উচ্চ প্রযুক্তির পারমাণবিক বিদ্যুতে চীনের চেয়ে ১৫ বছর পিছিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র
উচ্চ প্রযুক্তির পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চীনের চেয়ে ১৫ বছর পর্যন্ত পিছিয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সোমবার (১৭ জুন) মার্কিন থিঙ্কট্যাঙ্ক ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন ফাউন্ডেশন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ২০২০ থেকে ২০৩৫ সালের মধ্যে ১৫০টি নতুন পারমাণবিক চুল্লি (নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর) নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে চীনের।
বর্তমানে চীনের ২৭টি পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণাধীন আছে। এগুলো তৈরি করতে গড়ে সাত বছর সময় লাগবে। অন্যান্য দেশগুলোর চেয়ে অনেক দ্রুত এ কাজ করবে বেইজিং।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৭০ শতাংশ চীনা পারমাণবিক তৈরি হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সমর্থনপুষ্ট ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ নিয়ে। এসব ঋণের সুদহারও্ব রাখা হচ্ছে মাত্র ১.৪ শতাংশ পর্যন্ত। অন্যান্য দেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো এত কম সুদে ঋণ পায় না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও আধুনিক পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, উল্লেখযোগ্য বড় আকারের অর্থনীতি এবং শেখার মাধ্যমে করণীয় নির্ধারণ প্রক্রিয়া চীনকে এ খাতে ক্রমবর্ধমান উদ্ভাবনী সুবিধা দেবে।
এছাড়া এ খাতের অর্থনীতির কাঠামো তৈরি থেকে শুরু করে নিয়মনীতি সহজ করার কারণে আধুনিক পারমাণবিক প্রযুক্তি মোতায়েনের ক্ষেত্রে চীন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে আছে।
তবে এখনও যুক্তরাষ্ট্রেই বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে। দেশটি এখনও বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী।
এছাড়া জো বাইডেনের প্রশাসন মনে করে, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে এই নিঃসরণমুক্ত বিদ্যুৎ বা শক্তির উৎস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে কয়েক বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে জর্জিয়ায় নির্মিত দুটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র ২০২৩ ও ২০২৪ সালে চালু হওয়ার পর বাজেটের অভাবে আর কোনো পারমাণবিক চুল্লি তৈরি হচ্ছে না দেশটিতে। এ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণেই অনেক বেশি ব্যয় হয়ে গেছে।
চীনের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কর্মসূচি টেকসই সরকারি সহায়তা ও স্থানীয়কৃত কৌশল থেকে উপকৃত হয়েছে। এর সুবাদে নবায়নযোগ্য শক্তি ও বৈদ্যুতিক গাড়ির (ইভি) মতো খাতগুলোতে আধিপত্য বিস্তার করেছে বেইজিং।
গত বছরের ডিসেম্বরে শিদাও উপসাগরের উপকূলে বিশ্বের প্রথম চতুর্থ প্রজন্মের গ্যাস কুলড পারমাণবিক চুল্লি স্থাপন করে চীন। চায়না নিউক্লিয়ার এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, এ চুল্লিতে ২ হাজার ২০০টি এমন ধরনের নতুন উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে যা এর আগে কখনোই ব্যবহার করা হয়নি। এ চুল্লির ৯৩.৪ শতাংশ যন্ত্রাংশ বা উপকরণ তৈরি হয়েছে চীনেই।
উচ্চ প্রযুক্তির চুল্লির সমর্থকদের দাবি, এসব চুল্লি বর্তমানের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর চাইতে অনেক নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী।