গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডধারী ১৪০ বছরের পুরাতন পণ্যের প্রথমবারের মতো লোগো পরিবর্তন
১৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে লাইলের গোল্ডেন সিরাপের টিনের কৌটার উপর একটি অদ্ভুত লোগো ছিল। লোগোটিতে দেখা যেত কিছু মৌমাছি একটি সিংহের মৃতদেহের চারপাশে উড়ছে৷
কিন্তু ১৮৮০-এর দশকের পর প্রথমবারের মতো বিশ্বের সব থেকে পুরাতন ব্র্যান্ডিং এবং প্যাকেজিং এর জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের স্বীকৃতি পাওয়া পণ্যটির লোগোর পরিবর্তন হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এটির নতুন লোগো "একবিংশ শতাব্দীর গ্রাহকদের কাছে চাহিদা বাড়ানোর জন্য বানানো হয়েছে।"
গোল্ডেন সিরাপ একটি মিষ্টি, হলুদাভ বাদামি রঙের সিরাপ যা পরিশোধিত চিনি থেকে তৈরি করা হয়। ১৮৮১ সালে 'আব্রাম লাইল অ্যান্ড সন্স' প্রথমবারের মত এটি উৎপাদন করে। কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা স্কটিশ ব্যবসায়ী আব্রাম লাইল বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টের স্যামসনের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই লোগোটি নির্ধারণ করেছিলেন। গল্প অনুযায়ী, স্যামসন খালি হাতে একটি সিংহকে হত্যা করার পরে আবিষ্কার করে প্রাণীটির মৃতদেহে মৌমাছি বাসা বেঁধেছে।
নতুন লোগোতে সিংহটিকে কিছুটা এবস্ট্রাক্ট ও অ্যানিমেটেড চেহারা দেওয়া হয়েছে এবং সিংহের মাথার সামান্য উপরে শুধু মাত্র একটি মৌমাছি অবশিষ্ট আছে।
২০০৬ সালে পণ্যটির অপরিবর্তিত ব্র্যান্ডিংকে স্বীকৃতি দিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস জানায়, ১৮৮৫ সাল থেকে পণ্যটির একমাত্র পরিবর্তন হল, "যুদ্ধের সময় উপাদানের ঘাটতির কারণে সামান্য টেকনিক্যাল পরিবর্তন।"
২০০৮ সালে পণ্যটির ১২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে তৎকালীন মালিকানা টেট অ্যান্ড লাইল ঘোষণা দিয়েছিল, পণ্যটির টিনের কৌটাকে সোনালি রঙে পরিবর্তন করা হয়েছে। কিন্তু লোগোটি অপরিবর্তিত ছিল।
টেট এবং লাইল ১৯২০-এর দশকে যাত্রা শুরু করে যখন লাইলের ফার্ম প্রতিদ্বন্দ্বী চিনি শোধনাগার হেনরি টেট অ্যান্ড সন্স-এর সাথে যুক্ত হয়। কোম্পানিটি এখন বিশ্বব্যাপী অন্যতম প্রধান খাদ্য ও পানীয় সরবরাহকারী। ২০১০ সালে কোম্পানিটি মার্কিন ফার্ম আমেরিকান সুগার রিফাইনিং গ্রুপের কাছে চিনি পরিশোধন ব্যবসা (লাইলের গোল্ডেন সিরাপ সহ) বিক্রি করে দেয়।
পণ্যটির পুরানো লোগোটি লাইলের ক্লাসিক গোল্ডেন সিরাপ টিনে ব্যবহৃত হবে। কিন্তু বোতলজাত পণ্য এবং ডেজার্ট টপিংগুলোতে নতুন লোগো ব্যবহার করা হবে।
এটি বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ পণ্যের প্রতিনিধিত্ব করে কিনা সে বিষয়ে কোম্পানির একজন মুখপাত্র কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন।
একটি বিবৃতিতে লাইলের গোল্ডেন সিরাপের ব্র্যান্ড পরিচালক জেমস হোয়াইটলি বলেছেন, "ভোক্তারা চায় সময়ের সাথে মানিয়ে নিয়ে ব্র্যান্ডগুলোর পরিবর্তন আসবে এবং তাদের চাহিদা মেটাবে।"
তিনি আরো বলেন, "আমাদের নতুন এবং সমসাময়িক ডিজাইন লাইলের গোল্ডেন সিরাপকে আধুনিক দিনে নিয়ে যায়, দৈনন্দিন ব্রিটিশ পরিবারের কাছে আবেদন ধরে রাখে এবং তাদেরকে নস্টালজিক অনুভূতি দেয়।"
জেমস বলেন, নতুন এই লোগোর ডিজাইন নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছিল।
ইনস্টাগ্রামে ডিজাইনার লরা ইভান্স নতুন লোগোটিকে 'সমসাময়িক এবং চতুর' হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেছেন, নতুন লোগোটি পুরাতন লোগোর তুলনায় পণ্যটি সম্পর্কে আরো পরিষ্কার তথ্য দেয়।
অন্যরা এমনকি বেশ কয়েকজন খ্রিষ্টান ভাষ্যকার লোগোর এই পরিবর্তনের খুব একটা প্রশংসা করতে পারেননি।
লেখক কলিন ফ্রিম্যান এক্স-এ (পূর্বের টুইটার) লিখেছেন, "ব্রান্ড ম্যানেজাররা যুক্ত হলে এমনটাই ঘটে। ২০০ বছরের একটি প্রচলিত গল্প নাও এবং সেটিকে 'রিফ্রেশ' করে দাও।"