ইসরায়েলে তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার আহ্বান ইরানের
ইসলামি দেশগুলোকে ইসরায়েলে তেলের চালান বন্ধসহ দেশটিকে বয়কটের আহ্বান করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির আব্দুল্লাহিয়ান। ইরানের গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, সৌদি আরবের জেদ্দায় অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের বৈঠকে তিনি এই কথা বলেন।
যদিও ইসরায়েল তেলের জন্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল, তবে বিশ্লেষকরা বলেছেন যে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা সম্ভবত সামান্য তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলবে। কারণ ইসরায়েল সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত বা ইরানের মতো প্রধান পারস্য উপসাগরীয় উৎপাদকদের কাছ থেকে তেল কেনে না।
পরিবর্তে, কাজাখস্তান-যেখানে শেভরন এবং এক্সন মবিলসহ পশ্চিমা কোম্পানিগুলি যৌথ উদ্যোগে তেল উৎপাদন করে-এবং আজারবাইজান ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী। নাইজেরিয়া থেকেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ তেল আমাদানি করা হয়।
কাজাখস্তান এবং আজারবাইজানও মুসলিম প্রধান দেশ। তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বানে দেশগুলোর তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আশঙ্কা কম। তারা মধ্যপ্রাচ্যের জর্ডান কিংবা মিশরের মতো দেশ নয়, যেখানে নাগরিকরা ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যকার উত্তেজনা মনোযোগ দিয়ে প্রত্যক্ষ করে।
তবে নিষেধাজ্ঞার এমন আভাস ৫০ বছর আগে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের স্মৃতি সামনে নিয়ে আসছে। ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ার কারণে সে সময় যুক্তরাষ্ট্রসহ আরো কয়েকটি দেশের ওপর তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় আরব দেশগুলো। এতে যুক্তরাষ্ট্রের পেট্রোল পাম্পগুলোতে দীর্ঘ সারি দেখা যায়। যুদ্ধকালীন বেড়ে যাওয়া তেলের দামের প্রভাব ছিল আরো কয়েক যুগ।
নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কার প্রভাব বাজারে পড়েছে। অপরিশোধিত তেলের দাম ৯১.৫০ মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে এখন ৯৩ মার্কিন ডলার হয়েছে।
পেট্রোলিয়াম শিপমেন্ট নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান কেপলারের বিশ্লেষক ভিক্টর কাটোনা বলেন, পশ্চিমাদের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কের বিপরীতে ইরানের সাথে মিলে সৌদি আরব একই পথে হাঁটলে এটা বড় একটি বিষয় হবে।
গবেষণা সংস্থা এনার্জি এসপেক্টস এর ভূরাজনৈতিক প্রধান রিচার্ড ব্রোঞ্চ বলেন, এখনো পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার মতো কোন বিষয়ের ইঙ্গিত ওপেকে (তেল উৎপাদনকারী দেশের সংগঠন) দেখা যায়নি। তবে এখনো রপ্তানি সীমাবদ্ধতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ইসরায়েল।
তেল আমদানিতে ব্যবহার হওয়া ইসরায়েলের দুটি প্রধান বন্দরের একটি আশকেলন এখন বন্ধ আছে। বলা হচ্ছে নিরাপত্তার কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যদিকে হাইফা দিয়েও গত এক সপ্তাহে কোনো তেল আসেনি বলে জানিয়েছেন কাটোনা। তিনি বলেন, ইসরায়েলের হাতে এখন এক মাসের তেল মজুত আছে।
কাটোনার অনুমান, ইসরায়েল দৈনিক ২ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল তেল আমদানি করে। যেখানে এক তৃতীয়াংশ আসে কাজাখস্তান থেকে। আর ৫০ হাজার ব্যারেল আসে আজারবাইজান থেকে।