সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর ৬৫ শতাংশ সুবিধাভোগীই ধনী পরিবারের: গবেষণা
সরকারের সামজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর ৬৫ দশমিক ৫ শতাংশ সুবিধাভোগীই নির্বাচিত হচ্ছে ধনী পরিবার থেকে। এই সুবিধাভোগীর মাত্র ৩৪ দশমিক ৫ শতাংশ আসছে দরিদ্র পরিবার থেকে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
'এফিশিয়েন্সি অব ডেলিভারিং সোশ্যাল প্রটেকশন প্রোগ্রামস ইন নর্থ-ওয়েস্ট রিজিয়ন' শীর্ষক এক সংলাপে বুধবার এ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
সিটিজেন'স প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজি'স বাংলাদেশ এর সহায়তায় অক্সফাম ইন বাংলাদেশ এর সঙ্গে যৌথভাবে এ ভার্চুয়াল সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি'র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।
তিনি জানান, বাংলাদেশে যে পরিমাণ দরিদ্র মানুষ আছেন তার খুব অল্প অংশকেই অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হয় সোশ্যাল সেফটি নেট প্রোগ্রাম। মাত্র ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ গরীব পরিবার এই প্রোগ্রাম থেকে সহায়তা পায়। এছাড়াও দরিদ্র নয় এমন ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার এ ধরণের প্রোগ্রামে অন্তর্ভুক্ত থাকে।
তৌফিকুল ইসলাম জানান, দেশের অত্যন্ত দরিদ্রপীড়িত চার জেলা কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা এবং নীলফামারীতে মাতৃত্বকালীন ভাতা, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপবৃত্তি, হাইস্কুলে উপবৃত্তি, গরীবদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বয়স্ক ভাতার ওপর নির্ভর করে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশ্যের অন্যান্য এলাকার চাইতে এ চার জেলায় দারিদ্র্যের হার বেশি থাকায় সামাজিক নিরাপত্তার সুবিধাভোগীর সংখ্যাও তুলনামূলক বেশি।
তিনি জানান, গাইবান্ধা জেলার ৪৩ দশমিক ৯ শতাংশ, কুড়িগ্রামের ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ, নিলফামারীর ৩৪ দশমিক ১ শতাংশ ও রংপুরের ২১ দশমিক ৬ শতাংশ ধনী মানুষ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর সুবিধা নিচ্ছেন।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তরের এই চার জেলার উপকারভোগীদের মধ্যে ৬৭ দশমিক ৮ শতাংশই অ-দরিদ্র পরিবার থেকে যেখানে মাত্র ৩২ দশমিক ২ শতাংশের বসবাস দরিদ্র পরিবারে।
সংলাপে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, 'গরিব, হতদরিদ্র, বয়স্ক ভাতার তালিকা স্থানীয়ভাবে তৈরি করা হয়। তখন মেম্বার, চেয়ারম্যানরা দেশপ্রেমে প্রবাহিত না হলে সঠিক তালিকা হয় না। সেজন্য এটার অনেক দুর্বলতা আছে। এটাকে আমাদের আরও অ্যাড্রেস করতে হবে, যাতে করে আমরা একটি পারফেক্ট ডাটাবেজ তৈরি করতে পারি। তাহলে মানুষ ন্যায়বিচার পাবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের মেম্বার, চেয়ারম্যানরা যে তালিকা তৈরি করেন, সেটি অত্যন্ত কঠিন কাজ। এখানে মেম্বার, চেয়ারম্যানরা তাদের স্বজনদের ক্লাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে এটা করা অত্যন্ত কঠিন হয়।'
সংলাপে স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি, সামাজিক নিরাপত্তার সুবিধাভোগী ও এনজিও'র প্রতিনিধিরা অংশ নেন।