গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলি ভূখণ্ডের সবচেয়ে গভীরে আক্রমণ চালাল হিজবুল্লাহ
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে একর শহরের এক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলার দাবি করেছে হিজবুল্লাহ। নিজেদের এক যোদ্ধাকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে এমন প্রতিক্রিয়া জানানোর কথা জানায় লেবাননের বিদ্রোহী গ্রুপটি।
বিশ্লেষকদের মতে, গত ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে হিজবুল্লাহ'র এটিই ইসরায়েলি ভূখণ্ডের সবচেয়ে গভীরে হামলা। গ্রুপটির পক্ষ থেকে গতকাল ( মঙ্গলবার) হামলার বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, হিজবুল্লাহ একর ও নাহারিয়ার মধ্যবর্তী দুটি ইসরায়েলি ঘাঁটিতে বিস্ফোরক ড্রোন ব্যবহার করে লক্ষ্যবস্তুতে একটি সম্মিলিত বিমান হামলা চালিয়েছে। একইসাথে গ্রুপটি হামলার একটি স্যাটেলাইট ছবিও প্রকাশ করেছে।
যদিও হিজবুল্লা'র হামলার বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয় বলে দাবি করেছে ইসরায়েলের সশস্ত্র বাহিনী (আইডিএফ)। তবে এর আগে অবশ্য সংস্থাটি দেশটির উত্তর উপকূলের আকাশসীমায় দুটি 'লক্ষ্যবস্তু' বাধা প্রদানের কথা জানিয়েছিল।
এর আগে গতকাল (মঙ্গলবার) লেবাননের সরকারি বার্তা সংস্থা এনএনএ জানায়, দক্ষিণ লেবাননের হানিনের একটি আবাসিক এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে দুইজন নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছে।
এনএনএ'র পক্ষ থেকে বলা হয় যে, ইসরায়েলি দুটি যুদ্ধবিমান আকাশ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে একটি দোতলা বাড়িতে আঘাত হানে। ফলে ইসরায়েলি আক্রমণ শুরুর পরেও শহরে অবস্থান করা একটি পরিবার বাস করতে থাকা ভবনটিকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়।
দুই বেসামরিক নাগরিককে হত্যার পালটা প্রতিক্রিয়া হিসেবে হিজবুল্লাহ'র দাবি, গতকাল (মঙ্গলবার) গভীর রাতে রাতে তারা উত্তর ইসরায়েলে কয়েক ডজন রকেট নিক্ষেপ করেছে।
এর আগে গতকাল (মঙ্গলবার) ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছিল যে, তাদের বিমান হামলায় দক্ষিণ লেবাননে দুই হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। হিজবুল্লাহ পক্ষ থেকেও পরে তাদের একজন যোদ্ধা হুসেইন আজকউলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
এদিকে পৃথক আরেকটি ইসরায়েলি হামলায় হিজবুল্লাহ'র অভিজাত রাদওয়ান বাহিনীর মুহাম্মদ আত্তিয়া নামের এক যোদ্ধা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে আইডিএফ। তবে এই দাবির বিষয়ে হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রতিনিয়তই হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটছে। এখন পর্যন্ত তেল আবিবের হামলায় বিদ্রোহী গ্রুপটির ২৭০ যোদ্ধা ও ৫০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
অন্যদিকে হিজবুল্লাহর রকেট ও ড্রোন হামলায় প্রায় এক ডজন ইসরায়েলি সেনা এবং অর্ধ-ডজন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। আর এই হামলার ফলে উভয় পক্ষেরই কয়েক হাজার বেসামরিক লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান