বিএনপির শনি-রোববারের হামলা ছিল পূর্ব-পরিকল্পিত: কাদের
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2023/10/29/image-249657-1698578962.jpg)
নির্বাচন ভন্ডুল করতে বিএনপি আবারো মজ্জাগত সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, 'শনি ও রোববারের হামলা বিএনপির পূর্ব-পরিকল্পিত। তারা অনেকদিন ধরেই হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।'
ওবায়দুল কাদের বলেন, গত দুইদিন তারা কী করে নাই? বিএনপি যেকোনো উপায়ে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপি-জামায়াত জোট– আবারও নৃশংস সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে।
আজ রোববার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা বলে আসলেও, বিএনপি তাদের রাজনীতির যে সন্ত্রাসী ধারা, সেটা বাস্তবায়নে গোপনে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তারা তাদের ভয়ংকর রাজনীতির ধারা, পুরোনো চেহারায় ফিরে আসার জন্য সময় নিচ্ছিল। সময়মতোই তারা তাদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের পথ বেছে নিয়েছে।'
সেতুমন্ত্রী বলেন, 'আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তারা চ্যালেঞ্জ করেছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা মানে দেশের বিচার ব্যবস্থাকে অপমান করা।' বিএনপি গণতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাসী নয়। সুষ্ঠু স্বাভাবিক রাজনৈতিক পরিবেশকে তারা বিনষ্ট করছে। গতকাল নৃশংস হামলা চালিয়ে একজন পুলিশ সদস্যকে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, হাসপাতালে আগুন এসব ছিল তারেক রহমানের 'টেকব্যাক বাংলাদেশ'- এর বাস্তবায়ন।
বিএনপি ঐতিহ্যগতভাবে সন্ত্রাসী দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে শত শত মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে।
এসময় তিনি বিএনপি এবং জামায়াতকে সন্ত্রাসের পথ ছেড়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে আসার আহবান জানান।
২৮ অক্টোবর সহিংসতার পর বিএনপির সাথে সংলাপের বিষয়ে করা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'সংলাপের পথ বিএনপি রুদ্ধ করে দিয়েছে। এখন আর সে সুযোগ নাই। আমরা আগবাড়িয়ে সংলাপ নিয়ে কোনো চিন্তাভাবনা করছি না। তবুও আওয়ামী লীগ চায়, বিএনপি নির্বাচনে আসুক।'
জামায়াত তাদের সমাবেশের পর সরকারকে ধন্যবাদ দিয়েছে। তাহলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াতের কোনো আঁতাত হয়েছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, 'এই দেশের বাঘা বাঘা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করল যে সরকার, সে সরকারের সততা নিয়ে আপনি প্রশ্ন তুললেন!'
নির্বাচনকালীন সরকারে বিএনপির কাউকে রাখা হবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'ইলেকশন টাইমে যদি বাইরের কাউকে যুক্ত করাও হয়, তাহলেও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের করব। তাদের তো কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধি নাই। (সংসদ থেকে) পদত্যাগ করেছে।'
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমরা বলেছিলাম, আমরা থাকব। আমি তো আছি। বিএনপি কোথায়? আন্দোলনে? তারা এখন ষড়যন্ত্রমূলক সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। দোসর জামায়াতকে নিয়ে তারা যা করেছিল, এখনো সেই অন্ধকারের পথে তারা পুনরায় যাত্রা শুরু করবে। তারা গতকাল দেশ-বিদেশে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে। তাদের ভয়ংকর চেহারা উন্মোচন হয়েছে।'
সেতুমন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি) বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে আসা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। অর্ধশত যানবাহনে হামলা ও ভাঙচুর করেছে। আওয়ামী লীগের একটি কার্যালয় ভাঙচুর, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে হত্যা করেছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও কয়েকজন নেতাকর্মীকে আহত করা হয়েছে। হামলাকারী ও নির্দেশদাতাদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান কাদের।
আগামী ৪ নভেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধন উপলক্ষে দলের ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য দেবেন বলেও জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, কামরুল ইসলাম, কর্নেল ফারুক খান, আবদুর রহমান, শাহজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন; যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম; সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আহমেদ হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দি; উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।