কারখানায় আগুন, ভাঙচুর, হত্যামামলা দায়ের: লাভ হবে কার?
শিল্পাঞ্চলগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমিক অসন্তোষ ও কারখানায় হামলার ঘটনা ঘটেছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কারখানায় আগুন ও লুটপাট ছিল এমনই একটি ঘটনা। এতে নিজেদের বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের নিরাপত্তা ও রপ্তানির ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তা ও ভীতিতে রয়েছেন শিল্পোদ্যোক্তারা।
শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়েও তারা শঙ্কিত, আরেকদিকে চাঁদাবাজদের হুমকিধামকি তো আছেই – যারা হত্যামামলা দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকাপয়সা বা ব্যবসায়িক চুক্তি চাইছে। এমন পরিস্থিতিতে, গভীর উৎকণ্ঠায় রয়েছে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়।
গাজী গ্রুপের কারখানায় লুটপাটের পরে ভয়াবহ অগ্নিসংযোগের এক সপ্তাহের মধ্যেই– আশুলিয়া, সাভার ও গাজীপুরে দেশের শিল্পাঞ্চলগুলোতে শুরু হয়ে শ্রমিক বিক্ষোভ ও কারখানায় হামলা। এমতাবস্থায় নিরাপত্তার জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করেন কারখানা মালিকেরা। শৃঙ্খলা ফেরাতে দ্রুতই শিল্পাঞ্চলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
এদিকে বিভিন্ন হত্যামামলায় আসামি করা হচ্ছে উদ্যোক্তাদের, দেশের একটি শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক ফকির গ্রুপের জন্যও এটা নতুন একটি ঘটনা।
এসমস্ত ঘটনাপ্রবাহে বেসরকারি খাত বিশেষত রপ্তানিকারকদের নজিরবিহীন ঝুঁকিতে ফেলেছে। যার ফলে অর্ডার বা কার্যাদেশ হারাবে বাংলাদেশ– আর সেগুলো চলে যাবে ভারত ও পাকিস্তানে। পরিবর্তিত এই পরিস্থিতির ধারাবাহিকতা থাকলে গুরুতর পরিণামের সম্মুখীন হবে অর্থনীতি – থমকে পড়বে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি। এতে ব্যাহত হবে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়– বাড়বে শিল্প প্রতিষ্ঠানের ঋণ খেলাপির ঝুঁকি।
গাজী গ্রুপের ছয়টি কারখানা পুড়ে ছাই করে দেওয়া হয়েছে, এতে জীবিকার অবলম্বন হারিয়েছেন প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক। গাজীপুরে বেক্সিমকো শিল্প পার্কে, এক ডজনের বেশি কারখানা রয়েছে – যেখানে কাজ করেন প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিক, সেখানেও হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমনকী দেশের শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক হা-মীম গ্রুপ, যারা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ৮০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং যাদের কর্মী এক লাখের বেশি– তারাও রেহাই পায়নি। আল মুসলিম, এনভয় ও পার্ল গার্মেন্টস-সহ আরো তিনটি পোশাক কারখানায় হামলা হয়েছে।
এসব ঘটনা আশুলিয়া, সাভার, গাজীপুর এবং এর বাইরেও গার্মেন্টস, টেক্সটাইল এবং ফার্মাসিউটিক্যালস-সহ বিভিন্ন খাতের - বিশেষত আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিবিদে পরিণত হওয়া ব্যক্তিদের – মালিকানাধীন কয়েক ডজন কারখানাকে লক্ষ্য করে বিস্তৃত হামলার একটি অংশ। যা শিল্পপতিদের মধ্যে তাদের শ্রমিক ও সম্পদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
কারখানায় হামলার বিষয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এর সাবেক মহাপরিচালক ও জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে. মুজেরী মন্তব্য করেন যে, "এগুলো আত্মঘাতী। যেসব কারখানায় ভাঙচুর করা হয়েছে সেগুলো উৎপাদনশীল ও জাতীয় সম্পদ।"
তিনি বলেন, কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ অন্যান্য দুস্কর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ থাকতেই পারে, কিন্তু সেজন্য তাঁদের প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তু বানানো উচিত নয়। কারণ এ ধরনের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ, রাজস্ব আহরণ ইত্যাদি, যা কেবল ব্যাপক দুর্ভোগের কারণ হবে।
যেমন গাজী টায়ার্স টায়ার উৎপাদন করে আমদানি কমাতে অবদান রাখতো। ফলে বছরে মিলিয়ন ডলারের সাশ্রয় হতো। ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে তারা অন্তত ৫০০ কোটি টাকা মূল্যের টায়ার উৎপাদন করেছে। কিন্তু, গাজী গ্রুপের জন্য বিগত কয়েক সপ্তাহের ঘটনাপ্রবাহ মূর্তিমান দুঃস্বপ্নের মতো ভয়াবহ ছিল।
দুষ্কৃতিকারীরা তাদের ছয়টি কারখানাকে লক্ষ্যবস্তু করে, যারমধ্যে সবচেয়ে করুণ পরিণতি হয়েছে গাজী টায়ার্সের প্ল্যান্ট। গত ৫ আগস্ট, শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে পালানোর দিন, প্রথম হামলার শুরু। আর ৮ আগস্টের মধ্যেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় কারখানাটি। এর সব উৎপাদিত পণ্য, কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি লুটপাট ও নষ্ট করা হয়। জরুরি মেরামত করে ৯ আগস্ট কিছু সময়ের জন্য কার্যক্রম শুর হয়, কিন্তু চূড়ান্ত আঘাত আসে ২৫ আগস্ট রাতে – যখন আবারো কারখানায় হামলে পড়ে লুটপাটকারীরা। এবার তারা কারখানায় আগুন লাগিয়ে দেয়, যে আগুন ২২ ঘণ্টা ধরে জ্বলেছে নেভানোর আগপর্যন্ত।
গাজী টায়ার্সের একজন শীর্ষ প্রোডাকশন অফিসার আক্ষেপ করে বলেন, "কারখানায় ব্যবহার করার মতো আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।"
কারখানায় ফের উৎপাদন শুরু এখন অনিশ্চিত, এবং তার সাথেই দেখা দিয়েছে আরেকটি প্রশ্ন। রিক্সা থেকে শুরু করে মোটরসাইকেল, বাস ও ট্রাকের টায়ারের চাহিদার ৬০ শতাংশ স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের মাধ্যমে মেটাতো যে গাজী টায়ার্স – কীভাবে তার শূন্যস্থান পূরণ করবে বাংলাদেশ?
নাম না প্রকাশের শর্তে গাজী গ্রুপের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, "ভারত ও চীনের মতো বৃহৎ টায়ার উৎপাদকদের থেকে আমদানির বিরুদ্ধে আমরা লড়েছি।" ১৯৮০'র দশকে পুরান ঢাকার লালবাগে রিকশার টায়ার উৎপাদনের মাধ্যমে ছোট আকারে যাত্রা শুরু করেছিল গাজী গ্রুপ। ২০০০ সালের পরে, বিনিয়োগ বাড়ায় তারা, এবং একপর্যয়ায়ে ২০১১ সাল নাগাদ মোটরসাইকেল ও বড় যানবাহনের টায়ার উৎপাদন শুরু করে।
ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক হিসাবে, গ্রুপের ছয়টি কারখানা – যেখানে টায়ার, পাইপ, পাম্প, দরজা, গ্যাস স্টোভ, পানির ট্যাংকি উৎপাদন হতো – যেগুলো আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়েছে – সেখানে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১,৫০০ কোটি টাকার কম হবে না।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন যে, কারখানা বন্ধে ৭ হাজার ২৫০ জন কর্মী বন্ধের চেয়েও অনেক বড় এই ক্ষতির প্রভাব। শত শত ছোট সরবরাহকারী, ব্যাংক ও বিমা প্রতিষ্ঠানও এসব ইউনিট অনির্দিষ্টকাল বন্ধ থাকার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আমার বাচ্চাদের পড়াশোনা এখন কীভাবে চালাব, এনিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। কীভাবে ভরণপোষণ করব পরিবারের?" বলেন গাজী টায়ার্সের বিপণন টিমের আরেক কর্মকর্তা।
ফকির গ্রুপের সাথে যা হয়েছে?
ফকির গ্রুপে ২৫ হাজারের বেশি কর্মী রয়েছেন, ২০২৩ সালে গ্রুপটি প্রায় অর্ধ বিলিয়ন (৫০ কোটি) ডলারের সমপরিমাণ রপ্তানি করেছে। প্রতিষ্ঠানটি আগুনের হাত থেকে রেহাই পেলেও – ভিন্ন এক হুমকির মুখে। আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর সৃষ্ট পাওয়ার ভ্যাকিউমের মধ্যে একটি রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতারা প্রধান প্রধান শিল্পাঞ্চলগুলোয় আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ। বিশেষত তারা তৎপর হয়ে উঠেছে গাজীপুর, আশুলিয়া, সাভার ও নারায়ণগঞ্জে। এসব স্থানে উদয় হয়েছে নতুন চাঁদাবাজেরা, যারা গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসার দখল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে, ব্যবসায়ীদের থেকে টাকা দাবি করছে।
যেসব কারখানা মালিক তাঁদের দাবি পূরণ করছেন না, তাদেরই করুণ পরিণতি হচ্ছে – যে বাস্তবতার সম্মুখীন এরমধ্যেই হয়েছে ফকির গ্রুপ। তাদের তিনজন মালিককে এরমধ্যেই দুটি হত্যামামলায় আসামি করা হয়েছে, এতে ভয় আর আতঙ্কের কালো ছায়া বিরাজ করছে পুরো শিল্পের ওপর। বিস্ময়কর হলেও সত্যি, এ দুটি হত্যামামলার মধ্যে একটি আবার হত্যার ঘটনা নয় মোটেও, বরং ওই ব্যক্তি চলতি বছরের জুনে একজনের স্ট্রোকে মারা যান। তবে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই মৃত্যুকে গত ৪ আগস্টে সংঘটিত একটি হত্যাকাণ্ড বলে নথিভুক্ত করা হয়েছে, আসলে যা মিথ্যাচার।
হত্যামামলায় তার নাম অন্যায়ভাবে উল্লেখ করার জন্য আড়াইহাজারের স্থানীয় একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীকে দায়ী করেছেন ফকির ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফকির কামরুজ্জামান নাহিদ। তিনি টিবিএসকে বলেন, "প্রভাবশালী এই গোষ্ঠী চাঁদাবাজি ও অবৈধ ঝুট ব্যবসায় জড়িত, যারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে মামলাটিতে আমাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে।"
নাহিদসহ আরো দুজন ব্যক্তিকে এই মামলায় অভিযুক্ত করা ১১ থেকে ১৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে। মামলার শীর্ষ আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত ২৩ আগস্ট ফকির ফ্যাশনস ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্সের (এনএসআই) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবু মোহাম্মদ সারোয়ার ফরিদের কাছে এসব দুষ্কৃতিকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার অনুরোধ করেন।
চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীদের নামে হত্যামামলা
চট্টগ্রামের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী এধরনের মামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যেখানে একটি বড় রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্টরা সাবেক মন্ত্রী, আইনপ্রণেতা, ব্যবসায়ী ব্যক্তিবর্গসহ ৭২ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছে সাজানো এক হত্যামামলার খসড়ায়। অভিযোগ আছে এই খসড়া প্রস্তুত করে দিয়েছেন একজন আইনজীবী, এরপর তা ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। আল্টিমেটাম দিয়ে টাকাপয়সা দাবি করে বলা হচ্ছে, যে বা যারা দেবে না তার নামে মামলা্টি দায়ের করা হবে।
চট্টগ্রামের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বলেছেন, "আমি খুবই উদ্বিগ্ন। নিজের এবং আমাদের স্থাপনা ও কারখানাগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে গভীর শঙ্কার মধ্যে আছি।"
এসব ঘটনার সম্ভাব্য পরিণতি
ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, গাজী গ্রুপের মালিক সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর মতো ব্যক্তিরা অপরাধ করে থাকলে– অবশ্যই তাদের বিচার করতে হবে, কিন্তু তাই বলে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্যবস্তু বানানো উচিত হবে না।
এসব ব্যক্তিদের ব্যবসা ইতোমধ্যেই বড় ধাক্কা খেয়েছে। গাজী গ্রুপের বেহাল দশা এরমধ্যেই আলোচিত হলেও – একইরকম উদ্বেগের বেক্সিমকো ও একটি বিদেশি বিনিয়োগকারীর ওপরে পড়া প্রভাব। বেক্সিমকোর টেক্সটাইল কারখানায় কাটিং ও ফিনিশিংয়ের জন্য কাঁচামাল সরবরাহকারী চীনের একটি বায়ার অকূলপাথারে পড়েছে, কারণ তারা কারখানাটি থেকে ১০ মিলিয়ন (১ কোটি ডলারের) ফিনিশড প্রোডাক্ট নিতে পারছে না।
একজন পোশাক রপ্তানিকারকের সাথে এনিয়ে যোগাযোগও করেছে চীনা ওই বায়ার। তবে তার কারখানার কমপ্ল্যায়েন্সের সমস্যা থাকায় তিনিও সরবরাহ দিতে পারেননি। ওই রপ্তানিকারক মন্তব্য করেন, "এতকিছুর পর সে কী আবার এই দেশে ব্যবসা করতে আসবে?"
দেশের একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক– পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, দেশের ব্যবসায়ীরা যখন ভাঙচুর ও বিক্ষোভের ভয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন– তখন সেটা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছেও শঙ্কামূলক বার্তা দেয়।
গাজী টায়ার্স ও ফকির ফ্যাশনসের ঘটনাগুলো উল্লেখ করে তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এ ধরনের ঘটনায় ব্যবসাবাণিজ্যের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত যেমন হয়, তেমন বাধাগ্রস্ত হয় বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃজন। বিনিয়োগকারীরাও নার্ভাস হয়ে পড়ে।
"স্থানীয় ব্যবসার জন্য এমন অস্থিরতা – ব্যবসায়ীদের মধ্যে তাদের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা ও তা অব্যাহত রাখার আস্থায় চিড় ধরায়। ফলে ব্যবসা আরো বাড়াতে তারা দ্বিধা করবেন, সবসময় নিজেদের সম্পত্তি, কর্মী ও মুনাফার ক্ষতি নিয়ে উদ্বেগে থাকবেন।"
"বিদেশি বিনিয়োগকারীর জন্য পরিস্থিতি আরো গুরুতর" মন্তব্য করে মাসরুর বলেন, নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতি ও অস্থিরতা দেশের সার্বিক ব্যবসার পরিবেশ, সুশাসন ও আইনের শাসন সম্পর্কে তাদের মধ্যে অনাস্থার জন্ম দেয়।
এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি মীর নাসির উদ্দিন বলেন, চলমান পরিস্থিতি বায়ারদের আস্থায় ক্ষয় করছে, এখন তারা যদি অন্য দেশে চলে যায়, তাহলে তাদের বাংলাদেশে আবার ফেরানো খুবই কঠিন হবে।
পোশাক রপ্তানিকারী রেজা গ্রুপের চেয়ারম্যান একেএম শহীদ রেজা বলেন, অর্ডার আসার পরিমাণ কমে গেছে, কারণ অনেক বায়ারই বাংলাদেশে অর্ডার দেওয়ার ব্যাপারে ধীরেসুস্থে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, "গত দুই সপ্তাহ ধরে আমরা কোনো রপ্তানি কার্যাদেশ পাইনি, যা খুবই বিরল ঘটনা।" এসময় ব্যবসার ভবিষ্যৎ সম্পর্কেও তিনি চিন্তিত বলে জানান রেজা।
হত্যামামলা দেওয়া থেকে শুরু করে কারখানা ভাঙচুর, শ্রমিক বিক্ষোভ ও কারখানা রাখা – এসব ঘটনার কারণে ব্যাংকখাতের খেলাপি ঋণ বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন শীর্ষস্থানীয় একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।