খুলনা শহরকে জলবায়ু সহনশীল করতে ব্র্যাক-ইউএসএআইডির সঙ্গে চুক্তি সই কেসিসির
খুলনা শহরকে জলবায়ু সহনশীল করতে এশিয়া রেজিলিয়েন্ট সিটিস (এআরসি) প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। পাঁচটি উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে শহরকে আরও বেশি বসবাস উপযোগী করে তোলা হবে এই প্রকল্পের মাধ্যমে।
ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ইউএসএআইডি) অর্থায়নে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) আগামী চার বছরব্যাপী এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্পে খুলনার অংশীদার সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা – ব্র্যাক। আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নগর ভবনে আলোচিত তিনটি সংস্থার মধ্যে চুক্তি সই হয়।
চুক্তি স্বাক্ষরের পর কেসিসি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, "জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে খুলনা শহর অন্যান্য শহরের তুলনায় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই শহরে ৪ লাখের বেশি জনগোষ্ঠী রয়েছে – যারা নিম্ন আয়ের বসতিতে বাস করছে। তাদের জন্য এ পর্যন্ত কোনো দীর্ঘস্থায়ী সামাধান আনা সম্ভব হয়নি। শহরকে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে সকল সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে। আমিও চেষ্টা করে যাচ্ছি আগামী প্রজম্মের জন্য খুলনা শহরকে আধুনিকভাবে নির্মাণ করার জন্য।"
খুলনা শহরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে জানিয়ে দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি-বাংলাদেশের জনসংখ্যা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির পরিচালক বেলায় মেঙ্গিস্তু বলেন, "বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর খুলনাকে আরও টেকসই শহর হিসেবে নির্মাণে সহায়তা করতে পেরে আমরা গর্বিত। শহরের নাগরিকদের জন্য অবকাঠামো ও গুণমান উন্নত করার মাধ্যমে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জগুলি কমাতে প্রস্তুতি নিব। যা বাংলাদেশের একটি মধ্যম আয়ে দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনেও সহায়তা করবে।"
শহরের তাপমাত্র কমাতে নানা উদ্যোগের কথা জানিয়ে ব্র্যাকের আরবান ডেভেলপমেন্ট এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্মসূচি পরিচালক ড. মোঃ লিয়াকত আলী বলেন, "শহরের তাপমাত্র নিয়ন্ত্রণের জন্য কেসিসিকে মূল ভূমিকা পালন করতে হবে। শহরের কয়টি শপিং মল কত তাপমাত্রায় শীততাপ যন্ত্র চালাতে পারবে– তা নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত। কেননা শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) থেকে প্রচুর পরিমাণে তাপ বাইরে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। শহরের পর্যাপ্ত পরিমাণে খোলা জায়গা রাখতে হবে। প্রচুর গাছ লাগিয়ে সবুজায়ন করতে হবে। আমরা এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি স্মার্ট শহরের তৈরী করতে যাচ্ছি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর বিশেষজ্ঞরা আমাদের নানান রকমের পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছে।"
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয় পাঁচটি বিষয়ের ওপর এই প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করা হবে।
যার মধ্যে রয়েছে, শহরের অবকাঠামো এবং সামাজিক পরিষেবাগুলোর উন্নয়ন করা। সরকার, ব্যবসায়ী এবং কমিউনিটির উদ্যেগের মাধ্যমে নগরবাসীকে টেকসই প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনায় উৎসাহিত করা। নগরের জলাবদ্ধতা এবং পানীয়-জলের অভাব ও দুষণ হ্রাস করা। টেকসয় উন্নয়নের জন্য নেতৃত্ব, সুশাসন এবং কার্যকর যোগাযোগ উন্নয়নে কাজ করা ও শহরবাসীকে আরোও বেশি সচেতন ও দায়িত্বশীল করে তোলা ।