কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রূপপুরে পৌঁছেছে ইউরেনিয়ামের ষষ্ঠ চালান
বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ইউরেনিয়ামের ষষ্ঠ চালান পাবনার রূপপুরে পৌঁছেছে।
পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী জানান, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িবহরটি প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করে।
পুলিশ সুপার আকবর বলেন, ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়িবহরটি সকালে রাজধানী থেকে ছেড়ে বঙ্গবন্ধু সেতু অতিক্রম করে নাটোরের বনপাড়া ও পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুরিয়া হয়ে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায়।
তিনি আরও বলেন, ইউরেনিয়ামের আগমনকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। এছাড়া প্রকল্প এলাকায় ঢাকা থেকে রূপপুর মহাসড়কে সকাল ৫টা থেকে ১০টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ ছিল।
তবে ইউরেনিয়ামের চালান রূপপুর প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জ্বালানির প্রথম চালান বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়। পরদিন ২৯ সেপ্টেম্বর বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় প্রকল্প এলাকায় জ্বালানি নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপস্থিতিতে গত ৫ অক্টোবর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই চালান হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনকারী ক্লাবে প্রবেশ করে।
২০১৩ সালের ১৫ জানুয়ারি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রস্তুতিমূলক পর্যায়ে নির্মাণ কাজ সম্পাদনের জন্য ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রাষ্ট্রীয় রপ্তানি ঋণ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই করা হয়।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ২০১৫ সালে মস্কোর সঙ্গে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সাধারণ চুক্তি (জিসি) সই করে সরকার।
বাংলাদেশ ২০১৬ সালের জুলাই মাসে আরএনপিপির জন্য ১১ দশমিক ৩৮৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ পেতে রাশিয়ার সঙ্গে একটি ক্রেডিট চুক্তি সই করে। এই ঋণ প্রকল্পের ব্যয়ের ৯০ শতাংশ নির্বাহ করে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জানিয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে প্ল্যান্টের প্রথম ইউনিট এবং ২০২৫ সালের জুলাইয়ে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে।
এই দুটি ইউনিট চালু হলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হবে। প্রথম ইউনিটের ভৌত ও কাঠামোগত কাজের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশের ওপরে এবং দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ প্রায় ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।
ওয়ার্ল্ড নিউক্লিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, কানাডা, ইউক্রেন, জার্মানি, জাপান, স্পেন সুইডেন, বেলজিয়াম, যুক্তরাজ্য, ভারত, চেক প্রজাতন্ত্র, ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, বুলগেরিয়া, পাকিস্তান, হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, মেক্সিকো, রোমানিয়া, আর্জেন্টিনা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বেলারুশ, স্লোভেনিয়া, নেদারল্যান্ডস, ইরান ও আর্মেনিয়া পরমাণু শক্তি ব্যবহার করে।