ভবন নির্মাণে বিল্ডিং কোড না মানায় বেইলি রোডে আগুনে হতাহতের সংখ্যা এত বেশি: মেয়র তাপস
ইমারত নির্মাণ বিধিমালা (বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড) না মানায় বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে অনেক মানুষ নিহত হয়েছে এবং অনেককে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
শুক্রবার (১ মার্চ) দুপুরে বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রোগী এবং পরবর্তীতে বেইলি রোডের দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে মেয়র তাপস এ কথা বলেন।
বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ৪৬ জন নিহত এবং অনেকে গুরুতর আহত হয়েছেন। ছয়তলা ভবনটিতে একটি জুস বার এবং একটি চা-কফির দোকানসহ আটটি রেস্টুরেন্ট ছিল। এছাড়াও, কয়েকটি মোবাইল ফোন, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও কাপড়ের দোকানও ছিল।
মেয়র বলেন, 'আমাদের প্রাথমিক পরিদর্শন এবং তথ্য-উপাত্ত থেকে আমরা জানতে পেরেছি, ভবনটি নির্মাণে অনেক গাফিলতি করা হয়েছে। এই ভবন নির্মাণে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা, বিএমডিসি কোডে যে নির্ণায়কগুলো রয়েছে সেগুলো সম্পূর্ণরূপে লঙ্ঘন করা হয়েছে।'
মেয়র বলেন, '১০ তলা ভবন হওয়া সত্ত্বেও ভবনটিতে মাত্র একটি সিঁড়ি রয়েছে এবং সেই সিঁড়িও নির্ধারিত মানদণ্ড অনুযায়ী প্রশস্ত না। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী পাঁচ তলার উপরে ভবন হলেই দুটো সিঁড়ি থাকতেই হবে এবং একটি সিঁড়ি জরুরি সাড়া প্রদানের জন্য নির্ধারিত থাকবে। অগ্নিকাণ্ড, ভূমিধসসহ যেকোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জরুরি সিঁড়ি ব্যবহার করার কথা। কিন্তু সেই নিয়ম না মেনে এই ভবন নির্মাণ হওয়ায়, অগ্নিকাণ্ডে এত হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।'
এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কর্তৃক সরকারের কাছে প্রেরিত ইমারত নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণ বিধিমালা দ্রুত অনুমোদন পাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
মেয়র বলেন, 'এ ধরনের ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়ন ও পরিপালন একান্ত আবশ্যক। বিগত বছরগুলোতে যে দুর্যোগগুলো হয়েছে সেগুলোর আলোকে এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় জরুরি সাড়া প্রদানে ঢাদসিক একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করছে।'
তিনি বলেন, 'তাছাড়া ইমারত নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণে সিটি করপোরেশনের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করে আমরা একটি নীতিমালা সরকারের কাছে পাঠিয়েছি। সেটি নিয়ে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় চলছে। আমরা আশা করব, সরকার দ্রুত এই নীতিমালাটির অনুমোদন দেবে।'