পোশাক খাতে অস্থিরতা থাকলেও ব্যবসায়ীরা সামগ্রিকভাবে স্বস্তিতে আছেন: স্কয়ার গ্রুপ সিইও
পোশাক খাতে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করলেও বিগত সরকারের দেড় যুগের বেশি সময়ে ব্যবসায়ীরা যে অবস্থায় মধ্য দিয়ে গেছেন, তার চেয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এই সময়ে ব্যবসায়ীরা অনেক বেশি স্বস্তিতে আছেন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও স্কয়ার গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) তপন চৌধুরী।
বুধবার (৯ অক্টোবর) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে বাংলাদেশের শিল্প খাতের ভবিষ্যৎ বিষয়ক 'তপন চৌধুরী কনভারসেশন উইথ ইআরএফ মেম্বারস' শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেনন
তিনি বলেন, 'আমরা আসলেই খুব কমফোর্টেবল ফিল করছি। একটা বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। সরকারের অফিসগুলোতেও আমরা বড় ধরনের একটা পরিবর্তন লক্ষ করছি—আগে যেখানে কথাই বলা যেত না, প্রশ্নই করা যেত না।'
রাজনৈতিক দলের দেশ চালানো উচিত মন্তব্য করে এই ব্যবসায়ী অন্তর্বর্তী সরকারকে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনি রোডম্যাপ দেওয়ার আহ্বান জানান।
ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ্ মৃধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।
পোশাক খাতের অস্থিরতা প্রসঙ্গে তপন তপন চৌধুরী বলেন, 'দেশের পোশাক খাতে অস্থতিশীল অবস্থার কারণে এখন বেশ কিছু ক্রেতা শ্রীলঙ্কায় চলে যাচ্ছে, যারা আগে শ্রীলঙ্কায়ই ছিল। তাদের (শ্রীলঙ্কায়) অস্থতিশীল অবস্থার কারণে আমাদের দেশে ওইসব ক্রেতারা এসেছিল। এখন আমাদের এখানে অস্থতিশীল হওয়ায় আবারও ওখানে চলে যাচ্ছে।'
স্থিতিশীলতা ফেরার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, সরকারের শুরুতে যে অস্থতিশীল পরিবেশ ছিল, এখন কিছু পদক্ষেপ নেওয়ায় আস্তে আস্তে সেই অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে।
স্কয়ার গ্রুপ সিইও বলেন, 'পোশাক খাত অস্থতিশীল করার পিছনে অনেক ক্ষেত্রে দেশের বাইরের ইন্ধন থাকে। কিন্তু আমরা দেখতে পাই, দেশে কিছু হলেই রাজনৈতিকভাবে পোশাক খাতকে ব্যবহার করে। এখানে অস্থতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে। দেশের স্বার্থে এ অবস্থা থেকে বের হতে হবে। কারণ এখানে প্রায় ৪৫ লাখ শ্রমিক সরাসরি কাজ করছেন, যাদের বেশিরভাগ নারী।'
রাজস্বের বিষয়ে তপন চৌধুরী বলেন, 'এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যান খুবই পজিটিভ। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করছেন। একই অবস্থা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েও। আমরা আশাবাদী।'
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'উপদেষ্টা পরিষদে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি থাকার দরকার আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ ব্যবসায়ী থাকলেও কেউ বলবে টেক্সটাইলে একটু সুবিধা দরকার, ওষুধ শিল্পে একটু সুবিধা দরকার। এখন যারা আছেন, তারা কেউই ব্যবসায়ী নন। তাতে করে একটা সুবিধা হচ্ছে সব সেক্টরকেই তারা সমানভাবে দেখছেন।'
এস আলম, বেক্সিমকোসহ যেসব ব্যবসাগোষ্ঠী অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ব্যবসা করেছে, তাদের বিষয়ে তিনি বলেন, 'যারা খারাপ, তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। এখানে তো মুখ দেখে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ নিয়েই ব্যবস্থা নিচ্ছে। এখানে লুকোছাপার কিছু নেই।'
তিনি আরও বলেন, 'সমাজে একটা টেন্ডেন্সি তৈরি হয়েছে, আমরা ওভারনাইট বড় হওয়ার চিন্তায় থাকি। এটা থেকে বের হতে হবে। নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে ব্যবসা করে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। আমাদের সমসাময়িক অনেক বড় ব্যবসায়ী ছিলেন, যারা সময়ের পরিবর্তনে এখন তাদের ব্যবসায়িক অবস্থান হারিয়েছেন। এর মূল কারণ নীতি-নৈতিকতা মেনে তারা ব্যবসা পরিচালনা করেননি। '