নেত্রকোনায় বন্যায় ভেসে গেছে সাড়ে ৫ কোটি টাকার মাছ
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় নেত্রকোনার প্রায় আড়াই হাজার পুকুরের মাছ ও পোনা ভেসে গেছে। এতে পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছেন অনেক মৎস্য চাষী। জেলা মৎস্য বিভাগের হিসাব অনুয়ায়ী আকষ্মিক এ বন্যায় মৎস্য সম্পদের প্রায় ৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় জেলার ১০ উপজেলার মধ্যে আট উপজেলায় মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কলমাকান্দা, বারহাট্টা ও আটপাড়া উপজেলায়। কলমাকান্দার আটটি ইউনিয়নের এক হাজার ৬০৪টি, বারহাট্টার ২৮০টি এবং আটপাড়ায় ৩০০টি পুকুরের মাছ ও পোনা ভেসে গেছে।
এছাড়াও নেত্রকোনা সদর, পূর্বধলা, দুর্গাপুর, খালিয়াজুরী এবং মোহনগঞ্জের আরও ১২৪টি পুকুরের মাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির মুখে পড়া পুকুরগুলোর মোট আয়তন ৩২৭ দশমিক ১ হেক্টর।
এদিকে, মাছ ও পোনা ভেসে যাওয়া পাশাপাশি পাহাড়ি ঢলের তোড়ে অনেক পুকুরের পাড়ও ভেঙ্গে গেছে- যা মেরামত করতে চাষীদের বাড়তি টাকা খরচ করতে হবে।
কলমাকান্দা উপজেলার বড়খাপন এলাকার মৎস্যচাষী শফিকুল ইসলাম জানান, 'আমি তিনটি পুকুরে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাছ চাষ করি। বন্যার আশঙ্কায় পুকুরের পাড়ে জাল দিয়ে বেড়া (ঘের) দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। ঢলের তোড়ে জালের বেড়া তো টেকেইনি, পাড়ও ধ্বসে গেছে। মাত্র দুইরাতে চোখের সামনে দিয়ে প্রায় আড়াই লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।'
রংছাতির মৎস্যচাষী আইনুল হক জানান, তারও দু'টি পুকুরের প্রায় দেড় লাখ টাকার মাছ এবং পোনা ভেসে গেছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফজলুল কাদির বলেন, কয়েকদিন আগের বন্যায় জেলার প্রায় ৫৮০ দশমিক ৪৭ টন মাছের ক্ষতি হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষীদের পুনর্বাসনের জন্য সরকারি সহযোগিতা চাওয়া হবে। এছাড়াও ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য চাষীদের বন্যা পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।