রেকর্ড গড়ে তামিমদের রান পাহাড় টপকাল বিজয়ের খুলনা
দারুণ শুরু এনে দিলেন তামিম ইকবাল, তাল মেলালেন সৌম্য সরকার। পরে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দুর্বার ইনিংস খেললেন মুশফিকুর রহিম, অবদান রাখলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। তাদের ব্যাটে এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংগ্রড় গড়লো ফরচুন বরিশাল। কিন্তু এভিন লুইসের তাণ্ডবের সঙ্গে খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক এনামুল হক বিজয়, আফিফ হোসেন, শেই হোপদের দারুণ ব্যাটিংয়ে এই রানও মামুলি হয়ে ওঠে। পাওয়ার প্লেতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে বরিশালের বিপক্ষে দাপুটে জয় তুলে নিল খুলনা।
সোমবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে খুলনা টাইগার্স। দারুণ জয়ে শুরু করা তামিমের বরিশালকে পরের ম্যাচেই হারের স্বাদ নিতে হলো। টানা দ্বিতীয় জয় পেল খুলনা, তারাই এখন পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে। টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা বরিশাল ৪ উইকেটে ১৮৭ রান তোলে। জবাবে ১২ বল হাতে রেখেই বড় জয় নিশ্চিত করে খুলনা।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় দুরন্ত সূচনা পায় খুলনা টাইগার্স। উইকেটে নেমেই ঝড় বইয়ে দেন দলটির ক্যারিবীয় ওপেনার এভিন লুইস। রান তোলার সুর ঠিক রেখে তাকে বেশি স্ট্রাইক দেন অধিনায়ক বিজয়। উদ্বোধনী জুটি থেকে ৭৭ রান পায় খুলনা। এর মধ্যে লুইসের রানই ৫৩, বিজয়ের অবদান ২১। ব্যাটকে তরবারিতে পরিণত করা লুইস ২২ বলে ৫টি করে চার ও ছক্কায় ৫৩ রান করে আউট হন।
তার তাণ্ডবে ৬ ওভারের পাওয়ার প্লে থেকে ৮৭ রান পায় খুলনা, যা বিপিএলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ। আগের দুটি সর্বোচ্চ রানের পাওয়ার প্লেও ছিল খুলনার। ২০১৯ বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ৮৩ ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৭৪ রান করে তারা। লুইস তাণ্ডবে এবার নিজেদের রেকর্ডই ছাড়িয়ে ঘেল খুলনা। দলীয় ৭৭ রানে লুইস বিদায় নিলে খুলনার রান তোলার গতি একটু কমে, এরপরও গড়ে ওভার প্রতি ১০ রানের বেশি করে তোলেন ম্যাচসেরা বিজয় ও আফিফ হোসেন ধ্রুব।
দ্বিতীয় উইকেটে জুটি গড়া এই দুই ব্যাটসম্যান ৫৯ বলে যোগ করেন ৭৫ রান। ৩৬ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ৪১ রান করা আফিফের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। শেই হোপকে সঙ্গে নিয়ে বাকি কাজ সারেন নেতার মতোই খেলা বিজয়। ৪৪ বলে ৩টি করে চার ছক্কায় হার না মানা ৬৩ রান করেন তিনি। ১০ বলে ৫টি চারে ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন হোপ। বরিশালের মোহাম্মদ ইমরানই ২টি উইকেট নেন।
এর আগে ব্যাটিং করা ফরচুন বরিশালের শুরুটা ভালো না হলেও সামলে নেন তামিম ও সৌম্য সরকার। দলীয় ১৪ রানে ইব্রাহিম জাদরান আউট হওয়ার পর দাপুটে ব্যাটিং শুরু করেন এ দুজন। ২১ বলে ৪৬ রানের জুটি গড়েন তারা। দারুণ শুরু করা সৌম্য রান আউট হয়ে ফেরার আগে ১০ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ১৭ রান করেন।
এরপর মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৫৭ রানের জুটি গড়েন তামিম। ৩৩ বলে ৫টি চারে ৪০ রান করে আউট হন তামিম। এই ইনিংস দিয়ে বিপিএলের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৩ হাজার রান পূর্ণ করেন তিনি। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৩৩ রান করেন দীর্ঘদিন পর বিপিএল দিয়ে ম্যাচে ফেরা বরিশাল অধিনায়ক।
এরপর মুশফিক ঝড়ো ব্যাটিং করেন শেষ বল পর্যন্ত। ডানহাতি অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান ৩৯ বলে ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৬৮ রানরে চোখ ধাঁধানো ইনিংস খেলেন। বিপিএলে এটা তার ১৯তম হাফ সেঞ্চুরি। আর ২৪ রান হলেই দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বিপিএলে ৩ হাজার পূর্ণ হবে তার। আসরটিতে ১০৭ ইনিংসে ৩৮.১৫ গড়ে মুশফিকের রান ২ হাজার ৯৭৬। মাহমুদমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৯ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ২৭ রান করেন। খুলনার ওশানে থমাস, নাসুম আহমেদ ও মকিদুল ইসলাম মুগ্ধ একটি করে উইকেট পান।