চেনা সহকর্মীরা অচেনা হয়ে গেলেন: ফেসবুক লাইভে জ্যোতিকা জ্যোতি
শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে সহকর্মীদের বাধার মুখে অফিস ছাড়তে বাধ্য হন একাডেমির শিল্পকলা পরিচালক ও অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) শিল্পকলা থেকে বেরিয়ে এক ফেসবুক লাইভে জ্যোতিকা জ্যোতি নিজেই এ তথ্য জানান।
লাইভে তিনি জানান, গত সরকার তাকে দুই বছর মেয়াদের চুক্তিভিত্তিক চাকরির সুযোগ দিয়েছিল। সেই মেয়াদ এখনও আছে। সরকার পতনের পর আগের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের কোনো খবরও তিনি পাননি।
এসময় জ্যোতি বলেন, 'এখনও চাকরিটা আছে। দুই মাস ধরে যা চলছে, তাতে শিল্পকলার অফিশিয়াল কাজ বন্ধই বলা যায়। নতুন ডিজি এসেছেন। আমার মনে হলো অফিসে এখন যাওয়া যায়। যেহেতু চাকরিটা আছে, অফিসে কেন যাব না! সে কারণেই অফিসে আসা।'
তিনি বলেন, 'সবার কাছে একটা খবর যায়, আমাকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু আমি জানতাম না। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমি তো দায়িত্বপ্রাপ্ত, কেন চলে যাব? পরে ডিজি আসেন। তিনি জানতে চান, এই অবস্থায় কেন এসেছি। আমাকে চলে যেতে বলেন। পরে যে সিদ্ধান্ত হয়, হবে। পরে সচিব স্যার চলে যেতে বলেন। তখন আমি জরুরি কাগজপত্র নিতে রুমে যাই।'
জ্যোতি জানান, অফিসকক্ষে ব্যক্তিগত কাগজপত্র থাকায় ভেতরে যান। তখন সহকর্মীরা অফিসকক্ষের পাশে দাঁড়ানো ছিল। তাই তিনি দরজা বন্ধ করে দেন।
জ্যোতি বলেন, 'এই সহকর্মীদের সঙ্গে আমি কথা বলার চেষ্টা করেছিলাম। আসলে সমস্যা কী, তা জানার জন্য। তারা কথা বলবেন না। আমাকে দেখার পর কেন তারা মারমুখী হবেন, এর কারণ খুঁজে পাচ্ছিলাম না। কেন আমার সঙ্গে অন্যায় হচ্ছে? চেনা সহকর্মীরা অচেনা হয়ে গেলেন। রুম থেকে বের হওয়ার সময় আমি সব জিনিস দেখালাম। যেখানে আমার ব্যক্তিগত জিনিসও ছিল।'
ফেসবুক লাইভে তিনি আরও বলেন, '...যদিও আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় চাকরি হয়েছে। অনেকেই মনে করেন আমি আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী। কিন্তু কীভাবে আমার চাকরিটা হয়েছে, সেটা আমি জানি।...দুজনকে সিভি দিয়েছিলাম। কী চাকরি পাব, সেটা জানতাম না। পরে আমার প্রোফাইল দেখে শিল্পকলায় চুক্তিভিত্তিক চাকরি হয়। ছয় মাস আমার ভেরিফিকেশন হয়েছে। সরকারি সুবিধা পেলে এক দিনের নোটিশে আমাকে বসিয়ে দেওয়া হতো।'
জানা যায়, দুপুরে শিল্পকলা একাডেমির অফিসকক্ষে প্রবেশ করেন জ্যোতি। কিছুক্ষণের মধ্যে অফিসকক্ষের বাইরে বিভিন্ন বিভাগের সহকর্মীদের জড়ো হতে দেখে দরজা বন্ধ করে দেন তিনি। একপর্যায়ে তিনি বাধ্য হয়ে শিল্পকলা একাডেমি ত্যাগ করেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে শিল্পকলায় পরিচালক পদে জ্যোতিকা জ্যোতিকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছিল সরকার।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সিনিয়র ইনস্ট্রাক্টর আইরিন পারভীন গণমাধ্যমকে জানান, জ্যোতিকা জ্যোতি 'আলো আসবেই' নামের একটি একটি গ্রুপে যুক্ত হয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে কথা বলেছেন। শিল্পকলা একাডেমিতে তারা এমন মানুষ দেখতে চান না। তাই তারা জ্যোতিকে অফিস থেকে চলে যেতে বলেছেন।
আইরিন পারভীন আরও জানান, যারা সরাসরি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করতে উৎসাহিত করেছেন, তাদের তারা সহকর্মী হিসেবে চান না।