারে না। ফ্রান্স গাজার আল আহলি আরাবি হাসপাতালে হামলার নিন্দা জানায় যেখানে শত শত ফিলিস্তিনির প্রাণহানি হয়েছে। আমরা তাদের স্মরণ করছি।"
"অবিলম্বে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের পথ উন্মুক্ত করে দিতে হবে।"
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গাজার হাসপাতালে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনায় শিউরে উঠেছেন বলে সামাজিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এক পোস্টে জানিয়েছেন।
এক্স অ্যাকাউন্টে নিজের অনুভূতির বর্ণনায় তিনি লেখেন, "আমার হৃদয় হতাহতদের পরিবারের পাশে রয়েছে। হাসপাতাল এবং চিকিৎসা কর্মীরা আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীনে সুরক্ষিত।"
গাজায় হাসপাতালে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বলেন, এ পরিস্থিতিতে কারো পক্ষে চুপ থাকা সম্ভব না। এভাবে নিরপরাধ মানুষকে হত্যা 'মানবতার জন্য লজ্জাজনক'।