সুন্দরবনে গোলপাতা সংগ্রহ শুরু হচ্ছে আজ
সুন্দরবনে গোলপাতা সংগ্রহ আজ রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে। চলবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। ইতোমধ্যেই গোলপাতা আহরণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছেন বাওয়ালিরা।
সুন্দরবন থেকে যারা গোলপাতা সংগ্রহ করেন, তাদের বলা হয় বাওয়ালি। প্রতিবছর গোল গাছের পাতা কেটে ও বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন ৪৫০ বাওয়ালি। বন বিভাগের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী গোলপাতা সংগ্রহ করতে হয়।
আজ সকালে বন বিভাগ থেকে অনুমতি (পাশ-পার্মিট) নিয়ে সুন্দরবনে যেতে শুরু করবেন বাওয়ালিরা।
১৩ বছর ধরে গোলপাতা আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন মোংলার দক্ষিণ চরের বাসিন্দা বাওয়ালি মোজাম্মেল হাওলাদার। গতকাল শনিবার তিনি বলেন, গোলপাতা কাটতে যাওয়ার জন্য নৌকা, বাঁশ, দড়ি ও ধারালো দা-ছুড়ি তৈরি করেছি। বন বিভাগের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে কালই যাব সুন্দরবনে।
শরণখোলার মঠেরপাড় এলাকার বাওয়ালি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, প্রতিবছর গোলপাতা আহরণের আগে নৌকা মেরামত করা লাগে। গোলপাতা আগের মতো এখন আর চলে না। ভালো দামও পাওয়া যায় না। সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালাতেও কষ্ট হয়। তারপরও পেশা টিকিয়ে রাখতে প্রতিবছর গোলপাতা কাটতে যাই।
গোলপাতা আহরণের জন্য ব্যবহৃত নৌকাগুলো একটি বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়। গোলপাতা আহরণের মৌসুম শেষ হয়ে গেলে, নৌকাটিকে ফেলে রাখতে হয়। আর ফেলে রাখার কারণে প্রতিবছর মেরামতের জন্য অতিরিক্ত টাকা খরচ হয় বলেও জানান তিনি।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৫০০ মণ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন নৌকাগুলো সুন্দরবনে থেকে গোলপাতা আহরণ করতে পারবে।
সুন্দরবনের গোলপাতা ঘরের ছাউনিতে ব্যবহার হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু রিসোর্ট ও বাংলোতে শোভাবর্ধনের জন্যও গোলপাতার ছাউনি দেওয়া হয়। মৌসুমে প্রতি কুইন্টাল গোলপাতা আহরণে ভ্যাট ব্যতীত রাজস্ব নেওয়া হচ্ছে ৬০টাকা।
বন বিভাগ জানায়, দিনদিন গোলপাতার চাহিদা কমে যাওয়ায় আগের চেয়ে গোলপাতা সংগ্রহকারীর সংখ্যা কমেছে। আগে যেখানে প্রতিবছর ১৫০ থেকে ২০০টি নৌকায় গোলপাতা সংগ্রহ হতো। এখন সেই সংখ্যাটি একশরও কম।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম বলেন, '২০২৩ সালে ৮৯টি নৌকায় ৪৪১ জন বাওয়ালি ১৬ হাজার কুইন্টাল গোলপাতা সংগ্রহ করেছিলেন।'