নেতানিয়াহুকে বাইডেনের আল্টিমেটাম: গাজার বেসামরিক লোকদের রক্ষা করুন, অন্যথায়...
ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিক ও গাজার বিদেশি সহায়তাকর্মীদের সুরক্ষার জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। অন্যথায় ওয়াশিংটন হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থনে লাগাম টানতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইসরায়েলি হামলায় ওয়ার্ল্ড সেন্টার কিচেনের (ডব্লিউসিকে) সহায়তাকর্মীকে হত্যা এবং এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এ আল্টিমেটাম দিল।
তবে ইসরায়েল বলছে যে হামলাটি ভুলবশত চালানো হয়েছিল।
নেতানিয়াহু এ পরিস্থিতিতে কি ব্যবস্থা নেবেন, সে বিষয়ে হোয়াইট হাউস স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি, কিংবা নেতানিয়াহু সেই পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটিও জানায়নি হোয়াইট হাউস।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, বাইডেনের আল্টিমেটামের মধ্যে অন্তর্নিহিত বা গোপন যেই হুমকিটি ছিল তা হলো- ইসরায়েলকে অস্ত্র সবরবাহের স্বাভাবিক গতি কমিয়ে দেওয়া এবং জাতিসংঘে ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সমর্থন থেকে বিরত থাকা।
ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নেয়ার ইস্ট পলিসির প্রবীণ কূটনীতিক ডেনিস রস বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট কার্যত ইসরায়েলকে এসব মানবিক প্রয়োজনগুলো পূরণ করার কথা বলেছেন, নয়ত শর্তসাপেক্ষে সহায়তা ছাড়া তার আর কোনো উপায় থাকবে না।
বেসামরিক লোকদের মৃত্যু আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইসরায়েলপন্থী ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে, এমন আশঙ্কায় বাইডেনের ওপর নেতানিয়াহুকে সমর্থনের লাগাম টানতে প্রগতিশীল ডেমোক্র্যাটরা চাপ দিচ্ছেন, যা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বাইডেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৩৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বেশিরভাগেই নারী ও শিশু। ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক ঢাল হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ করছে।
হোয়াইট হাউস বলছে, `বেসামরিক ক্ষতি, মানবিক দুর্ভোগ ও সহায়তাকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য সুনির্দিষ্ট ও বাস্তবিক ধারাবাহিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন।'
হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে যোগ করেছে, 'ইসরায়েলের এসব পদক্ষেপ বিবেচনার মাধ্যমে গাজার বিষয়ে মার্কিন নীতি নির্ধারণ করা হবে।'
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেছেন, 'দেখুন, আমি শুধু এটাই বলব: আমাদের যে পরিবর্তনগুলো দেখা দরকার, তা যদি আমরা দেখতে না পাই, তবে আমাদের নীতিতে পরিবর্তন হবে।'
বাইডেনের এ আহ্বানের পর বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় ইসরায়েল সরকার গাজায় ত্রাণ সহায়তার প্রবেশ বাড়ানোর জন্য বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ ঘোষণা করে। এর মধ্যে রয়েছে আশদোদ বন্দর ও উত্তর গাজায় প্রবেশের জন্য ইরেজ ক্রসিং খুলে দেওয়া এবং জর্ডান থেকে ত্রাণ সরবরাহ বাড়ানো।
যদিও ইসরায়েলের এসব পদক্ষেপে বাইডেন সন্তুষ্ট করতে যথেষ্ট কি না, সেটি এখনও অস্পষ্ট।
অনুবাদ: রেদওয়ানুল হক