মামলা শুরু হয়েছে, আরো মামলা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, শনিবার (২৮ অক্টেবর) বিএনপি যেসব ঘটনা ঘটিয়েছে, তার প্রেক্ষিতে মামলা করা শুরু হয়েছে। মামলা চলতে থাকবে।
তিনি বলেন, পুলিশ হত্যা, প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হামলা, পুলিশ হাসপাতালে হামলা, বাস-গাড়িতে অগ্নি সংযোগ, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন ঘটনায় মামলা হবে। ক্ষতিগ্রস্তরা মামলা করবে। পুলিশও মামলা করবে।
রবিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সচিবালায়ে নিজ কার্যালয়ে শনিবারের ঘটনার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ঘটনা অনেক ঘটেছে। প্রধান বিচারপতির বাড়িতে ঢুকেছে। এই মামলাতো হবেই। যারা ঢুকেছে তাদেরকে শনাক্ত করা হবে।
তিনি আরো বলেন, একজন পুলিশ মারা গেছেন। আরো একজন পুলিশ ও দুইজন আনসার সদস্য মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। সবমিলিয়ে ১০০ জনের বেশি পুলিশ সদস্য বিভিন্ন ভাবে আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তার করছে। সুনির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করা গেলে এসব ঘটনায় জড়িত বাকিদের আটক করা হবে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে কোন মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, তারা (বিএনপি) মিটিং করছিলো। যখন মিটিংয়ে বসেছিলেন তখন এই ঘটনাগুলো ঘটেছে। এই দায় কি তারা এড়াতে পারেন? বিএনপির কর্মীরা পুলিশের আর্মস নিয়ে গেছে। তার কি দায় এড়াতে পারবেন। বিএনপি নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত অনুমতি নিয়েছিল। তারা সমাবেশ করবে তাদেরকে কেউ কোন কিছু বলে নাই। পুলিশও তাদের সমাবেশের মধ্যে যায়নি। আওয়ামী লীগের লোকজনও যায়নি। তারা ( বিএনপির লোকজন) চলে গেছে প্রধান বিচারপতির বাড়ি পর্যন্ত। পরিকল্পিতভাবে তারা এসব অরাজকতা সৃষ্টি করেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা পকেটে করে, ব্যাগে করে ইট পাটকেল নিয়ে এসেছিল। ভিডিও ফুটেছে দেখা গেছে, তারা পুলিশের উপর বৃষ্টির মত ইট পাটকেল ছুড়েছে। গুলতির মাধ্যমেও তারা পুলিশকে মেরেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় যে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছিল, সেগুলো তারা ভেঙে ফেলেছে।
ক্যামেরায় দেখা গেছে ছাত্রদলের এক নেতা যে পুলিশ সদস্য মারা গেছেন, তাকে পিটিয়েছেন, চাপাতি দিয়ে কুপিয়েছেন। তারা হাসপাতাল ভাঙচুর করেছে, আগুন দিয়েছে।
তিনি বলেন, দেখা গেছে বিএনপির লোকজন যেখানে যা পাচ্ছে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে। তারা বিশেষ দাহ্য পদার্থ ছড়িয়ে অগ্নি সংযোগ করেছে। দশটির বেশি বাসে অগ্নিকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করেছে। তাদের কর্মকাণ্ড বর্বোরোচিত জঘন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। তারা ২০১৩ সালের জ্বালাও পোড়াও ঘটনাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসছে।
কামাল বলেন, বিএনপির লোকজন পুলিশ হত্যা করল, আহত করল, বিভিন্ন ধরনের গাড়িতে আগুন দিল, দেশবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হলো। আবার তারাই হরতাল ডেকেছে। বিএনপির এসব কাজের প্রতিবাদে হরতাল করার কথা ছিল আওয়ামী লীগের।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা খবর পাচ্ছি তারা নাকি বিদেশি একজনের সঙ্গে বৈঠক করছেন। ওই বিদেশি বিএনপির এসব নাশকতামূলক অরাজক কর্মকাণ্ডে সমর্থন দিচ্ছে। তিনি নাকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘনিষ্ঠ বা উপদেষ্টা। তিনি যদি সত্যি সত্যি উপদেষ্টা হয়ে থাকেন, সেখানেও আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। পররাষ্ট্রনীতি লঙঘন করছেন কিনা তিনি।
ওই ব্যক্তিকে নিয়ে সরকার কোন পদক্ষেপ নিবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে যোগাযোগ করে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।