বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি: উপকূলে বৃষ্টিপাত শুরু
বঙ্গোপসাগরের মধ্য-পূর্বাঞ্চল এবং সংলগ্ন উত্তর আন্দামান সাগরের উপর তৈরি হওয়া নিম্নচাপটি গতকাল (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এবং আজ (২৩ অক্টোবর) সেটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) জানিয়েছে, গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় গভীর নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ৭৪০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার বন্দর থেকে ৬৬০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা বন্দর থেকে ৭৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা বন্দর থেকে ৭০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল।
এটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী, খুলনা, বরিশাল এবং রাজশাহী বিভাগসহ বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টিপাত হতে পারে।
গভীর নিম্নচাপের কারণে কক্সবাজারে ইতোমধ্যেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে এবং ঢাকাসহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে আজ বিকেলের পর থেকে থেমে থেমে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
বিএমডির আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক টিবিএসকে বলেন, "মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিম্নচাপটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বুধবার উপকূলীয় জেলাগুলোতে বৃষ্টি ছড়িয়ে পড়তে পারে। গভীর নিম্নচাপটি মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।"
সম্ভাব্য উপকূলীয় প্রভাব সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি উল্লেখ করেন, "গভীর নিম্নচাপটি বর্তমানে ভারতের ওড়িশা উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আগে দিক পরিবর্তন করতে পারে এবং বাংলাদেশের সাতক্ষীরার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি সুন্দরবনেও আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।"
বিএমডির বিশেষ আবহাওয়ার বুলেটিনে জানানো হয়, গভীর নিম্নচাপের কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ৫০ কিলোমিটার; যেটি দমকা হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সমুদ্রে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে তীরে ফিরে আসার এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ২৩ অক্টোবর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।
এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ২৪ অক্টোবর সকালে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে এবং ২৪ থেকে ২৫ অক্টোবর রাতে পুরী ও সাগর দ্বীপের মধ্যবর্তী কোথাও ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগের বাতাস ও ১২০ কিলোমিটার বেগের দমকা হাওয়া নিয়ে আছড়ে পড়তে পারে।