সুলভ মূল্যে পণ্য বিক্রি: ৬০০ টাকা কেজি গরুর মাংস কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা
এক কেজি গরুর মাংস, এক ডজন ডিম ও এক লিটার দু্ধ নেওয়ার পর আছিয়া বেগমের মুখে একটা স্বস্তির ছাপ দেখা গেল। তিনি বললেন, 'আটশ টাকা দিয়ে গরুর মাংস খাওয়ার চিন্তা বাদ দিয়েছিলাম। কিন্তু বাজার করে ফেরার পথে দেখলাম ৬০০ টাকায় সরকার বিক্রি করছে। তাই মাংস নিলাম। এ ধরনের উদ্যোগ আমাদের মতো মানুষদের জন্য স্বস্তির।'
রাজধানী রামপুরা বাজারের পাশেই ছোট্ট একটি পিকআপ ভ্যানের পেছনে দুটি লাইনে (নারী-পুরুষ আলাদা) জনা বিশেক মানুষ দাঁড়ানো। সেখানে সরকারের উদ্যোগে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম, মাংস বিক্রি করা হচ্ছিল। সময় যত গড়াচ্ছিল, লাইনে মানুষের সংখ্যাও ধীরে ধীরে বাড়তে দেখা গেল। এরই মধ্যে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিক্রেতা জানালেন, মুরগির মাংস শেষ হয়ে গেছে।
বিক্রেতা রিফাত বললেন, 'মাত্র ৪০ কেজি মুরগির মাংস দেওয়া হয়েছিল, যা দ্রুত শেষ হযে গেছে। তবে গরুর মাংস, দুধ ডিম রয়েছে।'
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রামপুরার পাশাপাশি কাকরাইল, সচিবালয়, খামারবাড়িসহ সুলভ মূল্যের পণ্য বিক্রির কয়েকটি স্পট ঘুরে দেখা যায়, সুলভ মূল্যে পণ্য কেনাকাটায় মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে এবং একইসঙ্গে খানিকটা স্বস্তি এনে দিয়েছে। কারণ বাজারে যেখানে ৭৮০ টাকায় গরুর মাংস কিনতে হচ্ছে, সেখানে ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে ৬০০ টাকায়।
আবার বাজারে যেখানে ২৩০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে, সেখানে ক্রেতারা পুরো ড্রেসিং করা মুরগি কিনতে পারছেন ২৫০ টাকা কেজি দরে।
সুলভ মূল্যের ভ্রাম্যমাণ দোকানে ১৩৫ টাকার (এক ডজন) ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। ৯০০ টাকা মূল্যে খাসির মাংস ও মিল্ক ভিটার দুধ ৯০ টাকা লিটার হিসেবে বিক্রি হচ্ছে এসব ভ্রাম্যমাণ ভ্যানে। ঢাকার ২৫টি স্থানে এসব দোকানে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া ৫টি স্থায়ী দোকান বসানো হয়েছে যেখানে আবার শুধু গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে ৬৫০ টাকা কেজি দরে।
রমজানের আগেই নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের ওপর এক ধরনের চাপ তৈরি হয়েছে। এ চাপ খানিকটা কমানোর জন্যই সরকারের এই উদ্যোগ।
কাকরাইলের বিক্রয়কেন্দ্রে মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এলডিডিপি প্রকল্পের উপপ্রকল্প পরিচালক শাহ আলম বিশ্বাস বলেন, 'প্রথম দিনেই সাধারণ মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। দুপুর একটার মধ্যেই বিক্রি শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি।'
এর বাইরে মৎস্য অধিদপ্তর আলাদা ঢাকার আটটি স্থানে ২৪০ টাকা দরে রুই, ১৩০ টাকা দরে পাঙাশ ও তেলাপিয়া এবং ৩৩০ টাকা দরে পাবদা মাছ বিক্রি করছে।
মেরুল বাড্ডা বাজারের এই বিক্রয়কেন্দ্রেও মানুষের ভিড় দেখা গেছে। মাছ কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, 'বাজারে ৩৫০ টাকা কেজি দরের নিচে কোনো রুই মাছ পাওয়া যায় না। এ কারণে এখান থেকে মাছ নিলাম, কিছুটা তো সাশ্রয় হলো।'