সাগরে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ, সরকারি নিষেধাজ্ঞায় দুশ্চিন্তায় জেলেরা
অবশেষে সাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। জেলেরা এসব মাছ কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে চড়া দামে বিক্রি করছেন, তবুও হাসি নেই তাদের মুখে। কারণ আর মাত্র তিন দিন পর থেকেই শুরু হচ্ছে ৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা। ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা ও শঙ্কায় আছেন জেলেরা। তাই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা এবং সবাইকে সরকারি সহায়তার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন মৎস্যখাত সংশ্লিষ্টরা।
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পল্টুনে শুক্রবার (১৭ মে) সকালে দেখা যায়, স্তূপ করে রাখা ইলিশ বাছাই করছে শ্রমিক ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা। রয়েছে ৪ আকারের ইলিশ। ২ কেজি, এক কেজি, ৮০০ গ্রাম ও ৩০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ইলিশ করা হচ্ছে আলাদা। আর এসব ইলিশ পানি দিয়ে ধুয়ে দ্রুত প্যাকেটজাত করা হচ্ছে।
কুতুবদিয়ার এফবি আল্লাহ দান ট্রলারের জেলে হাফিজ বলেন, ছয় দিন মাছ শিকার করে ৩ হাজার ৭০০ ইলিশ পেয়েছি। যা বিক্রি করে ২০ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। কিন্তু গত ৩ মাসে মাছ না পেয়ে ৫০ লাখ টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে। আর এখন সাগরে ইলিশ মিলছে, কিন্তু ২০ মে থেকে সাগরে মাছ শিকার বন্ধ। কি হবে কিছুই বুঝতে পারছি না।
আরেক জেলে রহিম বলেন, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা ২০ মে থেকে। এখন কীভাবে চলব, কীভাবে সংসার চালাব, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।
জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, সাগরে ৬৫ দিনের যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সেটি পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, শুধু জেলে নয়, এই পেশার সঙ্গে মৎস্য শ্রমিক, মৎস্য ব্যবসায়ী থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পর্যন্ত লাখো মানুষ জড়িত। কিন্তু তাদেরকে কোনো ধরনের সরকারি সহায়তার আওতায় আনা হয়নি। তাই মৎস্যশিল্পের সঙ্গে জড়িত সবাইকে সরকারি সহায়তার আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
মৎস্য ব্যবসায়ী নবী হোসেন বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা শুরুর তিনদিন আগে সাগরে দেখা মিলছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। জেলেরা এসব মাছ মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে এনে বিক্রি করছে। ২ কেজি ওজনের ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ লাখ টাকা, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ১০০ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দেড় লাখ টাকায়। কিন্তু এসব ইলিশ ঢাকা বিক্রি করতে গিয়ে বিপাকে পড়ছি। কাঙ্ক্ষিত মূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। তাই লোকসান গুনতে হচ্ছে।
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত দুই দিনে প্রায় একশ' মেট্রিক টন ইলিশ অবতরণ হয়েছে।