শিক্ষার্থীদের দাবিতে সংহতি জানালেন পোশাক খাতের দ্বিতীয় প্রজন্মের ব্যবসায়ী নেতারা
পোশাকখাতের দ্বিতীয় প্রজন্মের ব্যবসায়ী নেতারা শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বলেছেন, শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবি এখন বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
'দ্য নেক্সট জেনারেশন অ্যাপারেল বিজনেস কমিউনিটি অব বাংলাদেশ' এর দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তারা। এতে স্বাক্ষর করেছেন প্রায় ৫০ জন ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা পোশাকখাতের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় প্রজন্ম– আজ এক যৌথ বিবৃতি দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের নয় দফা দাবির সাথে সংহতি প্রকাশ করছি। কারণ ব্যবসায়ী সমাজের সদস্য হিসেবে আমরা নিশ্চুপ থেকে নিরীহ জনতার প্রাণহানি এবং জনগণের দাবি উপেক্ষা হওয়া দেখতে পারি না।
বিবৃতিতে সই করা শীর্ষ ব্যবসায়ীরা হলেন – বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ, বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইয়ুথ লিডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবরার হোসেন সায়েম এবং বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আল শাহরিয়ার আহমেদ।
বিবৃতিতে তারা বলেছেন, আমরা বাংলাদেশের সব নাগরিকের বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করছি। একটি স্বাধীন জাতির গর্বিত সদস্য হিসেবে, আমরা বিশ্বাস করি যে সকল ব্যক্তির শান্তিপূর্ণভাবে তাদের অধিকার প্রয়োগ করতে সক্ষম হওয়া উচিত। আমরা সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোতে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি গভীর সহানুভূতি জানাই, এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের বিচারের আনা হয়েছে– এমনটা দেখতে চাই।
"যারা মর্মান্তিক প্রাণহানি এবং হয়রানির সম্মুখীন হয়েছেন– তাদের প্রতি আমাদের গভীর সহানুভূতি ও সমবেদনা রইল। সব জীবনই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই দেশ এবং এর নাগরিকদের স্বার্থে সর্বোত্তম ন্যায়বিচার এবং অবিলম্বে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য জরুরিভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই।
আমরা আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করি এবং আশা করি, দেশের বৃহত্তর স্বার্থের জন্য বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।"
এবিষয়ে শামস মাহদুম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, আমরা দ্বিতীয় প্রজন্মের কিছু ব্যবসায়ী এই যৌথ বিবৃতি দিয়েছি, কারণ আমরা আশা করি, দেশের স্বার্থকেই সবকিছুর উপর অগ্রাধিকার পাবে।
শামস বিজিএমইএয়ের একজন পরিচালক। তিনি বলেন, "শিক্ষার্থীদের দাবি বাংলাদেশের জনগণের গণদাবিতে পরিণত হয়েছে, যার প্রতি সংহতি জানানো আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। এই পরিস্থিতির উন্নতি নাহলে– কেউই এদেশে ব্যবসা করতে পারবে না এবং অর্থনীতিও হয়তো এই আঘাত সহ্য করে টিকতে পারবে না।"
ফজলে শামীম এহসান বলেন, ব্যবসা করার জন্য বর্তমান পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক, এজন্যই আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান চেয়েছি– যার উদ্দেশ্য হলো দেশের স্বার্থকে যেন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় সংঘটিত সব হত্যার ন্যায়বিচারের দাবিও করেন তিনি।
বিজিএমইএ'র একজন পরিচালক আবরার হোসেন বলেছেন, "আমরা আমাদের সিনিয়র ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে পরামর্শ করে এই যৌথ বিবৃতি দিয়েছি, যারা এই শিল্পের পথপ্রদর্শক। তাদের অনেকেই আমাদেরকে সমর্থন দিয়েছেন।"
বিবৃতিতে সই করা অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মধ্যে আছেন - হাসিন আরমান, পরিচালক, এমবি নিট; রাফী মাহমুদ, পরিচালক, মাহমুদ ডেনিমস; সাকিব আহমেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ব্রডওয়ে ইনকরপোরেশন; আবরার আলম খান, পরিচালক, অ্যাস্ট্রোটেক্স গ্রুপ; এম এহসানুল হক, পরিচালক, নিটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড জসিম উদ্দিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আনাম গার্মেন্টস লিমিটেড; লিথি মুনতাহা মহিউদ্দিন, পরিচালক, লিথি গ্রুপ; জারীন রশিদ, পরিচালক, টিআরজেড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং কাজী অ্যাকসেসরিজ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফাহাদ-সহ প্রমুখ।